বিদ্যমান তারল্য সংকটের কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য নির্ধারিত অগ্রিম ও আমানতের অনুপাত (এডিআর) সমন্বয়ের সময়সীমা আবার বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে পাঁচবার বাড়ানো হলো এ সময়সীমা।
এক্ষেত্রে এডিআর সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ এবং আইডিআর সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ নির্ধারণ করে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
ঋণ প্রবৃদ্ধি ব্যাপক বাড়তে থাকায় ব্যাংকগুলোর ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) কমিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি (২০১৯) একটি সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এডিআর কমিয়ে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর জন্য ৮৩ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ইসলামী ব্যাংকগুলোর জন্য ৮৯ শতাংশ করা হয়। আগে যা ৮৫ ও ৯০ শতাংশ ছিল। ব্যাংকগুলোর এডিআর নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনতে প্রথমে গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। এরপর আরেকটি সার্কুলারের মাধ্যমে সময় বাড়িয়ে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর করা হয়। তবে তারল্য সংকটের কথা বলে বিভিন্ন দাবিতে সরব হয় বিএবি। পরবর্তীতে সময় আরও বাড়িয়ে ৩০ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এই সময়ের মধ্যেও সমন্বয় করতে না পারায় ঋণ-আমানত অনুপাত নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনার কার্যক্রম ৩০ সেপ্টেম্বরের (২০১৯) মধ্যে শেষ করতে বলা হয়।
বাংলাদেশে কাযরত সকল তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়, প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর দ্বি-সাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে রক্ষিতব্য সিআরআর এবং দৈনিক ভিত্তিতে রক্ষিতব্য এসএলআর বাদে বিনিয়োগযোগ্য তহবিল দাঁড়ায় ৮১ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ইসলামি শরীয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংক ও প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য তা দাঁড়ায় ৮৯ শতাংশ।
সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতের মূলধন ভিত্তি, তারল্য পরিস্থিতি, আন্তঃব্যাংক নির্ভরশীলতা এবং সর্বোপরি ব্যাসেল-৩ অনুসারে এলসিআর ও এনএসএফআর এর নির্ধারিত মাত্রা সংরক্ষণের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত প্রচলিত ধারার ব্যাংকের জন্য অগ্রিম-আমানত হার (এডিআর) সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ (৮১ দশমিক ৫ শতাংশ + সার্বিক আর্থিক সূচকসমূহ বিবেচনায় ব্যাংকের পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে অতিরিক্ত ৩ দশমিক ৫ শতাংশ) এবং ইসলামি শরীয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংক এবং প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামি ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য বিনিয়োগ-আমানত হার (এডিআর) সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ (৮৯ শতাংশ + সার্বিক আর্থিক সূচকসমূহ বিবেচনায় ব্যাংকের ব্যাংকের পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে অতিরিক্ত ১ শতাংশ) নির্ধারণ করা হলো।
অবিলম্বে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ শেষে সীমার ওপরে ছিল ১৯ ব্যাংকের এডিআর। ঋণ আমানত অনুপাতে বর্তমানে সবার ওপরে রয়েছে ফারমার্স থেকে পদ্মায় রূপান্তরিত ব্যাংক। ব্যাংকটির এডিআর গত ডিসেম্বরের ১১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১১৮ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে উঠেছে। পর্যায়ক্রমে বেসিক ব্যাংকের এডিআর রয়েছে ১১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ, রাকাব ১০৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ, ন্যাশনাল ব্যাংক ৯৫ দশমিক ৮১ শতাংশ ও এবি ব্যাংকের ৯৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সীমার ওপরে আরও রয়েছে এনআরবি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, মিডল্যান্ড, এনআরবি গ্লোবাল, আইএফআইসি, ট্রাস্ট ও সিটি ব্যাংক। ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর মধ্যে এসআইবিএল, এক্সিম, ইউনিয়ন, ফার্স্ট সিকিউরিটি এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের এডিআর রয়েছে সীমার বেশি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন