পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর সিরিয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবে তুরস্ক। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে তুর্কি গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড। এরদোগান বলেন, আমি আশা করি, পুতিন ও আমি সিরিয়া ইস্যু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। আজ ২২ অক্টোবর পুতিনের সঙ্গে এরদোগানের বৈঠকের কথা রয়েছে।
তুরস্ক কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে চুক্তি বা সমঝোতা করবে না বলে আবারও দৃঢ়তা ব্যক্ত করেন এরদোগান।
তিনি আবারও বলেন, আমরা কখনও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে এক টেবিলে বসব না। এ ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে। এটি আমাদের কাজ নয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কিছু তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় থাকে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুদ্ধের কিছু নীতি থাকে, সেগুলো প্রয়োগ করতে হবে।
উত্তর সিরিয়ায় ৩০ হাজার ট্রাক অস্ত্র ইরান হয়ে সন্ত্রাসী সংগঠনকে পৌঁছানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান।
পশ্চিমাদের উদ্দেশে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, পশ্চিমা মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা আমাদের আক্রমণ করছে। ন্যাটোর দেশগুলো ও ইউরোপিয়ান দেশগুলোও আক্রান্ত হচ্ছে। তা হলে আপনারা কেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন না? তার পরও আপনি কেন তাদের (কুর্দি সন্ত্রাসীদের) পক্ষে অবস্থান নেবেন?
দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও শরণার্থী সমস্যা আমাদের রয়েছে। আমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার পরিবর্তে আমাদের ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংগঠন হিসেবে জাতিসংঘের সংস্কার হওয়া উচিত বলে মনে করেন এরদোগান।
কুর্দিদের সহায়তা করবে ইসরাইল
তুরস্কের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নিতে ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সিরিয়ার কুর্দিরা। সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)-এর মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এ খবর নিশ্চিত করেছে ইসরাইলের শীর্ষস্থানীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরাইল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কুর্দিদের এখন ভরসা-ইসরাইলের ইহুদীরা তাদের অবহেলা করবে না। তারা বলেছে, তুরস্কের সামরিক অভিযানে নারী ও শিশুদেরও প্রাণহানি হচ্ছে।
টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, অস্ত্রবিরতির মার্কিন ঘোষণার পরও সীমান্ তুরস্কের সঙ্গে কুর্দিদের সামান্য লড়াই চলছে।
প্রসঙ্গত, সীমান্ত নিরাপদ, সিরিয়ার অখণ্ডতা ও সিরিয়ান শরণার্থীদের নিরাপদে ফিরিয়ে দিতে চলতি মাসের ৯ অক্টোবর থেকে উত্তর সিরিয়ায় অপারেশন পিস স্প্রিং শুরু করেছে তুর্কি সরকার। উত্তর সিরিয়ার পূর্ব ফোরাত নদী পিকেকে/পিওয়াইডি ও ওয়াইপিজে মুক্ত করতে চায় আঙ্কারা।
৩০ বছর ধরে পিকেকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে তুরস্ক। পিকেকে সংগঠনকে সন্ত্রাসী হিসেবে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তালিকাভুক্ত করেছে। ওই সংগঠনটির হাতে এ পর্যন্ত নারী, কিশোর ও শিশুসহ ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
সীমান্ত শহর থেকে সরে গেছে কুর্দিরা
তুরস্কের সামরিক অভিযানের মুখে উত্তর সিরিয়ায় সীমান্তবর্তী শহর রাস আল আইন শহর ছেড়ে দিয়েছে কুর্দি বিদ্রোহীরা। শহরটি ছেড়ে দেয়ার পর তুর্কি বাহিনী ও এর মিত্রদের কাছে শহরটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তুর্কি-মার্কিন সমঝোতা অনুযায়ী রোববার বিকালে বিদ্রোহীরা শহরটি ত্যাগ করে বলে জানা গেছে।যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী যোদ্ধাদের প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে বলে কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) জানিয়েছে।
কুর্দি বিদ্রোহীদের শহরটি ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি আঙ্কারার পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে।
তুরস্ক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, শনিবার বিকালে ৮৬টি গাড়ির একটি বহর নিয়ে কুর্দি এসডিএফ বিদ্রোহীরা শহরটি ত্যাগ করেছে।তুরস্কের বাহিনীগুলো ও তাদের সমর্থিত সিরীয় বিদ্রোহীরা প্রায় চারদিক থেকে শহরটি ঘিরে রেখেছে।
কুর্দিশ ওয়াইপিজি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরুর দিকেই সীমান্তবর্তী শহর রাস আল আইন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল তুরস্ক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন