শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

পেঁয়াজ-ডিমের সঙ্গে সবজিও ঊর্ধ্বমুখী

ঢাকা-চট্টগ্রামের কাঁচাবাজার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলেও পেঁয়াজের দাম এখনো একশর ঘরে রয়েছে। পেঁয়াজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শীতের আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, পাতাকপি, মূলাসহ সব ধরণের সজজির দাম হঠাৎ করে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে। এর আগে পেঁয়াজ, ডিম, মুরগির দাম বাড়ে। আর মাছ ও গোশতের দাম দীর্ঘদিন ধরেই চড়া। ফলে নিত্যপণ্যের বাজার দরে নাভিশ্বাস উঠেছে নিম্ন আয়ের মানুষের।
সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন গতকাল শুক্রবার রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, মুগদা, ফকিরাপুল, যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, জুরাইন ও সেগুনবাগিচা অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি, ডিম, গরু, মহিষ, খাসির গোশতের দাম।
চমেটোর গায়ে হাত দেয়াই দূরহ। চড়া দামের বাজারে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো। এ সবজিটির বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে; যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। টমেটোর মতো দাম বেড়েছে গাজরের। গত সপ্তাহে ৬০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম বেড়ে হয়েছে ৮০-১০০ টাকা।
শীতের আগাম সবজি শিমের দামও অনেক চড়া। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে এই শীতের সবজি। প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। ছোট আকারের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পিস। একই দামে বিক্রি হচ্ছে পাতাকপি। মূলা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি।
শীতের আগাম সবজির সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছেÑ লাউ, করলা, ঝিঙে, বরবটি, বেগুন, পটল, ঢেঁড়স, উসি, ধুন্দুলসহ সব ধরনের সবজি। গত সপ্তাহে ছোট আকারের যে লাউ ৫০-৬০ টাকা পিস বিক্রি হয়েছে সেই লাউয়ের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা পিস। কোনো কোনো বাজার লাউয়ের পিছ একশ’ টাকা দরেও বিক্রি হতে দেখা যায়।
বাজার ভেদে করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৭০ টাকা, বরবটি আগের সপ্তাহের মতো ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা। দাম বাড়ার এ তালিকা আছে চিচিংগা, ঝিঙা, ধুনদলও। এই তিন সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজিতে; যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা কেজি।
চড়া দামের বাজারে এখন ৫০ টাকার নিচে মিলছে শুধু পেঁপে ও মিষ্টি কুমড়া। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে এ দু’টি সবজির দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ১৫-২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁপের দাম বেড়ে হয়েছে ২৫-৩০ টাকা। আর মিষ্টি কুমড়ার যে ফালি ১৫-২০ টাকা বিক্রি হয় তার দাম বেড়ে হয়েছে ৩০-৪০ টাকা হয়েছে। কোথাও কোথাও মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
সবজির দামের বিষয়ে শনির আখড়ার ব্যবসায়ী জলিল জানায়, বৃদ্ধির কারণে সজজির দাম বেড়েছে। ফকিরাপুলের ব্যবসায়ী মো. আজম বলেন, কয়েদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। এর সঙ্গে বন্যাও দেখা দিয়েছে। এতে সবজির খেতের ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে হঠাৎ করে সবজির দাম বেড়েছে। টানা বৃষ্টি হলে অথবা বন্য পরিস্থিতি খারাপ হলে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে। সেগুনবাগিচা বাজার থেকে সবজি কেনা আলেয়া বেগম বলেন, বাজারে গেলেই একেক দিন একেক পণ্যের দাম বাড়ছে। সবকিছুর দাম একের পর এক বেড়েই চলেছে। এর আগে পেঁয়াজের দাম বাড়ল। তারপর ডিম, মুরগির দাম বেড়েছে। আর গরুর গোশতের যে দাম তা আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে কেনা সম্ভব না। রুমিনা নামের আরেক ক্রেতা বলেন, একের পর এক পণ্যের দাম বাড়ায় আমাদের মতো নিম্ন আয়র মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছ। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে পছন্দ মতো সবজি কিনে খাব তারও উপায় নেই। দাম বাড়লেও কিন্তু বাজারে কোনো সবজির অভাব নেই। মূলত বাজারে কোনো নজরদারি না থাকায় এভাবে দাম বাড়ছে।
প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও দাম কিন্তু পড়েনি। এখনো অনেকের নাগালের বাইরে ইলিশ। মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেল, এককেজি ওজনের ইলিশ ১০০০-১১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে। রুই মাছ বিক্রি ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, পাঙাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, ট্যাংরা ৫৫০-৭০ টাকা, পুঁটি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গোশতের বাজার ঘুরে দেখা গেল প্রতিকেজি গরু ও মহিষের গোশত বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা, খাসি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, লাল লেয়ার ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাকিস্তানী কক ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি দরে। ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা ডজন। ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ে হৈচৈ এ মধ্যে অসাধু ব্যবসায়ীরা অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সবকিছুই দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্দশায় পড়ে গেছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন