শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

কুরবানীকে সামনে করে জমে উঠেছে চুয়াডাঙ্গা পশুহাট

চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৯, ৬:০২ পিএম

আর মাত্র দুই দিন পর কুরবানী । আসন্ন কুরবানীকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন উপজেলার গরুর হাটগুলো জমে উঠেছে । সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে পশু বেচাকেনা । তবে কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর তুলনামূলক ভারতীয় গরু কম হওয়ায় দেশী গরুর চাহিদা বেশী ও যোগানো ভাল ।বাজারে গরুর দাম চড়া । কম দামের আশায় ক্রেতারা চাষীদের নিকট থেকে গরু কেনার জন্য গ্রাম-গঞ্জে ছুটছেন।

জেলা প্রশাসনের স্থানীয় বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,জেলায় ১০টি নিবন্ধিত পশু হাটের মধ্যে ৩টি পশুহাট বৃহৎ । আলমডাঙ্গা পশুহাট.দামুড়হুদার ডুগডুগি পশুহাট ও জীবননগর উপজেলার শিয়ালমারী পশুহাট । এর মধ্যে আলমডাঙ্গা পশুহাট বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় , গাবতলীর পরেই এই পশুহাটের স্থান।
বিশিষ্ট হাট ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান জানান,এই পশুহাটে সাধারনত ৪০ থেকে ৪৫ কোটি টাকার বিকিকিনি হয় । সপ্তাহে ডুগডুগি ও শেয়ালমারী সহ জেলার পশুহাটগুলোতে প্রায় ২০০শ কোটি টাকার বিকিকিনি হয় । ডুগডুগি সপ্তাহের সোমবারে ,আলমডাঙ্গা বুধবারে,শেয়ালমারী পশুহাট বৃহস্পতিবারে বসে । শুধুমাত্র চুয়াডাঙ্গা নয় বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তর থেকে পাইকারী ক্রেতা আসে এই হাটে তাদের পছন্দমত পশু ক্রয় করার জন্য ।

বুধবার আলমডাঙ্গা পশুহাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে প্রচুর কোরবানী পশু উঠেছে । স্থান সংকুলান না হওযায় বিপাকে পড়তে হয় ক্রেতা-বিক্রেতাদের । হাটে ব্যপক সমাগম হলেও বড় গরু কেনার ক্রেতা ছিল কম । তবে মাঝরি গরুর ক্রেতা ছিল বেশী । বিশেষ করে ৪০ থেকে ৮০-৯০ হাজারের মধ্যে । এ ব্যাপারে বিশিষ্ট হাট ব্যবসায়ী রাইয়ান জোয়ার্দ্দার জানান, বড় গরুর ক্রেতা আজকের হাটে কম। ডেঙ্গু ও বন্যার কারণে ব্যবসায়ীরা বড় গরু কেনার ঝুঁকি নিচ্ছেন না ।মাঝারি গরু ঢাকা থেকে ফিরে আসলেও স্থানীয় হাটে বিক্রয় হবে । বড় গরু বিক্রয় করা সম্ভব হয় না ।

খামারিরা ভাল দাম পাওয়ার আশায় দেশের বৃহত্তর হাট গুলোতে নিতে শুরু করেছেন গরু। এদিকে দেশী খামারিরা যাতে গরুর দাম ভাল পায় সে লক্ষে,ভারতীয় সীমান্তে অবৈধ গরু প্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির পক্ষ থেকে টহল জোরদার করা হয়েছে। পশুহাট গুলোতে আসতে শুরু করেছে গরু এবং ছাগল,মহিষ ও ভেড়া। গরুর আকার ভেদে দাম চাচ্ছেন বিক্রেতারা। ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪লক্ষ টাকার গরু পশুহাট গুলোতে দেখা যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতা গরু কিনতে আসছেন। কারন এ জেলার গরুর মান ভাল দাম ও তুলনামূলক কম। গত এক সপ্তাহ থেকে চুয়াডাঙ্গার গরু ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাতে যেতে শুরু করেছে।

ঢাকার নারায়নগঞ্জের বন্দর মিনারবাড়ী সিকান্দার ফার্ম হাউজের গরু সরবরাহকারী জেলার কুলপালা গ্রামের আইনাল হক বলেন,চুয়াডাঙ্গার গরু বেশীর ভাগই ভ্যাকসিন মুক্ত এবং প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠার কারনে এ গরুর চাহিদা বেশী।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও দর্শনা সীমান্তবর্তী এলাকাি দয়ে প্রায় একমাস আগে অবৈধভাবে ভারত থেকে গরু আসতে শুরু করেছিল। পুলিশ ও বিজিবির কঠোর নজরদারীর কারনে চোরাকারবারীরা ভারত থেকে গরু আনা বন্ধ রেখেছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা.আহামশামিমুজ্জামান জানান, পশুহাটগুলোতে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ সার্বিক কাজে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে প্রানী সম্পদ উপজেলা টিম সহযোগিতা করছে। তিনি আরও জানান,জেলায় কোরবানী যোগ্য পশু রয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার ৬৩৩ টি। এর মধ্যে গরু ও মহিষ মিলে ৩৭ হাজার ৩৭৪টি, ছাগল ও ভেড়া মিলে মিলে ১ লাখ ৪৩ হাজার ২৫৯ টি । এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় কোরবানযোগ্য পশু গরু ও মহিষ মিলে ৭ হাজার ৩৬৩ টি , ছাগল ও ভেড়া মিলে ৩৪ হাজার ৬৬৫টি,আলমডাঙ্গা উপজেলায় গরু মহিষ মিলে ৬ হাজার ৫০৭টি,ছাগল ও ভেড়া মিলে ১১ হাজার ৯০৫টি,দামুড়হুদা উপজেলায় গরু ও মহিষ মিলে ১১ হাজার ৬৭৫ট ,ছাগল ও ভেড়া মিলে ১৩ হাজার ৯০১টি ও জীবননগর উপজেলায় গরু ও মহিষ মিলে ৬ হাজার ৩৭৬ টি ও ছাগল ও ভেড়া মিলে ৩৪ হাজার ৫৫৩টি

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন