ক্রয়-বিক্রয়ের প্রয়োজনে মানুষ বাজারে গমন করে। সেখানে গিয়ে তারা কেনাকাটায় ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ায় অনেক সময় আল্লাহকে ভুলে যায়, তাঁর যিকর ও ইবাদতের কথাও বিস্মৃত হয়ে যায়। এজন্য বাজার পৃথিবীতে আল্লাহর নিকটে সবচেয়ে অপ্রিয় স্থান। তারপরেও জীবনের বিভিন্ন দরকারে বাজারে যেতে হয়। বাজারে গিয়েও মানুষ যেন আল্লাহ্র স্মরণ থেকে গাফেল না হয় এবং তাঁর ইবাদত থেকে বিরত না থাকে সেজন্য ইসলামে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এগুলো মেনে চললে পার্থিব জীবনের প্রয়োজন মিটবে এবং পরকালে অগণিত ছওয়াব পাওয়া যাবে। তাই বাজার সংশ্লিষ্ট আদব-কায়েদা সমূহ মেনে চলা যরূরী। আলোচ্য নিবন্ধে বাজারের আদব বা শিষ্টাচার সমূহ আলোচনা করা হলোÑ
বাজারের পরিচয় : যে স্থানে পণ্য বা প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় বা বিক্রয়ের জন্য আনা হয় তাকে বাজার বলা হয়। একে বাজার নামকরণের কারণ হচ্ছে- এখানে বিক্রেতা পণ্য নিয়ে আসে তা বিক্রি করার জন্য এবং ক্রেতা প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে স্বীয় বাসস্থানে নিয়ে যায়।
বাজারের আদব সমূহ : বাজার উদাসীনতা, দুনিয়ার প্রতি আসক্তি, ধোঁকা-প্রবঞ্চনা, মিথ্যাচার, বিশ্বাসঘাতকতা প্রভৃতি পাপাচারের স্থান। এজন্য বাজারে গিয়েও মুমিন নিজেকে এসব থেকে বিরত রাখার পাশাপাশি বাজারের শিষ্টাচার পালন করার চেষ্টা করবে। বাজারের আদব সমূহকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। ক. বাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট, খ. বিক্রেতার সাথে সংশ্লিষ্ট, গ. ক্রেতার সাথে সংশ্লিষ্ট ও ঘ. ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট।
ক. বাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট আদব :
১. উত্তম স্থান নির্বাচন করা : বাজারের জন্য উত্তম স্থান নির্বাচন করা যেখানে যাতায়াতের সুন্দর সুযোগ-সুবিধা থাকে। সে স্থান ক্রেতা-বিক্রেতা কারো জন্য যেন ক্ষতিকর স্থানে পরিণত না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখা। আর সেখানে যাতে শরীআত পরিপন্থী দ্রব্যাদি ক্রয়-বিক্রয় না হয় তার ব্যবস্থা করা।
২. ক্রেতা-বিক্রেতাকে হালাল-হারাম অবহিত করা : ইসলামে কোন পণ্য হালাল এবং কোনটা হারাম সে সম্পর্কে ক্রেতা-বিক্রেতাকে অবহিত করার ব্যবস্থা করা। কেননা এ সম্পর্কে জ্ঞান না থাকলে বাজারকে কলুষিত করে ফেলবে। ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, যার দ্বীন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান আছে কেবল সেই যেন আমাদের বাজারে ব্যবসা করে।
৩. বাজার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করা : বাজারে ময়লা-আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নোংরা না করে সাধ্যমত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করা মুমিনের জন্য করণীয়। কেননা ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখলে সেগুলি থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়, যাতে অন্য মানুষের কষ্ট হয়।
৪. বাজারকে হারাম পণ্য ক্রয়-বিক্রয় থেকে পবিত্র রাখার চেষ্টা করা : শরীআতে যেসব বস্ত্ত হারাম সেগুলো থেকে বাজারকে মুক্ত রাখা আবশ্যক। কারণ বাজারে হারাম দ্রব্য সহজলভ্য হলে মানুষ এতে লিপ্ত হবে। আর হারামে লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে তারা ইহকাল ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
খ. বিক্রেতার সাথে সংশ্লিষ্ট আদব :
১. ব্যবসায়ের মাধ্যমে আল্লাহ্র নৈকট্য কামনা করা : ব্যবসায়ীরা যখন তার কর্মের মাধ্যমে আল্লাহ্র নিকটে ছওয়াব আশা করবে তখন সে যাবতীয় হারাম থেকে নিজেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবে। আর তার এ উপার্জন দ্বারা পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্ততি ও সমস্ত সৃষ্টির জন্য ব্যয় করার চেষ্টা করবে। তার অর্জিত সম্পদ থেকে সে দান-ছাদাক্বা করবে।
২. হালাল পণ্য বিক্রয় করা : ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে হারাম পণ্য পরিহার করতে হবে। পানাহার, পোষাক-পরিচ্ছদ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা যেসব দ্রব্য হারাম করেছেন সেগুলো বিক্রি করা থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। কেননা যা খাওয়া ও ব্যবহার করা হারাম তার ব্যবসাও হারাম।
৩. সততা বজায় রাখা এবং পণ্যের দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা : ব্যবসায়ে সততা ও ন্যয়পরায়ণতা বজায় রাখা এবং পণ্যের কোন দোষ-ত্রুটি থাকলে তা গোপন না করে ক্রেতার কাছে তা ব্যক্ত করা মুসলমান ব্যক্তি মাত্রের করণীয়।
৪. ব্যবসায়ে অধিক কসম খাওয়া পরিহার করা : ব্যবসায়ে অধিক কসম খাওয়া থেকে বিরত থাকা।
৫. হারাম ব্যবসা থেকে বিরত থাকা : হারাম ব্যবসা পরিহার করা ব্যবসায়ীর জন্য অপরিহার্য। যেমন ধোঁকা-প্রবঞ্চনামূলক ব্যবসা, সূদী ব্যবসা এবং ওযনে ও পরিমাপে কম দেওয়া ইত্যাদি থেকে সর্বতোভাবে বিরত থাকা কর্তব্য।
গ. সূদী ব্যবসা-বাণিজ্য :
আল্লাহ তাআলা সূদকে হারাম করেছেন। তিনি বলেন, আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল ও সূদকে হারাম করেছেন (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) স্বীয় পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আল্লাহ সূদগ্রহীতা, সূদদাতা, সাক্ষী ও লেখককে অভিসম্পাত করেছেন।[১০] তাই বাজারে ও অন্যত্র সূদী ব্যবসা থেকে সর্বতোভাবে বিরত থাকা আবশ্যক।
ঘ. দালালীর মাধ্যমে ক্রেতাকে প্রতারিত করা :
কোন কোন সময় ক্রেতার নিকটে অধিক মূল্য চাওয়া হয়। এর দ্বারা উদ্দেশ্য থাকে প্রতারণার মাধ্যমে ক্রেতার নিকট থেকে অধিক মূল্য আদায় করা। আবার এখানে ক্রয়ের উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে পণ্যের মূল্য বেশী বলে নিজে সটকে পড়া এবং ক্রেতাকে ঐ অধিক মূল্যে পণ্য ক্রয়ে বাধ্য করা। এ ধরনের কাজকে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ) নিষেধ করেছেন।
৬. মজুদদারী কারবার না করা : ব্যবসার উদ্দেশ্যে মজুদ করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন বাজারে সে খাদ্যবস্ত্তর সংকট না থাকে। যদি বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মুনাফাখোরীর উদ্দেশ্যে মজুদ করা হয়, তবে অবশ্যই তা অপরাধ হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মজুদদারী করে সে পাপী। বর্তমানে ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে বাজারমূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে যে মজুদদারী করে, তা থেকে আল্লাহভীরু মুসলিম ব্যবসায়ীকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
গ. ক্রেতার সাথে সংশ্লিষ্ট আদব :
১. উত্তম বাজার নির্বাচন করা : ক্রেতাকে এমন বাজার নির্বাচন করা উচিত যেখানে পাপাচার থেকে দূরে থাকা যায়। সেই সাথে এমন সময় নির্ধারণ করা উচিত যাতে নিজের শারীরিক ও মানসিক কষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যেমন অতিরিক্ত ভিড়, মহিলাদের সমাগম প্রভৃতি।
২. ক্রয়কৃত পণ্য হালাল হওয়া : মুমিনের পানাহার, পোষাক-পরিচ্ছদ, আসবাব পত্র, বাহন ইত্যাদি হালাল হওয়া যরূরী। সুতরাং মুমিন মুত্তাক্বী ব্যক্তির জন্য হারাম ভক্ষণ করা কিংবা হারাম দ্বারা জীবন যাপন করা সমীচীন নয়। আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ)-এর একজন ক্রীতদাস ছিল। সে প্রতিদিন তার উপর ধার্য কর আদায় করত। আর আবূ বকর (রাঃ) তার দেওয়া কর হ’তে আহার করতেন। একদিন সে কিছু খাবার জিনিস এনে দিল। তা হ’তে তিনি আহার করলেন। তারপর গোলাম বলল, আপনি জানেন কি ওটা কিভাবে উপার্জিত করা হয়েছে যা আপনি খেয়েছেন? তিনি বললেন, বলত কিভাবে (উপার্জিত)? গোলাম উত্তরে বলল, আমি জাহিলী যুগে এক ব্যক্তির ভবিষ্যৎ গণনা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ভবিষ্যৎ গণনা করা আমার ভালভাবে জানা ছিল না। তথাপি প্রতারণা করে তা করেছিলাম। আমার সাথে তার দেখা হ’লে গণনার বিনিময়ে এ দ্রব্যাদি সে আমাকে হাদিয়া দিল যা হ’তে আপনি আহার করলেন। আবূ বকর (রাঃ) এটা শুনামাত্র মুখের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিলেন এবং পেটের ভিতর যা কিছু ছিল সব বমি করে দিলেন।[১৫]
৩. হারাম দ্রব্য ক্রয় করা থেকে বিরত থাকা : আল্লাহ ও রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক হারামকৃত পণ্য ক্রয় করা থেকে বিরত থাকা। এ ব্যাপারে মুমিন ক্রেতা অবশ্যই সতর্ক থাকবেন।
৪. বিক্রেতার সাথে বিশ্বস্ত ও ন্যায়ানুগ ব্যবহার করা : মিথ্যা, শঠতা ও বিশ্বাসঘাতকতা মূলক আচরণ থেকে মুসলিম ক্রেতা অবশ্যই বিরত থাকবেন। যেমন বিক্রেতা জাল টাকা প্রদান করা, তাকে টাকা না দিয়েই মূল্য পরিশোধের দাবী করা, পণ্য চুরি বা আত্মসাৎ করা এবং পণ্যমূল্য নিয়ে বিক্রেতার সাথে বাক-বিতন্ডা ও দুর্ব্যবহার করা ইত্যাদি।
৫. বিক্রেতাকে উপদেশ দেওয়া : মুসলিম ক্রেতার জন্য করণীয় হ’ল বিক্রেতার মাঝে কোন ত্রুটি দেখলে তাকে উপদেশ দেওয়া। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘উত্তম উপার্জন হচ্ছে ঐ কর্মীর হাতের কামাই যখন সে (মানুষকে) উপদেশ দেয়’।
৬. মহিলা ক্রেতা হ’লে শরী‘আতের সীমা বজায় রাখা : মহিলারা সাধারণভাবে একাকী বাজারে গমন থেকে বিরত থাকবে। কেননা আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা নিজ নিজ গৃহে অবস্থান করবে। প্রাচীন জাহেলী যুগের ন্যায় সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বেড়িয়ো না’ (আহযাব ৩৩/৩৩)। আর যদি তাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে দেওয়ার মত কেউ না থাকে এবং তারা বাজারে যেতে বাধ্য হয় তাহ’লে শারঈ পর্দা বজায় রেখে নিরাপদ সময়ে গমন করবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মহিলা হচ্ছে আবরণীয় বস্তু)। সে বাইরে বের হ’লে শয়তান তার দিকে চোখ তুলে তাকায়’।[১৯]
ঘ. ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট আদব :
১. বাজারে প্রবেশ করে আল্লাহ্র যিকর করা : বাজার এমন একটি জায়গা যেখানে গেলে মানুষ ব্যস্ততার কারণে আল্লাহ্র স্মরণ ভুলে যায়। কিন্তু মুমিনের কর্তব্য হ’ল সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ রাখা। তাই বাজারে গিয়েও সে যিকর করবে। আল্লাহ বলেন, অতঃপর ছালাত শেষ হ’লে তোমরা যমীনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহ্র অনুগ্রহ তালাশ কর। আর তোমরা আল্লাহকে অধিকহারে স্মরণ কর যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার’ (জুমু‘আহ ৬২/১০)।
২. সালামের ব্যাপক প্রসার করা : সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটানো। ছাহাবায়ে কেরামের কেউ কেউ সালাম বিনিময়ের জন্যই কেবল বাজারে যেতেন। তুফাইল ইবনে উবাই ইবনে কা‘ব হ’তে বর্ণিত, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ)-এর কাছে আসতেন এবং সকালে তাঁর সঙ্গে বাজারে যেতেন। তিনি বলেন, ‘যখন আমরা সকালে বাজারে যেতাম, তখন তিনি প্রত্যেক খুচরা বিক্রেতা, স্থায়ী ব্যবসায়ী, মিসকীন তথা অন্য কোন ব্যক্তির নিকট দিয়ে অতিক্রম করার সময় তাকে সালাম দিতেন।’ তুফাইল বলেন, সুতরাং আমি একদিন (অভ্যাসমত) আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ)-এর নিকট গেলাম।
তিনি আমাকে তাঁর সঙ্গে বাজারে যেতে বললেন। আমি বললাম, ‘আপনি বাজারে গিয়ে কী করবেন? আপনি তো বেচা-কেনার জন্য কোথাও থামেন না, কোন পণ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন না, তার দর-দাম জানতে চান না এবং বাজারের কোন মজলিসে বসেনও না। আমি বলছি, এখানে আমাদের সাথে বসে যান, এখানেই কথাবার্তা বলি।’ (তুফাইলের ভুঁড়ি মোটা ছিল, সেজন্য) তিনি বললেন, ‘ওহে ভুঁড়িমোটা! আমরা সকাল বেলায় বাজারে একমাত্র সালাম পেশ করার উদ্দেশ্যে যাই। যার সাথে আমাদের সাক্ষাৎ হয়, আমরা তাকে সালাম দেই’।[২১]
৩. শোরগোল ও উচ্চবাচ্য পরিহার করা : বাজারে শোরগোল ও চিৎকার করা থেকে বিরত থাকা যরূরী। হাদীছে কুদসীতে রাসূল (ছাঃ)-এর কতিপয় গুণাবলী উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে ‘তিনি বাজারে কঠোর, রূঢ় ও নির্দয় স্বভাবের ছিলেন না। তিনি মন্দের প্রতিশোধ মন্দ দ্বারা নিতেন না বরং মাফ করে দিতেন, ক্ষমা করে দিতেন’।[২২]
৪. ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিকে সাক্ষী বা লেখার মাধ্যমে সুদৃঢ় করা : ক্রয়-বিক্রয় চুক্তির ক্ষেত্রে সাক্ষী ও লেখার মাধ্যমে সুদৃঢ় রাখা। আল্লাহ বলেন, হে বিশ্বাসীগণ! যখন তোমরা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ঋণের আদান-প্রদান কর, তখন তা লিপিবদ্ধ কর। তোমাদের মধ্যেকার কোন লেখক যেন তা ন্যায়সঙ্গতভাবে লিপিবদ্ধ করে (বাক্বারাহ ২/২৮২)।
৫. ওয়াদা পূর্ণ করা : ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে যে ওয়াদা করা হবে তা পূর্ণ করা আবশ্যক। আল্লাহ বলেন, হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা তোমাদের চুক্তিগুলি পূর্ণ কর। (মায়েদাহ ৫/১)।
৬. ক্রয়-বিক্রয়ে উদার ও নম্র হওয়া : ক্রয়-বিক্রয়ে উদারতা ও নম্রতা বজায় রাখা যরূরী। কারণ এর জন্য নেকী রয়েছে।
৭. আত্মসাৎকৃত ও চোরাই দ্রব্য ক্রয় থেকে দূরে থাকা : আত্মসাৎ করা বা চুরি করে আনা কোন পণ্য-দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় থেকে বিরত থাকা। কেননা এসব হারাম।
৮. মহিলাদের থেকে চোখ অবনত রাখা, তাদের সাথে সংমিশ্রণ ও তাদের ভিড় এড়িয়ে চলা : বাজারে আগত মহিলাদের দিকে তাকানো থেকে চোখকে সংযত রাখা। তাদের সাথে মিশে যাওয়া এবং তাদের ভিড়ের মধ্যে না গিয়ে সেখান থেকে দূরে থাকা কর্তব্য।
৯. বেচা-কেনায় লিপ্ত হয়ে আল্লাহ্র যিকর ও ছালাত থেকে দূরে না থাকা : বাজারে গিয়ে মানুষ নিজের প্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনা-কাটায় যেমন মশগূল হয়ে পড়ে, তেমনি বিক্রেতারাও পণ্য বিক্রয়ে ব্যাপৃত হয়ে আল্লাহ্র যিকর এবং কোন কোন সময় ছালাতের কথা ভুলে যায়। কোনক্রমেই এরূপ হওয়া চলবে না। বরং ছালাতের সময় হয়ে গেলে ছালাত আদায় করে নিতে হবে। তাছাড়া মাঝে-মধ্যে আল্লাহ্র যিকর ও তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করতে হবে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামী আদব বা শিষ্টাচার মেনে চলার তাওফীক দান করুন-আমীন!
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন