চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সঙ্গে নিজের নামটি আজীবনের জন্য জুড়ে যাচ্ছে রশিদ খানের। আজ সাগরিকায় টস করতে নামলেই ইতিহাসে ঢুকে যাবেন আফগান সেরা তারকা। টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক হিসেবে নাম উঠে যাবে তার। ভেঙে দেবেন ১৫ বছর আগে গড়া জিম্বাবুয়ের টাটেন্ডা টাইবুর রেকর্ড।
২০০৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারারেতে ২০ বছর ৩৫৮ দিন বয়েসে জিম্বাবুয়েকে নেতৃত্ব দিতে নেমেছিলেন টাইবো। এতদিন পর্যন্ত তিনিই ছিলেন টেস্টের সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক। কোন অঘটন না ঘটলে আজই রেকর্ডটা নিজের করে নিচ্ছেন রশিদ। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে টস করতে নামার দিন রশিদের বয়স হবে ২০ বছর ৩৫০ দিন। টেস্টের আগের দিন রেকর্ডের কথা মনে করিয়ে দিতেই রশিদের চোখেমুখে আনন্দের রেণু, ‘এত অল্প বয়েস থেকে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া দারুণ ব্যাপার। খুব কম বয়স থেকে অনেক কিছু শেখার সুযোগ পাচ্ছি। বরাবরই দলে থাকাই গর্বের ব্যাপার। অধিনায়কত্বের কথা ভুলে যাই, দলকে প্রতিনিধিত্ব করাও সবসময়ই আমাকে গর্বিত করে, অনুপ্রাণিত করে। কিন্তু আমার জন্য নেতৃত্ব দেওয়া আলাদা কিছু, বিশেষ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। ইনশাআল্লাহ আমি আমার সর্বোচ্চ নিংড়ে দিয়ে সেরাটা করার চেষ্টা করব।’
২০০০ সালে টেস্ট অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত ১১৪ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ১৩ জয়, ১৬ ড্রয়ের পাশে হারই অবশ্য অনেক বেশি। নিজেদের থেকে এগিয়ে থাকা দলের সঙ্গে ৮৫ বারই হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। নতুন টেস্ট সদস্য হওয়ার পর দুই টেস্ট খেলেই একটিতে জিতে ৫০-৫০ রেকর্ড আফগানিস্তানের। ইতিহাসে আফগানিস্তানের এটি তৃতীয় টেস্ট ম্যাচ। এর আগে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টের পর তারা এক টেস্ট খেলেছে তাদের মতই নতুন টেস্ট মর্যাদা পাওয়া আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে, সে ম্যাচে জিতেছেও তারা। নিজেদের শক্তি, সামর্থ্য আর অভিজ্ঞতা থেকে এগিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে খেলাটাই তো তাদের আসল চ্যালেঞ্জ। আর সেখানেই নিজেদের কঠিন পরীক্ষা দেখছেন আফগান অধিনায়ক রশিদ, ‘আমাদের পাঁচদিনের ম্যাচ খেলার মতো পোক্ত খেলোয়াড় আছে। অবশ্যই বাংলাদেশ আমাদের চেয়ে ঢের এগিয়ে থাকা দল। আমরা কেবল ভারত আর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটো টেস্ট খেলেছি, আর তারা একশোটার বেশি টেস্ট খেলে ফেলেছে। একটা ব্যাপার হলো, প্রতিদিন শেখার সুযোগ আছে। সংস্করণটা আমাদের কাছে নতুন।’
সীমিত পরিসরে সমীহ করার মতো দল আফগানিস্তান দীর্ঘ পরিসরে আরেকটি ম্যাচের আগে দল হিসেবেও বেশ রোমাঞ্চিত, অধিনায়ক রশিদ জানালেন বাংলাদেশের ভালো-মন্দ সবটা জানেন বলেই লড়াইয়ের আশাও তাদের, ‘আমরা দারুণ রোমাঞ্চিত। টেস্ট ম্যাচ খেলা বরাবরই গর্বের। আমরা ভারত বা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার সময়ও প্রতিপক্ষের কথা ভাবিনি, আমরা সব সময়ই টেস্ট ক্রিকেটে নামার সময় টেস্টের মত করেই ফোকাস করেছি। এই সংস্করণ অন্যসব থেকে আলাদা। সবকিছু ভিন্ন। শতভাগ দিতে আমরা মুখিয়ে আছি। বাংলাদেশের বিপক্ষে অনেক ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলেছি। তাদের ব্যাটসম্যান, বোলারদের জানি। তারাও জানে আমাদের নিয়ে। আশা করছি দারুণ লড়াই হবে।’ প্রস্তুতি ম্যাচে ‘ছায়া বাংলাদেশ’কে ১২৩ রানে গুড়িয়ে দেয়ার আত্মবিশ্বাস রশিদদের দিচ্ছে আত্মতুষ্টি, ‘চারদিনের ম্যাচে আমরা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো খেলেছি। বিসিবি একাদশের বিপক্ষেও খেলা সন্তুষ্টিজনক। তবে পাঁচ দিনের ম্যাচের অভিজ্ঞতা কম। তবে টেস্টে যেটা দরকার তা হলো পজিটিভ ক্রিকেট খেলতে হবে। মাথা ঠান্ডা রেখে খেলতে পারলে ভালো ফল আসবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন