শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

বেল আর ওয়েলসের ইতিহাস

প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৫ পিএম, ২১ জুন, ২০১৬

স্পোর্টস ডেস্ক : ওয়েন রুনি, দেলে আলী, রেইম স্টার্লিং, ড্যানি রোজ, কাইল ওয়ালকার এবং হ্যারি কেইনÑ ওয়েলস ম্যাচের এদের কেউই ছিলেন না গতকাল একাদশে। এর মাশুলও দিতে হলো রয় সজসনকে। স্লোভাকিয়ার সাথে গোলশূন্য ড্র করেছে ইংল্যান্ড।  একই সময়ে গ্রুপের অপর ম্যাচে রাশিয়াকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নক-আউট পর্বে নাম লিখিয়েছে প্রথমবারের মতো আসরে সুযোগ পাওয়া ওয়েলস। ইংল্যান্ডকে সেখানে যেতে হলো গ্রুপ রানার্স-আপ হয়ে।
তুলুজের মাঠে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল ওয়েলস। ১১তম মিনিটে আর্সেনাল মিডফিল্ডার অ্যারোন রামসির গোলে এগিয়ে যাওয়ার ৯ মিনিটের মাথায় দুইবারের প্রচেষ্টায় ওয়েলসের হয়ে প্রথম গোল করেন নেইল টেইলর। এরপর রাশিয়া কিছুটা গা-ঝাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিল, বেশি সময় বলের দখলও রেখেছিল তারা। কিন্তু গোলমুখে এসেই খেই হারাচ্ছিল তারা। উল্টো বেল-রামসিদের মুহুর্মুহু ঝটিকা আক্রমণে কাঁপুনি ধরছিল রুশ রক্ষণে। দ্বিতীয়ার্ধে তেমনি এক আক্রমণে রামসির বাড়ানো বল থেকে ব্যবধান বাড়ান ওয়েলসের প্রাণভোমরা গ্যারেথ বেল। এ নিয়ে গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই গোল পেলেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। ওয়েলসের হয়ে বড় কোনো আসরে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডও এটি। এছাড়া ২০০৪ সালের পর এই প্রথম ইউরোর গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই কেউ গোল পেলেন। বেল-রামসিদের সামনে গোলরক্ষক ইগর আকিনফিভ অতিদানবীয় কিছু সেভ না দিলে আরো বড় লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হত রাশানদের।
প্রথমবার খেলতে এসেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়াটা আসলেই বিশেষ কিছু। ওয়েলস দলের সাথে বেলের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকলেও আসলে তারা খেলছে দল হিসেবে। খেলাটাও যেন তারা উপভোগ করছে বেশ। ঠিক এমন মন্ত্রই মনে হলো শিষ্যদের কানে জপে দিয়েছেন  কোচ ক্রিস কোলিম্যান, “আমি এবং আমার কোচিং স্টাফরা এখানে আসতে পেরেই গর্বিত। আমাদের কোনো ভয় নেই। আর এমন খেলার পর ভয় থাকবেই বা কেন?”
আসরে রাশিয়ার পারফর্মেন্স ভাবনায় ফেলে দিয়েছে ফুটবল বোদ্ধাদের। আসছে আসরের বিশ্বকাপের স্বাগতিক দলের অবস্থা যদি এই হয় তাহলে বিশ্বকাপও কিছুটা রঙ হারাবে বৈকি। অথচ ২০০৮ সালের ইউরোর সেমি-ফাইনালে উঠে একটা বার্তাই দিয়ে রেখেছিল তারা। কিন্তু পরের দুই আসরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয়ায় নতুন করে ভাবার সময় এসেছে রুশ ফুটবলে। তাদের কোচ লিওনিদ স্লাতস্কিও এমনটিই মনে করেন, “এটাই আমাদের সেরা দল। দেশের সেরা ২৩ ফুটবলারকে নিয়েই আমরা ইউরোতে এসেছিলাম। ফলের অবস্থা যদি এই হয়, তাহলে বুঝতে হবে রাশিয়ান ফুটবল ঠিক পথে নেই।”
স্লোভাকিয়ার সাথে বেলদের গ্রুপ সঙ্গী ইংল্যান্ডকে নিয়েও কানাঘুসো হচ্ছে বেশ। হজসন ছয়জন খেলোয়াড়কে বিশ্রামে দিয়েছিলেন নাকি অধিনায়ক রুনির সাথে আলোচনা করেই। সে যতই বিশ্রামে দিন না কেন, এর আগে যারা মূল পর্বে খেলারই সুযোগ পায়নি তেমন একটা দলের সাথে গোলশূন্য ড্র করা তো ব্যর্থতারই শামিল। বলের দখল রেখে ইংলিশরা একের পর এক আক্রমণ করে গেছে ঠিকই কিন্তু কোনো আক্রমণই যে সফলতার মুখ দেখেনি। যে কয়েকবার সুযোগ তৈরি হয়েছিল ঠিক সেই সময়ই যেন স্লোভাকিচ গোল-রক্ষক মাতুশ কোজাচিকও তুলে দেন প্রতিরোধের শক্ত দেয়াল। সহজ কিছু গোল মিসও করেন ভার্ডি-লালনারা। এমনকি দ্বিতীয়ার্ধে যদি ইংলিশরা গোল খেয়েও যেত তাতে আশ্চর্যের কিছু ছিল না। সেক্ষেত্রে ‘থ্রি লায়ন্স’দের হটিয়ে পরের রাউন্ডে চলে যেত স্লোভাকিয়া। স্লোভাকিয়ার অবশ্য এখনো সুযোগ আছে পরের রাউন্ডে উঠার। পয়েন্ট তালিকার তিনে থাকলেও ৪ পয়েন্ট তাদের ঝুলিতে, ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ৫, ৬ পয়েন্ট ওয়েলসের। গ্রুপ পর্ব থেকে ছয়টি করে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স-আপ দলের সাথে সেরা তৃতীয় স্থানধারী চারটি দল সুযোগ পাবে শেষ ষোলয়।
নবীন একটা দলের বিপক্ষে এমন হতাশাজনক ফলকে অবশ্য কাঠগড়ায় নিতে নারাজ হজসন। তার মতÑ ‘আমরা কোনো ভুল করিনি।’ পরের রাউন্ডে যে কোনো দলের মুখোমুখি হতেও ভয় পান না বলেও জানান ৬৮ বছর বয়সী কোচ, “আমরা যেভাবে খেলছি তাতে করে কোনো দলকেই আমরা তোয়াক্কা করি না।”

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন