সড়ক যোগাযোগে কার্যত: সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন সিলেট বিভাগ। নামমাত্র ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিকল্প পথে কিছু যানবাহন চলাচল করছে। ট্রাক চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। শতশত পণ্যবাহী ট্রাক অবস্থান করছে মহাসড়কের ওপর। নষ্ট হচ্ছে ট্রাক বোঝাই কাঁচামাল। রাতে মহাসড়কে নিরাপত্তাহীনতায় থাকার অভিযোগও আছে ট্রাক চালকদের। পায়ে হেঁটেও মাইলের পর মাইল অতিক্রম করছে মানুষজন।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট থেকে শাহবাজপুর সেতুর গোড়া পর্যন্ত দীর্ঘ পথের মহাসড়কের ওপর অবস্থান করছে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যমুখী হাজার হাজার পণ্য বোঝাই ট্রাক। সেতুর অন্য পাশে সরাইল বিশ্বরোড পর্যন্তও দীর্ঘ সিলেটমুখী ট্রাকের সারি। গতকাল সকালে সরাইলের ইসলামাবাদে কথা হয় কয়েকজন ট্রাক চালকের সঙ্গে। একটি কাভার্ড ভ্যানের নিচে ১০/১২ জন চালক আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খাচ্ছিলেন। এ গ্রামের বৃদ্ধ আবদুর রাজ্জাক এ খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।
ট্রাকচালক মানিক মিয়া জানান, একদিন বিশ্বরোডে আর ৩ দিন গাড়ি নিয়ে অবস্থান করছেন ইসলামাবাদে। প্যাকেটজাত বিভিন্ন পানীয় ভর্তি কাভার্ড ভ্যান নিয়ে তারা যাচ্ছেন সিলেটে। বিকল্প রাস্তার একটিতে ট্রাক বিকল হয়ে পড়লে এবং অন্যটিতে সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তারা ট্রাক নিয়ে ওই দুই পথের কোনোটি দিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিচ্ছেন না।
সেতুর পূর্ব পাশের রেলিং ভাঙা। এটি সংলগ্ন বেইলি সেতু মেরামত করা হচ্ছে। আর পশ্চিম পাশের বেইলি সেতু দিয়ে হালকা যানবাহন চলাচল করছে। কিন্তু গভীর রাতে এ বেইলি সেতুর ওপর দিয়ে পণ্য বোঝাই ট্রাক চলাচল করে বলে অভিযোগ করেন ট্রাক চালকরা। তারা জানান, দেড় দু-হাজার করে টাকা নিয়ে ভাঙা সেতুর একপাশের ওই বেইলি সেতু দিয়ে পণ্য বোঝাই ট্রাক চলাচলের এ সুযোগ দিচ্ছে এক শ্রেণির পুলিশ। দেড়-দুশো ট্রাক পার হচ্ছে প্রতিরাতেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হোসেন সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে পুলিশের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, রাতে সরকারের এক সচিবকে বহনকারি বাস এ সেতু পাড়ি দিয়েছে। তখন আরো কিছু গাড়ি সেতু পাড়ি দেয়।
তিতাসের ওপরই নির্মাণাধীন আরেকটি সেতুর কাজ শেষ হতে বিলম্ব আর পুরাতন এ সেতুর মেরামত কাজের ধীরগতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন গাড়ি চালকরা। এদিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় পায়ে হেঁটেই চলছেন শতশত মানুষ। শাহবাজপুর থেকে রামপুর পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার পথ হেঁটে যাচ্ছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষজন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন