পাবনায় ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বাড়ছে। প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। বাইরেও চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে । হাসপাতাল ও বাইরে মিলিয়ে এই সংখ্যা এখন প্রায় ৭০ জন। হাসপাতালে ৭ দিনে ৩৯ ভর্তি ছিলেন। এদের মধ্যে একজন মারা যান, ১৩ জন সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। সোমবার সকলে ৪ জন আর বিকালে ৮ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন । বর্তমানে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ২৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ব্যতিরেকেও শহরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসাপাতাল এবং ক্লিনিকে আরো অন্তত: ৩০ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। সব মিলে ৭ দিনে ৭০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু আছে।
পাবনা জেনারেল হাসাপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা বা কিটস নেই। এ কথা আগেই স্বীকার করেছেন , হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা: রঞ্জন কুমার দত্ত। কিঠস চেয়ে ঢাকায় পত্র দেওয়া হলেও এখনও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। ভর্তিরদের বাইরে এই রোগ নির্ণয় করতে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া ৫০০ টাকা কোনো ডায়গোনস্টিক মানছেন বলে জানা গেছে। কোথাও ১ হাজার , কোথাও ১২শত টাকা ব্যয় হচ্ছে। অপরদিকে , ডেঙ্গু রোগী বাইরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আসায় রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পাবনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবরে জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে। পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল, জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় স্বয়ং চিকিৎসক এব্ং নার্সসহ সেখানকার কর্মচারিরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে, প্রতিদিন নতুন নতুন রোগী সামাল দিতে তাঁদের হিমিশিম খেতে হচ্ছে। সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সহকারি পরিচালক ডেঙ্গু রোগের ব্যাপারে মনিটরিং করছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্সিং স্টাফ, ওয়ার্ড পরিচালনকারীগণ চেষ্টা করছেন।
এদিকে, ভর্তি হওয়া রোগী এবং রোগীর অভিভাকরা জানান, হাসপাতাল থেকে শুধু প্যারাসিটামল ট্যাবলেট ও স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। আর অন্য সকল ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে।
ওষুধের সল্পতার কথা স্বীকার করেননি সহকারি পরিচালক ডা: রঞ্জন কুমার দত্ত। তাঁর ভাষ্যমতে, এই রোগের চিকিৎসায় সুনির্দিষ্ট কোন ওষুধ বা ভ্যাকসিন নেই, জানা মতে প্যারাসিটামল দিয়ে জ্বরের মাত্রা কমানো এবং স্যালাইন দিয়ে শরীরের ফ্লুইড ঠিক রাখা ছাড়া করার কিছু নেই । একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, তিনি ডেঙ্গু রোগের ক্ষেত্রে ২ বছর আগে একটি মেডিক্যাল জার্নাালে দেখে ছিলেন, ট্রেট্রাসাইক্লিন ক্যাপসুল অনেক কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে ডেঙ্গু নিরাময়ের ক্ষেত্রে । তবে সবচেয়ে বড় হলো ,জনসেচতনা বৃদ্ধি করা । আক্রান্ত রোগী ট্রাভিলিং না করা। অপরদিকে, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে এখনও তথ্য অধিদপ্তর থেকে কোন প্রচার-প্রচারণা করতে মাইকিং হচ্ছে না। পাবনার মরে যাওয়া ইছামতি নদীকে বলা হয় মশা উৎপাদনের খামার। কারণ শহরের আর্বজনা এখানেও ফেলা হয়। নদীর পাশে ঝোপ-জঙ্গল রয়েছে । এখানে মশা নিধনের ওষুধ ছিটাতে এখনও দেখা যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন