পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে প্রশাসনিক উদ্যোগ জরুরী বলে মত দিয়েছেন তামাক সচেতনতায় কাজ করা সংগঠনগুলো। বুধবার (২৮ আগষ্ট) ঢাকা রির্পোর্টাস ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এইড ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে খুলনা বিভাগের পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের উপর কমপ্লাইন্স এ্যানালাইসিস-২০১৯ জরিপের তথ্য উপস্থাপন করা হয়। দি ইউনিয়নের সহায়তায় এইড ফাইন্ডেশন ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে।
সাম্প্রতিক দেশকালের সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দীন পলাশ এর সভাপত্বিতে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বাচাঁও আন্দেলনের (পবা) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট’র উপদেষ্টা আবু নাসের খাঁন, এইড ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বকুল। সংবাদ সম্মেলনে সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে প্রবদ্ধ উপস্থাপন করেন এইড ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার কাজী মোহাম্মদ হাসিবুল হক ও সঞ্চালনা করেন এডভোকেসী অফিনার আবু নাসের অনীক।
কাজী মোহাম্মদ হাসিবুল বলেন, খুলনা বিভাগের চারটি জেলার যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গায় তামাক নিয়ন্ত্রন আইন বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা, তামাক নিয়ন্ত্রনের বিদ্যমান সীমাবদ্ধতা, জেলা টাস্কফোর্স কমিটিগুলোর কার্যক্রম, গণপরিবহনে ও পাবলিক প্লেসে বর্তমানে ধূমপানের বিয়য়ক তথ্য সংগ্রহে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
সংগৃহিত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, তামাক নিয়ন্ত্রন আইন অনুসারে ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ গণপরিবহনে ধূমপান বিরোধী সর্তকীকরণ চিহ্ন ব্যবহার হচ্ছে না। মাত্র শপিংমলগুলোতে ধূমপান বিরোধী সর্তকীকরণ চিহ্ন ব্যবহার হচ্ছে ১৬ শতাংশ, শিশু পার্কগুলোতে ৩ শতাংশ, সিনেমাহলে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং হাসপাতাল ও ক্লিনিকেগুলোতে ধূমপান বিরোধী সর্তকীকরণ চিহ্ন ব্যবহার করা হচ্ছে ২১ দশমিক ৬ শতাংশ। এছাড়াও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর ৮ দশমিক ১ শতাংশ এবং ট্রেন স্টেশন ২ দশমিক ৮ শতাংশ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে সর্তকীকরণ চিহ্ন ব্যবহার হচ্ছে। তবে চারটি জেলার বাস টার্মিনালগুলোতে কোথাও কোন সর্তকীকরণ চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে আরো দেখা যায়, ২৪ শতাংশ মানুষ ছোট গণপরিবহনে ধূমপান করছে। এছাড়া আদালত এলাকায় ৪ শতাংশ, বিপনীবিতানগুলোতে ১২ শতাংশ, শিশু পার্কগুলোতে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ, সিনেমা হলে ৮ শতাংশ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৮ শতাংশ, হসপিটাল এবং ক্লিনিকে ৪ শতাংশ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান গুলোতে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ মানুষ ধূমপান করে।
ইলিয়াস উদ্দীন পলাশ বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রন কার্যক্রমকে জোরদার করার জন্য টাস্কফোর্স কমিটি ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে আরো সক্রিয় করার মধ্যদিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রনে সরকার, এনজিও ও অনান্য প্রতিষ্ঠানকে আরো যথাযথ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।
আবু নাসের খান বলেন, আশার কথা দেশের বেশিরভাগ মানুষ তামাকের কুফল সম্পর্কে অবহিত। এটি আমাদের শক্তি। ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের পূর্ণ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তামাকের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে হবে। তার জন্য আইন ভঙ্গকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রন করতে হবে। আমিনুল ইসলাম বকুল বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আমাদের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের পূর্ণবাস্তবায়ন জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে ডাবিøউবিবি ট্রাস্ট, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্স সেল ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন