স্পোর্টস ডেস্ক : দিন যতই গড়াচ্ছে ততই যেন শানিত হচ্ছে ইউরোর ফেভারিট দলগুলো। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন স্পেনের কথাই ধরুন। প্রস্তুতি ম্যাচে ফিফা র্যাংকিয়ের ১৩৭ নং দলের কাছে হারের পর আসরের প্রথম ম্যাচে চেক রিপাবলিকের বিপক্ষে তারা জিতেছিল পিকের করা শেষ সময়ের গোলে। এর পরের ম্যাচে তারা আরো শানিত। এদিন ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিল তুরস্ককে। ফ্রান্সের নিসে জোড়া গোল করেন আলভারো মোরাতা, অন্য গোলটি নোলিতোর। এবারের আসরে প্রথম দল হিসেবে দু’য়ের অধিক গোল করল স্পেন। হ্যাটট্রিক শিরোপার লক্ষ্যে টানা দুই জয়ে আসরের শেষ ষোলয় পৌঁছে গেল তারা।
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাও দিলেন একই সুর, “টুর্নামেন্ট যত এগিয়ে যাবে, আমাদের ততই পরিণত হতে হবে এবং ভুলগুলো শুধরে নিতে হবে। যেটা আমরা আজ (তুরস্কের বিপক্ষে) করেছি।” প্রতিপক্ষ হিসেবে তুরস্ক সহজ কোন দল নয়। তারপরও পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল স্প্যানিশদের হাতে। আর্তুরো তুরানদের লক্ষ্যে কোন শটই নিতে দেয়নি পিকে-রামোসরা। অন্যদিকে তুর্কি গোলমুখে নেয়া ৬টি শটের ৩টিই গোলে পরিণত করেন মোরাতা-নোলিতোরা। “আমরা কঠিন প্রতিপক্ষ পেয়েছিলাম কিন্তু বলের ওপর আমাদের অনেক নিয়ন্ত্রণ ছিল এবং আমারা ভালো থেকে আরো ভালো করছিলাম। আমি খেলোয়াড় ও সমর্থকদের দশের মধ্যে দশই দেব” বলেন ইনিয়েস্তা। আসলেই পরশু রাতে সুন্দর ফুটবলের পড়শা সাজিয়েছিল স্প্যানিশরা।
আরো ভালোভাবে বললে দিনটি ছিল আলভারো মোরাতার। ২০১৪ সালে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে জুভেন্টাসে পড়ি দেয়ার পর জাতীয় দলের খেলা দেখেছেন টিভিতে। আবারো দলে ফিরতে পেরে নিজেকে স্বপ্নের ঘোরে আবিষ্কার করছেন এই স্ট্রাইকার, “স্পেনের খেলা আগে আমি টিভিতে দেখে অভ্যস্ত ছিলাম। আমি এখন এখানে। এটা আমার জন্য একটা স্বপ্ন।”
‘ডি’ গ্রæপ থেকে শেষ ষোলয় তাদের সঙ্গী হতে পারত ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে নাটকীয় ম্যাচে ৭৪ মিনিট পর্যন্ত দুই গোলে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ড্র করেছে তারা। রাকিতিস-মড্রিচদের নক-আউট পর্বই এখন পড়ে গেছে শঙ্কায়। শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ স্পেন। সেখানে তারা হারলে আর তুরস্ককে শেষ ম্যাচে চেকরা হারাতে পারলে বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে ক্রোয়েশিয়ার।
অথচ সেন্ট ইতিয়েনে প্রথমার্ধে বলার মত তেমন কোন আক্রমণই করতে পারেনি চেকরা। ম্যাচের ৩৭তম মিনিটে ইভান পেরিসিসের দুর্দান্ত গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধের ১৪ মিনিটে চেক রক্ষণের ভুলে দ্বিতীয় গোলটি করেন ইভার রাকিটিচ। এরপর রিয়ালের ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার লুকা মড্রিচকে মাঠ থেকে তুলে নেওয়াটাই ছিল সবচেয়ে বড় ভুল। ৭৫তম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় মিলান স্কোদার দারুণ হেডে চেকদের হয়ে ব্যবধান কমান। ক্রোয়েশিয়ানরাও যেন এরপর খেই হারালো। রাগে ক্ষোভে ৮৬তম মিনিটে ক্রোয়েশিয়ান দর্শকরা মাঠে ফ্লেয়ার নিক্ষেপ করে। এসময় খেলাও বন্ধ ছিল কিছুসময়। নির্ধারীত সময়ের মাত্র এক মিনিট আগে পেনাল্টি পেয়ে যায় চেকরা। তা থেকে দলকে সমতায় ফেরান টমাস নেসিদ। ম্যাচের অধিকাংশ সময় চেকদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েও শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হয় ক্রোয়েশিয়ানদের।
মাঠে ফ্লেয়ার ছোড়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ক্রোয়েশিয়া ফুটবল ফেডারেশন। এক বিবৃতিতে সিএফএফ জানায়, “ছোট একটা গ্রæপ ক্রোয়েশিয়ান সমর্থক ও দলের উল্লাস কেড়ে নিয়েছে। তারা সুন্দর ফুটবলকে কলুষিত করেছে।” ক্রোয়েশিয়া ফুটবল দলের ম্যানেজার এই ঘটনার সাথে জড়ীতদের ‘ক্রীড়া সন্ত্রাসী’ বলে অভিহিত করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন