সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

তবুও চোখে স্বপ্ন মামুনুলদের

প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : গেল এক বছরেরও বেশী সময় ধরে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ধারাবাহিক ব্যর্থ বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে একের পর এক ম্যাচ হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা এখন মামুনুলদের কুরে কুরে খাচ্ছে। তারপরও স্বপ্ন দেখছেন তারা। যে তাজিকিস্তানের বিপক্ষে গেল ক’মাসে বড় দুটি হার, তাদের বিপক্ষেই ভালো করার স্বপ্ন লাল-সবুজদের চোখে।
এএফসি এশিযান কাপ বাছাইয়ের প্লে-অফে তাজিকিস্তানের বিপেক্ষ হোম ম্যাচ খেলতে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকাল সাড়ে ৪টায় শুরু হবে ম্যাচটি। বাংলাদেশ টেলিভিশন খেলা সরাসরি সম্প্রচার করবে। ম্যাচকে সামনে রেখে গতকাল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ভবনে মিডিয়ার সামনে নিজেদের লক্ষ্য এবং সম্ভাবনার কথা জানান দু’দলের কোচ ও অধিনায়ক। তাজিকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন! ঘরের মাঠে নিজেদের সেরাটা দিয়ে পয়েন্ট তুলে নেয়ার আকাঙ্খা। বাস্তব বড়ই নির্মম। স্বপ্ন দেখা ভালো, কিন্তু অলীক চিন্তাপ্রসূত স্বপ্ন না দেখাই শ্রেয়। যাদের বিপক্ষে শেষ দু’ম্যাচে ১০ গোল হজম করেছে লাল-সবুজরা, তাদের বিপক্ষে জয় তুলে নেয়া তো দূরের বাতিঘর। ড্রয়ের চিন্তাও দুঃসাহসিক! তারপরও বাংলাদেশের ডাচ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফকে মিডিয়ার সামনে বলতে শোনা গেছে, ‘ফুটবলে সবই সম্ভব। আমরা জয়ের জন্যই নামব। তবে পাঁচ গোলে জেতা তাজিকদের মতো শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় তুলে নেয়াটা খুবই কঠিন কাজ।’ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে নিজেদের মাঠে তাজিকিস্তানের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করলেও অ্যাওয়ে ম্যাচে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। এবার এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে-অফেও একই দশা। দুশানবেতে অ্যাওয়ে ম্যাচে তাজিকদের কাছে ৫-০ গোলে হারের পর সত্যিকার অর্থেই তাদের বিপক্ষে হোম ম্যাচে খুব বেশি কিছু পাওয়ার নেই বাংলাদেশের। বর্তমান বাস্তবতায় তাজিকিস্তানকে এত বড় ব্যবধানে হারানো বাংলাদেশের জন্য শুধু অসম্ভব নয়, অকল্পনীয়ও বটে! ফলে বাংলাদেশকে এশিয়া কাপ বাছাই খেলতে হলে পরবর্তীতে ভুটানকে হারিয়েই খেলতে হবে, এটা প্রায় নিশ্চিতই বলা যায়। তবে আজকের ম্যাচেও কার্ড সমস্যার কারণে ঘুরেফিরে আসছে ভুটান প্রসঙ্গ। বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচে খানিকটা সতকর্তা অবলম্বন করতে হচ্ছে। আগের ম্যাচে মোনায়েম খান রাজু, জামাল ভূইয়া ও সোহেল রানা হলুদ কার্ড পেয়েছেন। এই ম্যাচেও কার্ড পেলে ভুটানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খেলতে পারবেন না তারা। যদিও কোচ ক্রুইফের কথায়, ‘মোনায়েম রাজু হাল্কা ইনজুরিতে রয়েছে। তাই একাদশে পরিবর্তন আসতে পারে।’ এক্ষেত্রে রাজু যদি না খেলেন, তাহলে জামাল ও সোহেলকে সাবধানে খেলতে হবে। গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কোচ ডি ক্রুইফ এবং অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম যা বললেন, তা পূর্ব কথার কপিপেস্ট মাত্র। ‘প্রতিপক্ষ শক্তিশালী, কঠিন ম্যাচ হবে, নিজেদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করলে যে কোনো কিছু সম্ভব, সেটপিসে সমস্যা’Ñগত তিন বছর ধরে একই সুর বাজছে ক্রুইফের কণ্ঠে। কোচকে সমর্থন করে যাচ্ছেন মামুনুলও। শুধু বাড়তি হিসেবে কাল যোগ করলেন, ‘ম্যাচের কি ফল সেটা আগেই বলতে চাই না। কারণ আমরা কথা রাখতে পারি না। যা বলি হয় তার উল্টো।’ এর আগে ২ জুন তাজিকদের বিপক্ষে এ আসরের অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে ৫-০ গোলে হারের লজ্জা পেয়েছেন মামুনুলরা।
কাল সংবাদ সম্মেলনে ক্রুইফ আরো বলেন, ‘তাজিকিস্তান ভালো দল। এই দলে অনেক তরুণ খেলোয়াড় আছে, যারা দ্রæতগতির ফুটবল খেলে। কঠিন এক ম্যাচই প্রত্যাশা করছি। যেহেতু হোম কন্ডিশনে খেলা, মাঠেও দর্শক সমর্থন থাকবে, সেহেতু নিজেদের শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করলে এ ম্যাচে ভালো কিছুর প্রত্যাশা করছি।’ মিডফিল্ডার মোনায়েম খান রাজু ছাড়া দলে কোনো ইনজুরি সমস্যা নেই। রাজুর অনুপস্থিতি সমস্যা হওয়ার কথা নয়। রিপেসমেন্টে মাসুক মিয়া জনি আছেন। কিন্তু ঘোড়ারোগের অ্যাখ্যা পাওয়া সেটপিস থেকে কিভাবে দলকে রক্ষা করবেন তিনি। সেটপিস প্রসঙ্গে ক্রুইফ বলেন, ‘এটা নিয়ে অনেক কাজ করেছি। এখনো করছি। আশাকরি আগের ম্যাচের ভুলগুলো ছেলেরা এ ম্যাচে করবে না।’
সেটপিস প্রসঙ্গে মামুনুল বলেন, ‘গত চার বছর ধরেই সেটপিস আমাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা আমাদের প্রধান সমস্যা। ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে আসতে এবার আমরা ভালো কিছু করার চেষ্টা করব।’ বাংলাদেশ কোচ ও অধিনায়কের স্বপ্নপুরণ হবে কিনা বলা যায় না, তবে এটা ঠিক তাজিকিস্তান এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের মূল পর্বে এক পা দিয়ে রেখেছে। তারপরও তাদের কোচ খাকিম ফুজায়লভ বেশ সতর্ক। তিনি বলেন, ‘আগের ম্যাচের জয়কে ভুলে যেতে চাই। ফুটবলে যে কোনও কিছুই ঘটতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ ও তাজিকিস্তানের আবহাওয়ার ভিন্নতা রয়েছে। আগে দুই বার বাংলাদেশে খেলতে এসে ড্র করেছি। এবার ভিন্ন কিছু আশা করছি।’
অধিনায়ক নাসিরউদ্দিন দুই দলের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন, ‘এক বছরের মধ্যে তিনবার মুখোমুখি হলেও দুই দলের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য হয়নি। আমাদের কাছে বাংলাদেশ দুই বারই ৫-০ গোলে হারলেও তারাও গোলের সুযোগ পেয়েছিল অনেক। যা কাজে লাগতে পারলে ফলাফল ভিন্ন হতে পারতো।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন