শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতকে বোঝার মতো প্রসারতা মোদির নেই -অমর্ত্য সেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ৫:৩৮ পিএম

ভারতে গণতন্ত্রের অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। মার্কিন একটি পত্রিকাকে দেয়া দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে খোলাখুলি জানালেন সে-কথা। সরাসরি সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। তার কথায়, ‘জন স্টুয়ার্ট মিলের কাছ থেকে বড় যে বিষয়টি আমরা জেনেছি তা হল, গণতন্ত্র মানে আলোচনার ভিত্তিতে চলা সরকার। ভোট যে ভাবেই গোনো, আলোচনাকে ভয়ের বস্তু করে তুললে তুমি গণতন্ত্র পাবে না।’ সঙ্গে তার আক্ষেপ, ভারতে এখন একবগ্গা কট্টর হিন্দুত্বের দাপট। প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে তার মূল্যায়ন, ‘বহু ধর্ম ও বহু জাতির দেশ ভারতকে বোঝার মতো মনের প্রসারই নেই মোদির।’

অমর্ত্যের মতে, মোদির সব চেয়ে বড় সাফল্য গোধরা মামলা থেকে নিজেকে মুক্ত করা। এর ফলে ২০০২-এর যে-ঘটনায় হাজারের বেশি মানুষ খুন হয়েছিলেন, তার পিছনে মোদির একটা ভূমিকা ছিল— ভারতে অনেকে তা বিশ্বাসই করেন না। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভটির প্রসঙ্গে অমর্ত্যের আক্ষেপ, সরকার যদি বিরুদ্ধে থাকে, তবে সরকারি শুধু নয়, সম্ভবত অনেক বেসরকারি বিজ্ঞাপনও পায় না সংবাদমাধ্যম। ফলে স্বাধীন সংবাদপত্র বা সংবাদ চ্যানেল পাওয়াই দুষ্কর। স্টুয়ার্ট মিলের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘মানুষ ভয়ে আছেন। এটা আগে কখনও দেখিনি। এটা গণতন্ত্রের পন্থা নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ কী চান, সেটা বোঝারও পথ নয় এটা।’

তবু পুরোপুরি হতাশ নন অমর্ত্য। বলেন, ‘সব কিছুই হারিয়ে যায়নি। এখনও সাহসী কয়েকটি সংবাদপত্র আছে, যারা ঝুঁকি নিয়ে কিছু ছাপতে ভয় পায় না। দু’-একটা টিভি চ্যানেল ও রেডিও স্টেশনও আছে। প্রকাশ্য সভাও হচ্ছে কিছু। ভারতের কাঠামো যুক্তরাষ্ট্রীয়। বেশ ক’টি রাজ্যে বিজেপিই একমাত্র প্রভাবশালী শক্তি নয়।’

ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘দেখেছি কাকাদের সকলকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে। ন’বছর বয়সে দেখেছি মন্বন্তর। তিন লাখ মানুষ যাতে মারা যান। হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা দেখেছি। মুসলিম জনমজুরকে কুপিয়ে খুন করেছে আমারই পাড়ার কিছু হিন্দু। আমি তখন দশ কি এগারো। বাগানে খেলছিলাম। দেখি, রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটে আসছেন এক জন। চিৎকার করে বাবাকে ডাকলাম। জল খেতে দিলাম। এত রক্ত কখনও দেখিনি। আমার কোলে মাথা, স্পষ্ট বলেছিলেন, বিবি বলেছিল, হিন্দু এলাকায় কাজ কোরো না। কিন্তু বাচ্চারা না-খেয়ে আছে। কিছু তো রোজগার করতেই হবে। বাবা ওকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন। পুলিশকেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু হিন্দু এলাকার পুলিশ কিছু করতে রাজি হয়নি। আবার অনেক বড় বড় সমস্যা মিটে যেতেও দেখেছি। এর অর্থ এটাও নয় যে, হতাশার পরিস্থিতিতে সব আশা ছেড়ে দিতে হবে।’ সূত্র: টিওআই।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Satyajit Sensarma ৮ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:৫৫ পিএম says : 0
Amarta Sen amadar country Present Govt. response dai na. karon , Nalanda University thaka saria deiaicha Mr. Senka, UNi halan Suvidabadi Bengali.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন