স্পোর্টস রিপোর্টার : ফেডারেশনের নির্বাচনী জটিলতায় প্রায় আড়াই বছর সঙ্কটে ছিলো ঘরোয়া হকি। ফলে বিদ্রোহী আখ্যা নিয়ে দু’বছর ঘরোয়া হকির মর্যাদাপূর্ণ আসর প্রিমিয়ার লিগে খেলেনি ছয় ক্লাব। দীর্ঘদিন পরে হলেও সেই সঙ্কট কেটেছে। সব ক্লাবের অংশগ্রহণে টার্ফে গড়িয়েছে গ্রীণডেল্টা প্রিমিয়ার লিগও। এই লিগ টার্ফে গড়ানোর ফলে আপাত দৃর্ষ্টিতে মনে হয়েছিল হকিতে শান্তির সুবাতাস বইবে। কিন্তু তা আর হলো না। হকির অন্তহীন সমস্যা আবারও যেন রূপ নিচ্ছে সঙ্কটে। দীর্ঘ প্রায় তিনবছর পর গত ১২ মে শুরু হয়েছে প্রিমিয়ার হকি লিগ। ইতিমধ্যে ৩৪ ম্যাচও গড়িয়েছে নীল টার্ফে। কিন্তু হকির কষ্টটা নীলেই রয়ে গেছে। বড় দলগুলোর আপত্তির মুখে বিদেশী আম্পায়ার আনা হয়েছে। ওমান, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলংকার আম্পায়াররা লিগে আম্পায়ারিং করছেন। তারপরও টার্ফে শৃঙ্খলা ফিরে আসছে না। সর্বশেষ বুধবার শুরু হওয়া মোহামেডান-ঊষার ম্যাচটি গন্ডগোলের কারণে গতকাল গড়ালেও এদিনও সহনশীলতা ফেরেনি। ১৮ মিনিটের বাকি খেলা কাল অনুষ্ঠিত হেেলও সাত মিনিট পরে তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। অবশ্য প্রায় এক ঘণ্টা পর ম্যাচটি আবার শুরু হলে স্বস্তি ফিরে আসে ফেডারেশন কর্তাদের মাঝে। শেষ পর্যন্ত মোহামেডান-ঊষা ম্যাচটি ৩-৩ গোলে অমিমাংসিতভাবে শেষ হয়। ঊষার পক্ষে আলিম বেলাল দু’টি ও কৃষ্ণ কুমার একটি এবং মোহামেডানের রাসেল মাহমুদ জিমি দু’টি ও মো. ইমরান একটি করে গোল করেন।
মোহামেডান-ঊষা গোলযোগপূর্ণ ম্যাচ সম্পর্কে হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, হকিতে স্বস্তি ফিরছে না। খেলোয়াড়দের উচিত মাটির দিকে তাকিয়ে খেলা। কিন্তু টার্ফে ঘটছে বিপরীত। অসভ্য এক খেলা হচ্ছে। আসলে হকিতে চারটি বড় ক্লাব রয়েছে। এগুলো হলো- মোহামেডান, আবাহনী, ঊষা ও মেরিনার ইয়াংস। যাদের সমর্থকরাও অনেক। ফলে মাঠে যাচ্ছে তাই ঘটাচ্ছে খেলোয়াড়রা।’ তিনি আরো বলেন, ‘তারা বিদেশী আম্পায়ার আনার কথা বলেছে। আমরা এনেছি। পৃষ্ঠপোষকতার অর্থের দিকে তাকিয়ে থাকিনি। কারণ বিদেশী আম্পায়ারদের পেছনেও অনেক অর্থ খরচ হচ্ছে। তারপরও সেই বিদেশী আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তও তারা মানছে না। এই অবস্থা তো চলতে পারে না। তাই আমি লিগ কমিটিকে শনিবার এক সভায় বসতে বলেছি। যেখানে বড় চারটি ক্লাবের প্রতিনিধিদেরও রাখতে বলেছি। তাদের সঙ্গে কথা বলা দরকার। নইলে হকি শেষ হয়ে যাবে।’
সহ-সভাপতি খাজা রহমতউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের মানসিকতা পুরনো ধাচেই রয়ে গেছে। দলগুলো আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত মানবে না। তারা স্থানীয় আম্পায়ারের অধীনে খেলতেও চায় না। যে কারণে বিদেশী আম্পায়ার আনলাম। কিন্তু সেই একই আচরন। ক্লাব কর্মকর্তাদের বুঝা উচিত, তারা নিজেদের দলগুলোকেই ক্ষতি করছে না। হকিকেও বিপদে ফেলছে। ক্লাব কর্মকর্তারা চাইলেই কিন্তু সমস্যার সমাধান করতে পারেন। তারা চাইলেই সব হবে। নইলে তো আর খেলা হবে না।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন