বিশ্বকাপে ‘চোকার্স’ তকমাটির একচ্ছত্র দাবিদার দক্ষিণ আফ্রিকা। ক্রিকেট বিশ্ব প্রোটিয়াদের সমার্থক হিসেবেই ‘চোকার্স’ শব্দটি ব্যবহার করে। তাতে ভুল বলার সুযোগ নেই। কারন সারা বছর ফেরারিটের আসনে থাকা দলটি কিভাবে যেন বিশ্বমঞ্চে আসলেই চুপসে যায়। একসময় বিষয়টি ছিল গবেষণার উপযুক্ত। কিন্তু বর্তমানে নতুন করে বিষয়টি নিয়ে ভাবাতে বাধ্য করছে ভারত।
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের বাধা দাপটের সঙ্গে পেরিয়ে সেমিফাইনাল ফাইনালেই খেই হারিয়ে ফেলছে দলটি। সেই টি-টোয়েন্টি ২০১৪ বিশ্বকাপ থেকে এবারের আসর পর্যন্ত বৈশ্বিক আসরে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করেছে প্রতিবেশী দলটি। এবারের বিশ্বকাপসহ সেমিফাইনালের পর ভারতের ছিটকে যাওয়ার ইতিহাসগুলো একটু দেখা যাক।
২০১৪ সাল থেকেই নকআউটের জুজু যেন তাড়া করছে ভারতকে। সেবার ধোনির নেতৃত্বে ভারত যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশ গেল, অনেক বিশেষজ্ঞ ধরেই নিয়েছিলেন ধোনির হাতেই উঠবে ট্রফি। গ্রুপ পর্বে পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছিলো দলটি। দাপটের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও হারাল সেমিফাইনালে। কিন্তু তারপরেই বিপর্যয়। ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েই আসর শেষ করে ভারত।
এরপর ২০১৫ বিশ্বকাপ। এ বার আয়োজক দেশ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। গ্রুপ পর্বে অপ্রতিরোধ্য থেকে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বিদায় নেয় দুই বারের চ্যাম্পিয়নরা। অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ৩২৮ রানের টার্গেটের সামনে থমকে যায় পর পর দু’বার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন।
২০১৫ বিশ্বকাপ স্বপ্নে চোট লাগার পর নিজের মাঠে আয়োজিত ২০১৬ বিশ্বকাপেও একই দৃশ্য। এশিয়া কাপ জিতে দারুন ফর্মে থাকা ভারতের কাছে আদর্শ পরিস্থিতি বিশ্বজয়ের। সে বারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ভারত হেরে যায় সেমিফাইনালে।
পরের বছর ২০১৭ সালের ফের আগের দৃশ্যপটের পুণরাবৃত্তি। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অপরাজিত ভরতের সামনে ফাইনালে মুখোমুখি হয় চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করে ফখর জামানের শতরানে ভর করে ৩৩৮ রান তোলে পাকিস্তান। কিন্তু আমির, হাসানদের পেস আক্রমণের সামনে আত্মসমর্পন করে ভারত। মাত্র ১৫৮ রানে গুটিয়ে যায় ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং।
এবার ২০১৯ বিশ্বকাপ। গ্রুপ পর্বে শীর্ষস্থান দখল করে নেয়া ভারত সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের ছুড়ে দেয়া ২৪০ রানের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। শুরুতে বোল্ট, হেনরির তোপে ছোট লক্ষ্যই হয়ে গিয়েছিল বিশাল আকৃতির। পরে ধোনি-জাদেজার দৃঢ়তায় শুধু ব্যবধানই কমেছে। ১৮ রানের হার নিয়ে বিদাযঘন্টা বাজে কোহলির দলের।
টানা পাঁচ আসরে গ্রুপ পর্বে উড়তে থাকা ভারতকে মাটিতে নামিয়েছে প্রতিপক্ষ দলগুলো। দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের এই পরিণতি দেখে দূরে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসতেই পারেন প্রোটিয়ারা!
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন