শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

দিশেহারা ফিল্ডিংয়ের পর হতাশার ব্যাটিং

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০১৯, ১২:২৯ এএম

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ভরাডুবির অন্যতম প্রধান কারণ ছিল বাজে ফিল্ডিং। মাশরাফি-সাকিববিহীন শ্রীলঙ্কা সফরে তাই বিশেষ নজর ছিল বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিংয়ের উপর। তাতে উন্নতি তো দূরের কথা, গা ছাড়া ভাব ছিল চোখে পড়ার মত। সঙ্গে দায়ীত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে স্বাগতিকদের কাছে ৯১ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে তিন ম্যাচের সিরিজে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ।
প্রেমাদাসায় তিনশ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই। বাংলাদেশকে করতে হতো ৩১৫। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড ২১২, ২০০৬ সালে বগুড়ায়। রেকর্ডটা হালনাগাদ করার মত অবস্থায় বাংলাদেশ কখনোই ছিল না। দুটি ষাটোর্ধো ইনিংসে যা একটু চেষ্টা করেছিলেন সাব্বির রহমান (৬০) ও মুশফিকুর রহিম (৬৭)। ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়া দলকে যা একটু আশায় রেখেছিল পঞ্চম উইকেটে তাদের ১১১ রানের জুটি। আর কোনো বিশোর্ধো ব্যাক্তিগত স্কোর নেই বাংলাদেশের ইনিংসে। ৮.২ বল হাতে রেখেই ২২৩ রানে গুটিয়ে যায় তামিম ইকবালের দল।
বাংলাদেশ দলকে বেশি ভুগিয়েছে মূলত বাজে ফিল্ডিং। ফিল্ডারদের ফিটনেসের ঘাটতি ছিল চোখে পড়ার মত। ফিল্ডারদের হাত গলে পড়েছে সহজ ক্যাচ, সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে রান-আউটের, বগলের নিচ দিয়ে বল বেরিয়ে হয়েছে বাউন্ডারি, এক রানের জায়গায় লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা অবলীলায় নিয়েছেন ডাবল। প্রতিটা বাজে ফিল্ডিং অসহায়ের দৃষ্টিতে দেখেছেন এই ম্যাচ দিয়েই অধিনায়কত্বের অভিষেক হওয়া তামিম ইকবাল।
কলম্বোর প্রেমাদাসার গল্প বলতে গেলে অবশ্য বাংলাদেশের পরাজয় নয়, সবার আগে চলে আসে লাসিথ মালিঙ্গার নাম। বিদায়ী ম্যাচে বাংলাদেশী ইনিংসের শুরু ও শেষটা হয়েছে তার হাত ধরেই। কী দারুণভাবেই না ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বৈচিত্রময় এই পেসার। নিজের শেষ ম্যাচেও দেখিয়েছেন সেই ট্রেডমার্ক ইয়োর্কারের শানিত ধার। প্রথম ওভারেই তার ইয়োর্কার সামলাতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েও রক্ষা পাননি তামিম (০)। লেগ স্টাম্প ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বাংলাদেশ ওপেনারের। মালিঙ্গার পঞ্চম ওভারে একই ডেলিভারিতে আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারের (১৫) দশাও হয় একই। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মুস্তাফিজুর রহমানকে ফিরিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন মালিঙ্গা। বিদায়ী ম্যাচে ৩৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সেরা বোলারও তিনি। সব মিলে ২২৬ ম্যাচে ২৮.৮৭ গড়ে ৩৩৮ উইকেট নিয়ে ওয়ানডে থেকে অবসরে গেলেন মালিঙ্গা। মুত্তিয়া মুরালিধরন (৫৩৪) ও চামিন্দা ভাসের (৪০০) পর দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার হলেন মালিঙ্গা।
ব্যাট হাতে শেষটা ভালো ছিল না টস জয়ী শ্রীলঙ্কার। তবে শুরুটা দুর্দান্ত ছিল বলেই তিনশোর্ধো সংগ্রহ পায় তারা। স্বাগতিক ইনিংসের প্রাণ ছিল কুসল পেরেরার ঝড়ো সেঞ্চুরি ইনিংসটি। দলীয় ১০ রানে অভিষিকা ফার্নান্ডোকে হারানোর চাপ বুঝতে দেননি ওয়ান ডাউনে নামা এই ব্যাটসম্যান। অধিনায়ক দিমুথ করুনারতœকে নিয়ে ৯৭ রানের জুটি গড়েন কুসল পেরেরা। তার সঙ্গে ইনিংসের সবচেয়ে বড় ১০০ রানের জুটির পথে দুই বার জীবন পান কুসল মেন্ডিস। নিজের বলেই ফিল্ডিং করতে গিয়ে রান-আউটের সুযোগ হাতছাড়া করেন মুস্তাফিজ। মেন্ডিসের রান তখন ৭। ২৮ রানে লং-অনে তার সহজ ক্যাচ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ। সেই মেন্ডিসই ৪৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন সেচ্ছ¡ায়। রুবেল হোসেনের বল তার ব্যাট ছুঁয়ে গেলেও বুঝতে পারেননি কেউই। আম্পায়ারও হালকা আবেদনে সাড়া দেননি। তবে নিজে নিশ্চিত থাকায় মাঠ ছাড়েন মেন্ডিস। পরে রিপ্লেতে বিষয়টা পরিস্কার হয়।
গ্রাউন্ড ফিল্ডিং ভালো না হওয়ায় বোলাররাও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লাইন লেন্থও হারিয়ে ফেলেন। তারই সুযোগ নিয়ে ৩০ ওভারেই ২ উইকেটে ১৯৭ রান তুলে ফেলে লঙ্কানরা। তবে শেষ দিকে মুস্তাফিজ-শফিউলরা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানোয় স্বাগতিকদের সংগ্রহটা প্রত্যাশার পারদ স্পর্শ করতে পারেননি। সৌম্য সরকারের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ফেরায় পেরেরাকে। ৯৯ বলে ১৭ চার ও ১ ছক্কায় ১১১ রানের ইনিংসটি সাজান পেরেরা। এর আগে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরিপূর্ণ করেন ৮২ বলে। শেষ ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানরা করতে পারে ১১৭ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৮ রান আসে সাবেক অধিনায়কের ব্যাট থেকে।
২১ মাস পর ওয়ানডেতে ফিরে তিন উইকেট নিয়ে দলের সেরা বোলার শফিউল। খরুচে বোলিংয়ে দুই উইকেট নেন মুস্তাফিজ। তবে সৌম্যের বোলিংটা কাজে লাগাতে পারেননি তামিম। রুবেল-শফিউলরা যখন সপাটে মার খেয়েছেন তখনও সৌম্যকে আনেননি দলীয় অধিনায়ক। অন্যরা যেখানে ছিলেন খরুচে সেখানে ৫ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে ইনিংসের সবচেয়ে মূল্যবান উইকেটটি নেন সৌম্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Abdul Khalek ২৭ জুলাই, ২০১৯, ৬:০৯ পিএম says : 0
তামিমকে অধিনায়ক বানানো হয়েছে হা হা হা
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন