বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

জুবায়ের-রিশাদের দুই রকম দিন

এনামুলের সেঞ্চুরি, তুষারের ফিফটি

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

আগের রাউন্ডে এই দুই লেগ স্পিনারকে নিয়ে দেশের ক্রিকেটে পড়ে গিয়েছিল তুমুল শোরগোল। দলে থাকার পরও তাদের একাদশে না রাখায় দুই কোচকে অব্যহতিও দেয় বিসিবি। এই রাউন্ডে তাই দৃষ্টি ছিল দুজনের দিকেই। দুজনের জন্য ছিল একই রকম পরীক্ষাও। সেই পরীক্ষার প্রথম দিনে সফল রিশাদ হোসেন। জুবায়ের হোসেনের দিন ছিল ভালো-মন্দ মিশিয়ে।

গতকাল জাতীয় লিগের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে কক্সবাজারে পাশাপাশি মাঠে দুই দলের হয়ে খেলছেন দুই লেগ স্পিনার। রংপুর বিভাগের হয়ে রাজশাহীর বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছেন দীর্ঘদেহী লেগ স্পিনার রিশাদ। পাশের মাঠে ঢাকা বিভাগের হয়ে খুলনা বিভাগের বিপক্ষে জুবায়ের ছিলেন খরুচে। তবে দিনের শেষ ভাগে একটি উইকেট তিনি নিতে পেরেছেন।

বিসিবি থেকে নিদের্শনা থাকার পরও আগের রাউন্ডে এই দুই লেগ স্পিনারকে একাদশে না রাখায় বরখাস্ত করা হয়েছিল ঢাকা ও রংপুর বিভাগীয় দলের কোচকে।

১৭ বছর বয়সী রিশাদের এটি তৃতীয় প্রথম শ্রেণির ম্যাচ, জাতীয় লিগে অভিষেক। ২০১৮ সালে বিসিএলের ম্যাচ দিয়ে পা রেখেছিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। বড় দৈর্ঘের ক্রিকেটে আরেকটি ম্যাচ খেলতে এরপর অপেক্ষা করতে হয়েছে আরও প্রায় বছর খানেক। এই মাসের শুরুতে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে খেলেছেন আনঅফিসিয়াল টেস্টে। এই দুই ম্যাচে উইকেট ছিল মাত্র ৩টি।

এই সময়টায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বেশ কিছু ম্যাচ খেলে খুব ভালো করতে পারেননি। কয়েকটি সিরিজে যুব দলের মূল স্কোয়াডেও পাননি জায়গা। সব মিলিয়ে তাকে নিয়ে একটু হতাশা ছিল নির্বাচকদের। শেষ পর্যন্ত রিশাদ দেখাতে পারলেন প্রতিভার ঝিলিক। রাজশাহীর প্রথম ৭ উইকেটের ৫টি-ই নিয়েছেন তিনি। স্বীকৃত যে কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে এটি তার প্রথম ৫ উইকেট। বাকি ৫ উইকেট নিতে রংপুর অধিনায়ক সাজেদুল ইসলাম হাত ঘুরিয়েছেন ৮ বোলারের। রিশাদ বাদে সাফল্য ধরা দিয়েছে কেবল অধিনায়ক (২/১৫) এবং সেহরাওয়ার্দী শুভর (২/৩২) হাতে। আর তাতে কোনো মতে দুইশ’ পেরোয় রাজশাহী (৭১.৪ ওভারে ২০১)। দলের হয়ে ব্যাট হাতে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছেন কেবল অভিজ্ঞ ফরহাদ হোসেন (৬০) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (৩৪)। এদিনও ব্যর্থ সাব্বির রহমানের ব্যাট। জবাবে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা স্বস্তিতে নেই রংপুরও। ১৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে সাজেদুলের দল তুলেছে ৩২ রান। একটি করে উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ও দেলোয়ার। মেহেদী মারুফ ১৯ রানে আছেন অপরাজিত।

পাশের মাঠে খেলা জুবায়েরকে নিয়ে কৌতূহল ছিল আরও বেশি। দেশের ক্রিকেটে একসময় অনেক আশা নিয়ে আসা লেগ স্পিনার নিজেকে হারিয়ে হাপিত্যেশ করছিলেন ম্যাচ খেলার জন্য। অবশেষে ঘরোয়া ক্রিকেটে একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেন ১ বছর পর। শুরুটা ছিল তার বেশ বাজে। দুই স্পেল মিলিয়ে প্রথম ৭ ওভারে রান দিয়েছিলেন ৫৩। পরে অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন। উইকেটও নিয়েছেন একটি। বোল্ড করে দিয়েছেন ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৫ রান করা মোহাম্মদ মিঠুনকে। দিন শেষে তার বোলিং ফিগার ১৩-০-৬৮-১। এনামুল হকের ব্যাটেই হজম করেছিলেন ৫ ছক্কা। পরে এই ওপেনার তুলে নিয়েছেন প্রথম শ্রেণীতে নিজের ১৯তম সেঞ্চুরি। আহত অবসরে যাওয়ার আগে করেন ২০৫ বলে ৯টি চার ও ৫ ছক্কায় ১১২ রান।
রান পেয়েছেন তুষার ইমরানও। ক্যারিয়ারের ৬০তম ফিফটি তুলে ৫৫ রানে আউট হন ঘরোয়া ক্রিকেটে দেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রথম দিন শেষে খুলনার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৯০ রান। ৩০ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, ৪ রানে আব্দুর রাজ্জাক।

অন্যদিকে, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে দ্বিতীয় স্তরে বরিশাল-ঢাকা মেট্রো ও চট্টগ্রাম-সিলেট ম্যাচে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (৩য় রাউন্ড ১ম দিন শেষে)
খুলনা-ঢাকা, কক্সবাজার-২
খুলনা ১ম ইনিংস : ৯১ ওভারে ২৯০/৬ (রবি ১০, এনামুল ১১২ আহত অবসর, তুষার ৫৫, মিঠুন ৪৫, জিয়াউর ২৭, মিরাজ ৩০*, রাজ্জাক ৪*; সুমন ২/৪১, সাকিল ১/৩৪, জুবায়ের ১/৬৮, তাইবুর ২/৪০)।
রাজশাহী-রংপুর, কক্সবাজার-১
রাজশাহী ১ম ইনিংস : ৭১.৪ ওভারে ২০১ (মিজানুর ২৪, শান্ত ৩৪, ফরহাদ ৬০, সানজামুল ১০, মুক্তার ১৬; সাজেদুল ২/১৫, রিশাদ ৫/৫০, সোহরাওয়ার্দী ২/৩৭)। রংপুর ১ম ইনিংস : ১৬ ওভারে ৩২/২ (মারুফ ১৯ ব্যাটিং, মাহমুদুল ২, সোহরাওয়ার্দী ১, নাঈম ৬ ব্যাটিং; দেলোয়ার ১/১৪, তাইজুল ১/৬)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন