(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
প্যা প্যা করে বাঁশি বাজিয়ে হইহই করে আনন্দ করতেন।
দরজায় খটমট শুনে তড়িঘড়ি ওঠে। দরজা খুলতে খুলতে বলে, জ্বি খালুজান।
- সেই কখন থেকে ডাকছি।
- অনেক রাত, ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
- ঘুমাও নি, ঘুপচি মেরে পড়ে ছিলে। ভেবেছ থেমে যাবো। কিছু শুরূ করলে শেষ না করে যে আমি থামি না সেটা কী তুমি জান?
- না।
- আজ জানলে।
- হু।
- তুমি কী জান আমার লাইসেন্স করা বন্দুক আছে।
- হু, নিচে বড়বড় দুটো কুকুর, ডাকাতের মতো একটা দারোয়ান আছে সেটাও জানি।
- আমি তোকে গুলি করে মারব বদমাশ।
ফরিদ সাহেব তুমি থেকে তুই এ চলে এসেছেন। প্রচন্ড উত্তেজিত। লাল চোখ। এদিক ওদিক হলে সত্যি গুলি করে দিতে পারেন।
মিতু খালা টেনশনে ঘুমের ওষুধ খেয়ছেন। বাড়ি ভেঙেচুরে পড়ে গেলেও তার ওঠার কথা না। রিনি এক রূমে তালাবদ্ধ। এই চরম মুহূর্তে নিজেকে একটু বীর প্রমাণ করলে মন্দ হয়না। বুকের ভেতর ধুপধাপ চাপা রেখে বলে, গুলি আর বন্দুক হয়েছে তো মারার জন্য। নিয়ে আসুন আপনার বন্দুক। গুলি করে মেরে ফেলুন।
ফরিদ সাহেব বাঘের মতো গর্জন করে বলেন, দেখ লাস্ট চান্স। তুই এখনি এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাবি। শুধু বাড়ি না এই শহর ছেড়ে চলে যাবি। হেরফের হলে আমি তোকে কুকুরের মতো মারব। আমার লাইসেন্স করা বন্দুকের গুলি খবি।
- এখনি চলে যাব?
- এই মুহুর্তে? গেট আউট।
আর দেরি করা ঠিক হবেনা। বেরিয়ে পড়ে হাসান। রাত আড়াইটার নির্জন রাস্তা। দূরে কোথাও একটা কুকুর ডেকে ওঠে। করূন সুর। হাটতে হাটতে হাসান ভাবে, গ্রীন হাউজ হোক আর রেড হাউজ হোক যে কোন একটা ইফেক্টে ষড়ঋতুর দেশটা তিনঋতুর দেশে পরিনত হতে যাচ্ছে। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত। দক্ষিণ মেরূ থেকে হিমালয় পৃথিবীর জমাট বাধা বরফ যে হারে গলতে শুরূ করেছে, তলিয়ে যাবে বিশ্বের বিরাট এক অংশ। তলিয়ে যাবে মানুষের স্বপ্ন। মিতু খালা আর ফরিদ সাহেবের মতো মানুষের অহংকার সেদিন হাবুডুবু খাবে। বিলীন হবে, তলিয়ে যাবে। নদীর পাড়ে গিয়ে বসতে খুব ইচ্ছা করে হাসানের।কাশফুল হতে ইচ্ছা করে।কাশফুল হলে সারাদিন প্রবাহমান নদীর স্নিগ্ধ বাতাস পরশ বুলিয়ে যেত।নদী তীরে শরতের কাশফুল আছে। কাশফুল বাতাসে নাচে দোলে। কাশফুলের কী দীর্ঘশ্বাস আছে!
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন