ওয়ালটন জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতার প্রথমদিনেই তিনটি নতুন জাতীয় রেকর্ড হয়েছে। প্রতিযোগিতায় দ্রুততম কিশোরের খেতাব জিতেছেন খুলনার সামিউল ইসলাম এবং নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়ে দ্রুততম কিশোরী হয়েছেন বিকেএসপির সোনিয়া আক্তার। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী দিন কিশোরদের হাইজাম্পে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) জুলফিকার নাঈম জিহান। তিনি ১.৯৬ মিটার উচ্চতা অতিক্রম করে রেকর্ড গড়ে স্বর্ণ জেতেন। ২০১৭ সালে ১.৯৫ মিটার উচ্চতায় লাফিয়ে রেকর্ড গড়েছিল একই সংস্থার মাসুদ রানা। কিশোরীদের হাইজাম্পে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়ে সেরা হন বিকেএসপি’র জান্নাতুল। ১.৬৫ মিটার উচ্চতা অতিক্রম করে নিজের গড়া আগের ১.৬১ মিটারের রেকর্ডটি ভেঙ্গে দেন জান্নাতুল। কিশোরীদের ১০০মিটার স্প্রিন্টে নতুন জাতীয় রেকর্ড করেন বিকেএসপির সোনিয়া আক্তার। ১২.১০ সেকেন্ড (হ্যান্ড টাইমিং) সময় নিয়ে প্রথম হয়ে দ্রুততম কিশোরী হন সোনিয়া। ইলেক্ট্রোনিক্স টাইমিংয়ে ১২.৬৬ সেকেন্ড হলেও হ্যান্ড টাইমিংয়ে ছিল ১২.১০। আর হ্যান্ড টাইমিংয়েই নতুন জাতীয় রেকর্ড দেখানো হয়েছে তার নামের পাশে।
২০১৮ সালে একই সংস্থার রুপা খাতুনের গড়া ১২.২০ সেকেন্ডের রেকর্ডটি ভেঙ্গে দেন তিনি। দ্রুততম কিশোরীর খেতাব জেতার পর দারুণ উৎফুল্ল সোনিয়া। তিনি বলেন,‘সাফল্য পেতে কঠোর পরিশ্রম করেছি। স্বর্ণ জেতার ব্যাপারে আতœবশ^াসী ছিলাম। জিতে খুব ভাল লাগছে। এজন্য আমার বিকেএপসিকে ধন্যবাদ জানাবো। তারা আমাকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। আমার সাফল্যের জন্য আমার কোচ নিজাম উদ্দিনের অবদান অনেক। এটাই আমার ক্যারিয়ারের সেরা টাইমিং। ভবিষ্যতে আরও ভাল টাইমিং করতে পারবো বলে আশা করি।’
কৃষক বাবার মেয়ে সোনিয়া। দু’ভাই বোনের মধ্যে সে বড়। ছোট ভাই চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। নওগাঁর এই অ্যাথলেট আরো বলেন, ‘অ্যাথলেট হবো কোনদিনও ভাবিনি। তবে স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ১০০ ও ২০০ মিটার এবং লং জাম্পে অংশ নিয়ে সবসময় প্রথম হতাম। সেই থেকে অ্যাথলেট হওয়ার ভুত মাথায় চাপে। এখনতো দেশের বড় ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষে পড়ছি। আমার আপাতত লক্ষ্য ভবিষ্যতে সিনিয়র জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সফল হতে চাই।’ কিশোর বিভাগের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ১১.৪১ (ইলেক্ট্রনিক্স টাইম) সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্রুততম কিশোরের খেতাব জিতে নেন খুলনার সামিউল ইসলাম। এ নিয়ে তৃতীয়বার জুনিয়র মিটে অংশ নিচ্ছেন তিনি। সেরা হওয়ার পর সামিউল বলেন,‘ ২০১৬ সালে প্রথম জুনিয়র মিটে অংশ নিয়েছিলাম। তখন দল বাঁচানোর জন্য সব ইভেন্টেই অংশ নিতে হয়েছিল! কিন্তু কোন পদক পাইনি। যদি একটিতে খেলতাম, তাহলে ঠিকই কোন না কোন পদক জিততাম।’ বিকেএসপির মতো সুযোগ-সুবিধা পাওয়া অ্যাথলেটদের পেছনে ফেলে প্রথম হয়ে খুবই আনন্দিত সামিউল, ‘যখন হিটেও ওদের হারাই, তখনই আত্মবিশ^াস অনেক বেড়ে গিয়েছিল। বুঝতে পেরেছিলাম ফাইনালেও চেষ্টা করলে ওদের হারাতে পারবো। সেটাই হয়েছে। মজার ব্যাপারÑ আমি আসলে ১০০ মিটারের স্প্রিন্টার নই। আমার মূল ইভেন্ট ৪০০ মিটার।’ তিনি ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক আসর থেকে পদক জিতে দেশের মান বাড়াতে চান।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ওয়ালটন জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, এমপি। এ সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশীদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমীন উদ্দিন, ইউনিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান রানা শফিউল্লাহ, অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সভাপতি এএসএম আলী কবির, সাধারণ সম্পাদত অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টু এবং পৃষ্ঠপোষক ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক এফ এম ইকবাল বিন আনোয়ার ডন উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন