শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাহিত্য

মসনবী শরীফ

কাব্যানুবাদ : রূহুল আমীন খান | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

মাওলানা জালাল উদ্দীন রূমী রহ.

১৭৯১. ¯্রষ্টা তিনি সকল কিছুর মালিক বেনিয়াজ

সব মোহ্তাজ তাঁহার, তিনি নন্্ কারো মোহ্তাজ।

১৭৯২. তিনি ছাড়া বিশ^মাঝে স্বয়ম্ভু কেউ নয়
অন্য সবার গুরুর কাছে শিক্ষা নিতে হয়।

১৭৯৩. অজ্ঞ যদি না হও, যদি উদাস না হও মনে
অশ্রæ ঢাল, নিমগ্ন হও সাধনে নির্জনে।

১৭৯৪. ক্ষমা প্রেলেন আদম ঢেলে অশ্রæ অবিরল
তওবা অনুতাপ্রের ভাষা শুধু নয়ন জল।

১৭৯৫. কাঁদতে আদম এলেন ধরায় স্বর্গ ভূমি ছাড়ি
‘বনি আদম’ কান্না রেখো হর-হামেশা* জারী।

১৭৯৬. সুখের নিলয় ফিরদাউস ও সপ্ত আকাশ ছাড়ি
ক্ষমা লাভের তরে আদম দিলেন ধরায় প্রাড়ি।

১৭৯৭. ওই আদমের প্রৃষ্ঠচারী হও যদি সন্তান
তাঁহার দলে থাক, কর আল্লা’কে সন্ধান।

১৭৯৮. গুল্তি বানাও অশ্রæ এবং মনের আগুন দ্বারা
কুসুম কানন হাসেÑ প্রেয়ে রোদ ও বাদল ধারা।

১৭৯৯. তুমি কী আর বুঝবে কী যে নয়ন-জলে সুখ
অন্ধ তুমি রুটির প্র্রেমিক, দরিদ্র ভিক্ষুক।

১৮০০. রুটি থেকে গুদামটাকে রাখলে খালি করে
মনি মানিক রতন হিরায় উঠবে তাহা ভরে।

১৮০১. শয়তানের স্তন্য থেকে সরাও শিশু, আর
কর তাকে সহগামী নূরী ফেরেশ্তার।
১৮০২. প্রাপ্র ও কলুষ অন্ধকারে থাকবে ডুবে যত
বুঝবে তুমি আযাযীলের দুধ প্রানেই রত।

১৮০৩. বৃদ্ধি করে যে সব রুজি নূর ও কামালত
সে সব কেবল হালাল রুজি জানিও আল্বত।
১৮০৪. যে তেল নিভায় চেরাগ-কুপ্রি, আঁধার আনে টানি
জেনে রেখো তেল নহে তা’ সেরেফ সাদা প্রানি।

১৮০৫. প্র্রজ্ঞা ও জ্ঞান জনম লভে হালাল রুজি থেকে
হালাল থেকেই প্র্রেম ও রোদন আসে একে একে।

১৮০৬. হিংসা-নেফাক, অলসতা, অজ্ঞতা মূর্খতা
হারাম খানাই এই সকলের প্রিতা জনম দাতা।

১৮০৭. গমের আবাদ করে ক্ষেতে, প্রাইতে চাহ যব !
‘ঘোড়া জনম দিবে গাধা’Ñ এটা কি সম্ভব ?

১৮০৮. লোকমা হলোÑ বীজ ও চিন্তাÑ ফসল সেই বীজের
লোকমা হলো সাগর, চিন্তাÑ মুক্তা সাগরের।

১৮০৯. দাও মুখে যেই লোকমা তাহা হালাল যদি হয়
জাগাবে তা প্র্রেম-মিলনের আগ্রহ প্র্রত্যয়।

১৮১০. আগ্রহ জাগাবে হৃদে ইবাদতের ভারি
জাগাবে প্র্রেরণা দিতে ওই জগতে প্রাড়ি।

সওদাগরের দেশে প্র্রত্যাবর্তন ও নিজ তোতার কাছে হিন্দুস্তানী তোতার অবস্থা বর্ণনা

১৮১১. ভারত গিয়ে ব্যবসা করে সেই যে সওদাগর
অবশেষে প্রৌঁছল এসে তাহার নিজের ঘর।

১৮১২. যে উপ্রহার এনেছিল ভারত ভূমি থেকে
গোলাম বাদী সবায় তাহা দিল একে একে।

১৮১৩. বলল তোতা : দিন আমাকে আমার উপ্রহার
কী দেখিলেন, কী শুনিলেন বর্ণনা দিন তার।

১৮১৪. বলল বনিক : বলব কী হায় সে আফসোসের বাত
দুঃখে অনুতাপ্রে যাহার কাটছি আঙ্গুল হাত।

১৮১৫. বোকা আমি, নইলে কেন এমনি প্রাগল হয়ে
ওই অশুভ বার্তা নিলাম তাদের কাছে বয়ে !

১৮১৬. বলল তোতা : বলুন খাজা, বলুন তো একবার
কোন্্ কারণে এমন বেদন দুঃখ হাহাকার ?

১৮১৭. বল্ল বনিক : তোমার বলা সেই অভিযোগগুলি
তোমার স্বজন বন্ধুদেরে বলেছিলাম খুলি।

১৮১৮. তোমার দুখ আমার কাছে শুনল যখন তারা
একটি তোতা বক্ষ ফেটে অমনি গেল মারা।

১৮১৯. এখন আমি মরছি দুঃখ অনুশোচনায়
কিন্তু বলে ফেলার প্ররে লাভ কী তাতে হায় !

১৮২০. কথা যখন যায় বেরিয়ে লও জানিয়া থির
ধনুক থেকে বেরিয়ে গেল যেন তূনীর তীর।

১৮২১. ছুড়ে দেয়া তীর ফিরিয়ে যায় না আনা আর
বন্যা ও বান রুখতে তো হয় উৎস মূলে তার।

১৮২২. উৎস থেকে বন্যা ও বান বেরিয়ে যখন আসে
রোধ করা আর যায় না তখন দেশ জনপ্রদ ভাসে।

১৮২৩. অদৃশ্যমান কার্যাবলীর দারুন প্র্রভাব আর
সে প্র্রভাবের কবল থেকে নেই কারো নিস্তার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন