গঙ্গাচড়া (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : তিস্তা নদীর নোহালী খেয়া-ঘাট ইজারা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় ঘাট জবর-দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে সাবেক ইজারাদার রেজাউল ও তার লোকেরা। ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নোহালী ঘাটের চলতি (১৪২৩ সালের) ইজারাদার মফিজুল ইসলাম ও তার লোকেরা জানান, সর্বাধিক দরদাতা হওয়ায় জেলা পরিষদ কর্তৃক সরকারীভাবে ইজারা পেয়ে পহেলা বৈশাখ থেকে তারা ঘাটে খেয়া পারাপার করছে। গত ১৪২২ সালের ইজারাদার রেজাউল ইসলাম চলতি বছরও ইজারা ডাকে অংশ নেন। দর কম হওয়ায় তিনি বঞ্চিত হন। ফলে সাবেক ইজারাদার রেজাউল ইসলাম ও তার লোকেরা আক্রোশে ফেটে পড়ে।
ইজারাদার মফিজুল ইসলাম ও একই এলাকার (চর বাগডহরা গ্রামের) প্রত্যক্ষদর্শী বাবলু মিয়া (৩৬), আশরাফ আলী (৪৮), মিনারুল (২৮), ফেরদৌস (২৭), মওদুল ইসলাম (৩২), আব্দুস সালাম, আব্দুল হান্নানসহ অনেকে জানান, নোহালী ঘাটে তিস্তা নদী ২টি শাখায় বিভক্ত। ফলে ২টি শাখা নদীতেই আলাদা আলাদা খেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে যুগ যুগ ধরে। উত্তরের শাখা নদীটি লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত। ওই শাখা নদীতে খেয়া পারাপার করে আসছিল চর বাগডহরা গ্রামের মতিয়ার রহমানের পুত্র আজিবুল (২১) ও আব্দুল ওয়াহেদের পুত্র আশরাফ আলী (৩২)।
তারা আরো জানান, সাবেক ইজারাদার চর নোহালী গ্রামের মৃত শরিফ উদ্দিনের পুত্র রেজাউল ইসলাম, তার অন্যতম সহযোগী কালীগঞ্জ উপজেলার কাশিরাম গ্রামের আব্দুর রহমানের বিত্তশালী পুত্র খলিলুর রহমান (৪২) কালীগঞ্জ থানা পুলিশের সাথে যোগসাজশ করে। ফলে গত ১১ জুন উত্তরের শাখা নদীতে খেয়া পারাপারের সময় দুপুর ২টার দিকে নৌকা থেকে খেয়া চালক আজিবুলকে (২১) গ্রেফতার করে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। তার খোঁজে কালীগঞ্জ থানায় যাওয়ার সময় একই দিন বিকেল ৪টার দিকে উত্তরের শাখা নদীর অপর খেয়াচালক আশরাফ আলীকেও (৩২) কালীগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ পরদিন তাদের আদালতে প্রেরণ করে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের এএসআই মিজানুর রহমান জানান, কালীগঞ্জ থানার জিডি নং-৩৪১, তারিখ ১১/৬/২০১৪ মোতাবেক কাশিরাম গফুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোপন পরামর্শ করাকালে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫১ ধারায় ওই ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ সুযোগে সাবেক ইজারাদার ঘাট জবর-দখলের প্রকাশ্য হুমকি প্রদান করে। ফলে বর্তমান ইজারাদার মফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে খলিলুর ও রেজাউলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে গত ১৪ জুন গঙ্গাচড়া থানায় একটি জিডি (নং-৫০২) করে।
একদিকে ২ খেয়াচালক গ্রেফতার ও ঘাট জবর-দখলের হুমকি। অপরদিকে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জিডির ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন