শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

৩ আসর পর আবাহনীর শিরোপা পুনরুদ্ধার

প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শামীম চৌধুরী
সব সমীকরণে এগিয়ে ছিল আবাহনী। সেই সমীকরণ মিলিয়ে নিয়ে শেষ ম্যাচে বড় জয় উদযাপন করল আবাহনী। সাকলায়েন সজীবের বলে শুভাগতহোম এলবিডাব্লুর শিকারে পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেলফি উৎসবে মেতে উঠেছে আবাহনী। তবে প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে ১১৫ রানের বিশাল জয়ের পরও শিরোপা নিষ্পত্তি না হওয়ায় ল্যাপ অব অনার দিতে পারেনি আবাহনী। শিরোপা উৎসবে অপেক্ষায় রেখেছে গত ১২ জুন বিকেএসপিতে আবাহনী-দোলেশ্বরের অমীমাংসিত ম্যাচের রায়।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সারাক্ষণ আবাহনীকে প্রেরণা দিয়ে দলের জয় দেখার পরও সমর্থকদের পর্যন্ত করতে হয়েছে অপেক্ষা। গত ১৯ জুন বিসিবি’র সভায় ৪ সদস্যের যে কমিটির তথ্য উদঘাটনের ওপর ঝুলেছে গত ১২ জুন বিকেএসপিতে আবাহনী-দোলেশ্বরের ম্যাচটি, আম্পায়ারদের অপারগতায় ম্যাচটি দোলেশ্বরের ইনিংসের ১৭তম ওভারে স্থগিত হয়ে যাওয়ার রিপোর্টটি গতকাল সকালে হাতে পেয়েও তা প্রকাশে অপেক্ষা করতে হয়েছে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। সংবাদ সম্মেলনে সেই অপেক্ষার অবসান হলো। ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি বিসিবি সভাপতির বেঁধে দেয়া ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সকল পক্ষের শুনানি শেষে যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে ওই দিন প্রাইম দোলেশ্বরের ইনিংস ২০ ওভার সম্পন্ন না হওয়ায় ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণার প্রস্তাবনা দিয়েছেন ওই কমিটি। তবে মিডিয়ার বিতর্ক এড়াতে ওই ম্যাচটি পুনরায় আগামীকাল অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েও শেষ পর্যন্ত তদন্ত কমিটির প্রস্তাবনার সপক্ষে রায় দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। এবং এই রায়টি জানতে মিডিয়াকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ই-মেইলে বিসিবি’র মিডিয়া রিলিজ পর্যন্ত। অপেক্ষা করতে হয়েছে রাত ৮ টা পর্যন্ত। স্থগিত ম্যাচে ২ দল ১ পয়েন্ট করে পাওয়ায় রূপগঞ্জের বিপক্ষে প্রাইম দোলেশ্বরের জয়েও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি আবাহনীর শিরোপা। তিন মৌসুম পর প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে আবাহনী।
আবাহনীর শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে জ্বলে উঠেছে তামীম ইকবালের ব্যাট। বিকেএসপিতে প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ার গাজী সোহেলের সঙ্গে অসদাচরণে অভিযুক্ত তামীম এদিন লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দশম সেঞ্চুরি উদযাপন করেছেন। তার ১৩২ বলে ১৪০ রানের ইনিংসে (১১ চার ৪ ছক্কা) এবং মোসাদ্দেককে (৭৪ বলে ৩ চার ৫ ছক্কা) সঙ্গে নিয়ে ৪র্থ জুটিতে ১৭৩ রানে প্রাইম ব্যাংককে রান পাহাড়ে চাপা (৩১৬/৭) দিয়েই বড় জয়ের স্বপ্ন দেখেছে আবাহনী। শেষ ৬০ বলে তামীম, মোসাদ্দেক, রাজুর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১১৭ রান যোগ করে বড় জয়ের আভাস দিয়েছে আবাহনী। বড় পুঁজি পাওয়া দলটির অবশিষ্ট দায়িত্বটা পালন করেছেন বাঁ হাতি স্পিনার সাকলায়েন সজীব। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে নিজের সেরা বোলিং এবং লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা পাওয়া প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে সেরা বোলিংয়ে (৭/৫৮) প্রাইম ব্যাংককে ২০১ এ থামিয়ে ৭৮ বল হাতে রেখেই স্বস্তির জয়ে ট্রফি পুনরুদ্ধার করেছে আবাহনী।
প্লেয়ার্স ড্রাফটে দল গঠনে কাগজে-কলমে সেরা আবাহনী, এই প্রথম একসঙ্গে সাকিব-তামীমমে পেয়েছে তারা। বিদেশী রিক্রুটেও প্রথম থেকেই পর্যায়ক্রমে সেরা ক্রিকেটার পেয়েছে আবাহনী। তারপরও প্রথম ৭ ম্যাচে মাত্র ৩ জয়ে সুপার লীগের স্বপ্ন ধুসর হওয়া আবাহনী টানা ৮ জয়ে করেছে অসাধ্য সাধন। বিকেএসপিতে রেকর্ড ৮টি ম্যাচ খেলে হোম ভেন্যু বানিয়ে, পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের অপবাদের জবাবটা দিয়েছে আবাহনী লীগের শেষ প্রান্তে এসে। মোহামেডান, ভিক্টোরিয়া, প্রাইম ব্যাংককে বড় ব্যবধানে হারিয়ে। প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে উৎসবের রঙ এবার আকাশী নীলদের। আষাড়ে পরিষ্কার স্বচ্ছ আকাশের মতোই বিস্ময় পারফরমেন্সে তামীমদের হাতেই উঠল ট্রফি। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্লাব ক্রিকেটে প্রথম ট্রফি আবাহনীর, ২০১০-১১’র পর তিন মৌসুম ট্রফিহীন কাটিয়ে ১৮তম ট্রফির মালিক এখন আবাহনী। সর্বশেষ ট্রফি জয়ে কারিগর ছিলেন খালেদ মেহমুদ সুজন। ট্রফি পুনরুদ্ধারের কারিগরও সেই কোচ।
আবাহনী-প্রাইম ব্যাংক
আবাহনী : ৩১৬/৭ (৫০.০ ওভারে), তামীম ১৪২, লিটন ০, শান্ত ১৭, দিনেশ কার্তিক ২৫, মোসাদ্দেক ৭৮, সাকিব ১২, আবুল হাসান রাজু ২৬, রুবেল ২/৬৯, নাজমুল ২/৪৮, উন্মুক্ত চাঁদ ৩/৫৯। প্রাইম ব্যাংক : ২০১/১০ (৩৭.২ ওভারে), মেহেদী মারুফ ৬৯, উন্মুক্ত চাঁদ ২৩, সোহান ৯, রুম্মান ১২, শুভাগতহোম ৫১, তাসকিন ২/৪৫, সাকলায়েন সজীব ৭/৫৮। ফল : আবাহনী ১১৫ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : তামীম (আবাহনী)। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ ২০১৬ আসরের সেরা ১০

    ম্যাচ    রান    সর্বোচ্চ    গড়    স্ট্রাইক    ১০০/৫০
রকিবুল হাসান (দোলেশ্বর)    ১৬    ৭১৯    ১০০    ৬৫.৩৬    ৭২.৩৩    ১/৫
তামীম ইকবাল (আবাহনী)    ১৬    ৭১৪    ১৪২    ৪৭.৬০    ৯০.৭২    ২/৪
আব্দুল মজিদ (ভিক্টোরিয়া)    ১৬    ৭০৬    ১১৮    ৪৪.১২    ৮৪.৬৫    ২/৫
আল-আমিন (ভিক্টোরিয়া)    ১৬    ৬৭২    ১০২    ৪৮.০০    ৮৮.০৭    ১/৭
মুমিনুল হক (ভিক্টেরিয়া)    ১৬    ৬৭১    ১০৪    ৪১.৯৩    ৯৫.৯৯    ১/৭
মোসাদ্দেক হোসেন (আবাহনী)    ১৬    ৬২২    ৭৮    ৭৭.৭৫    ১০৪.৮৯    ০/৫
আসিফ আহমেদ (রূপগঞ্জ)    ১৫    ৬২০    ৮২    ৬২.০০    ৭৫.০৬    ০/৭
মুশফিকুর রহিম (মোহামেডান)    ১৬    ৫৯৬    ১০৪    ৪৫.৮৪    ৮০.৯৭    ১/৫
মোহাম্মদ মিঠুন (রূপগঞ্জ)    ১৪    ৫৯০    ৯০    ৪২.১৪    ৭৫.২৫    ০/৭
ইমতিয়াজ হোসেন (দোলেশ্বর)    ১৬    ৫৮৩    ১০০*    ৩৮.৮৬    ৭৭.০১    ২/৩


    ম্যাচ    উই.    সেরা    গড়    ইকো.    স্ট্রাইক    ৪/৫
ডি সিলভা (ভিক্টোরিয়া)    ১৪    ৩০    ৬/৩৫    ১৮.৯০    ৪.৪৭    ২৩.৯    ১/৩
কামরুল ইসলাম (ভিক্টোরিয়া)    ১৬    ২৭    ৪/৩৮    ২৭.৯০    ৫.৪৮    ৩০.৫    ২/০
সাকলাইন সজীব (আবাহনী)    ১৬    ২৬    ৭/৫৮    ২০.৫৭    ৪.৫৬    ২৭.০    ০/১
তাসকিন আহমেদ (আবাহনী)    ১৫    ২৬    ৪/৩২    ২১.০৭    ৪.৭৮    ২৬.৪    ১/০
আল-আমিন হোসেন (দোলেশ্বর)    ১৬    ২৫    ৩/২৯    ২৩.০০    ৪.৬৩    ২৯.৭    ০/০
মাশরাফি মোর্তুজা (কলাবাগান কেসি)    ১১    ২২    ৬/৪২    ২০.২২    ৪.৮৩    ২৫.০    ১/১
এনামুল জুনি. (মোহামেডান)    ১৫    ২২    ৪/২৬    ২৮.৭৭    ৫.১৩    ৩৩.৫    ১/০
মাহমুদুল্লাহ (শেখ জামাল)    ১১    ২১    ৫/৬৬    ১৯.০৪    ৫.৩৮    ২১.২    ০/১
নাঈম ইসলাম (মোহামেডান)    ১২    ২০    ৪/২১    ২২.৫৫    ৫.০৪    ২৬.৮    ৩/০
তাইজুল ইসলাম (রূপগঞ্জ)    ১৫    ২০    ৩/২৯    ২৭.৭০    ৪.৭৩    ৩৫.১    ০/০

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন