বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা নেই খুলনা বিসিক শিল্পাঞ্চলে

প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ.টি.এম. রফিক/আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে ঃ অস্বাস্থ্যকর দূষিত পরিবেশে চলছে খুলনা বিসিক শিল্পাঞ্চলের শিল্প-কারখানাগুলো। স্থাপনের সুবর্ণ জয়ন্তীতেও পূর্ণাঙ্গ শিল্পাঞ্চলে পরিণত হতে পারেনি খুলনার বিসিক শিল্পনগরী। গত ৯ মে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির অনুষ্ঠিত সভায় স্বয়ং পরিবেশ অধিদপ্তর খুলনার পরিচালক বলেন, বিসিক শিল্প এলাকার কোনো শিল্পের পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পানি, ড্রেন ও রাস্তা সংস্কার বিল, সড়ক বাতি নেই খুলনার শিরোমনিস্থ বিসিক শিল্পনগরীতে। বিসিকের নিজস্ব কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমন নেই, তেমনি পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য নেই সঠিক ব্যবস্থাপনা, অধিকাংশ রাস্তাঘাট চলাচলের অযোগ্য। সড়ক বাতি না থাকায় সন্ধ্যার পর এই এলাকা পরিণত হয় ভুতুড়ে পরিবেশে।
ফুলতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ শেখ আকরাম হোসেন বলেন, শিরমনি-ফুলতলা যেতে বিসিক শিল্প এলাকা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে এলাকার পরিবেশ দূষিত করছে। এখানকার বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য পুকুর, খাল-বিলে মিশে মাছ মরে যাচ্ছে। মানুষ খালে/বিলে নামতে পারছে না। এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিপর্যয় ঘটছে। এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ জরুরি।
সূত্র মতে, ১৯৬৬ সালে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের কথা চিন্তা করে খুলনা নগরী থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে খানজাহান আলী থানাধীন শিরোমণি এলাকায় বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে এখানে খাদ্যজাত, কেমিক্যাল, পাটজাত এবং প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং মিলে ৯৬টি শিল্প ইউনিট রয়েছে। স্থাপনের সুবর্ণ জয়ন্তীতেও পূর্ণাঙ্গ শিল্পাঞ্চলে পরিণত হতে পারেনি খুলনার বিসিক শিল্পনগরী।
খুলনা বিসিকের সূত্র জানিয়েছে, ২০১৫ সালেও এখানকার ৯৬টি শিল্প ইউনিটের মধ্যে বন্ধ ছিল ৩৮টি। এখন বন্ধের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২০টিতে। বন্ধ শিল্প ইউনিটগুলো চালু হওয়ার কারণ হিসেবে বিসিকের শিল্পনগরী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, জমি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সাথে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় উদ্যোক্তারা ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা পাচ্ছে। যে কারণে উদ্যোক্তারা আবারও তাদের বন্ধ কারখানাগুলো চালু করতে পারছে। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পরিদর্শন শেষে কারখানাগুলোকে পরিবেশ লাইসেন্স নেবার জন্য নোটিশ দিয়েছে। আমরাও প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরিবেশ আইন মেনে চলতে তাগিদ দিচ্ছি।
পরিবেশ অধিদপ্তর খুলনার পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, শুধু খুলনা নয় বিভাগের সব বিসিক এলাকাগুলোতে পরিবেশের ছাড়পত্র নিতে গত ৭ জুন নোটিশ দেয়া হয়েছে। পরিবেশ আইন অমান্য শাস্তিমূলক অপরাধ। যাতে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণসহ ২ বছর থেকে অনধিক ৫ বছর জেল বা এক লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দÐে দÐিত হতে পারেন। ৭ জুনের নোটিশে বলা হয়েছেÑ নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে পরিবেশ ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি’র (বেলা) খুলনার সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের উদাসীনতার কারণেই বিসিক শিল্পাঞ্চলের পরিবেশ বিপর্যয়ের মূল কারণ। প্রতিষ্ঠার অর্ধ-শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও সেখানে পরিবেশের ছাড়পত্র নিয়ে এখনো ভাবতে হচ্ছে!

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন