অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ বাংলাদেশ ফুড অ্যান্ড জুস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফায়জুর রহমান বলেছেন, এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে বাড়তি ট্যারিফ মূল্য চালু হলে পথে বসবে ১৩০টি প্রতিষ্ঠান। আর ভোক্তাদের ২৫০ টাকার ১ কেজি জুস কিনতে হবে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়।
গতকাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আমদানি করা জুসসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের ওপর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আরোপিত ট্যারিক ভ্যালু বৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ ফুড অ্যান্ড জুস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। মোহাম্মদ ফায়জুর রহমান বলেন, বিশ্বায়ন ও বিশ্ব বাণিজ্যে সমতা আনতে বর্তমান সরকার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। যার প্রতিফলন বিগত বাজেট পরিকল্পনায় ছিল। কিন্তু ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটের বিশেষ কিছু সিদ্ধান্তে শুধু বাংলাদেশের জনগণের মান উন্নয়নে বিরূপ প্রতিক্রিয়াই ঘটেনি, বরং বিশ্ব বাণিজ্যের সমতা আনয়নে প্রতিবন্ধক হিসেবে গণ্য হয়েছে। যা দেশের মানুষকে হতাশ করেছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের ভোক্তা আইনে সেনসেটিভ পণ্যগুলোকে বাদ দিয়ে সমতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে তার প্রতিফলন ঘটেনি। এ ক্ষেত্রে সরকার ডবিউটিও-এর চুক্তির শর্ত পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক ভোক্তা আইন এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকারও বাধাগ্রস্ত হবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জুসের দাম তুলে ধরে ফায়জুর রহমান বলেন, ১ কেজি জুস ভারতে ১২০ রুপি, মালয়েশিয়ায় ৪ রিঙ্গিত বা বাংলাদেশি ১০০ টাকা, সিঙ্গাপুরে ২ সিঙ্গাপুরি ডলার বা বাংলাদেশি ১২০ টাকা, দুবাইয়ে ৫ দিরহাম বা বাংলাদেশি ১০০ টাকা এবং সৌদি আরবে একজন ভোক্তা ৫ রিয়াল বা ১০০ টাকায় জুস কিনতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১ কেজি জুস ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিশ্বের কোথাও ১ কেজি জুসের দাম ২ দশমিক ৫০ ডলার ও শুল্ক ৯৫ শতাংশ নেই।
তিনি বলেন, বাজেটে খাদ্য ও জুসের ওপর বাড়তি ট্যারিফের বোঝা চাপালে সুষম খাদ্য বিতরণ এবং বণ্টন ব্যাহত হবে। খাঁটি খাদ্যের পরিবর্তে ভেজাল খাদ্যের বিকাশ ঘটবে। যার ফলে জটিল রোগের বিস্তার হবে। একই সঙ্গে দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের পথ সুগম হবে, যার আনুমানিক পরিমাণ হাজার হাজার কোটি টাকা।
তিনি আরও বলেন, বাড়তি ট্যারিফের কারণে পর্যটনশিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। পণ্যের গুণগত মানের ক্রমাবনতি হবে। মানহীন পণ্যে বাজার সয়লাব হবে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারের অবসান হবে। এতে দেশে খাদ্য ও জুসের সঙ্গে জড়িত ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের অকাল মৃত্যু ঘটবে। সমূলে ধ্বংস হবে আমদানির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ২০০০ ব্যবসায়ী এবং এর সঙ্গে জড়িত ১ লাখ পরিবার। সাধরণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় সরকারের রাজস্ব আয়ও কমে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেনÑসংগঠনের যুগ্ম-আহ্বায়ক এস এ শেখ সাদি, সদস্য সচিব মোহাম্মদ জগলুল হায়দার পুলক, সদস্য মোহাম্মদ মারুফ হাসান, খায়রুল বাসার, মোহাম্মদ এনামুল কবির এনাম প্রমুখ।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ বাজেটে করের আওতা বাড়ানোর পাশাপশি করারোপের নতুন ক্ষেত্র নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে দাবি জানায় সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা গত অর্থবছরের চেয়ে ২৩ ভাগ বেশি, যা বর্তমান জিডিপির ১২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এজন্য করারোপের নতুন ক্ষেত্র নির্ধারণ করতে হবে। আর রাজস্ব আহরণের আওতা না বাড়ানো গেলে এ লক্ষ্য অর্জন বেশ কষ্টসাধ্য হবে। এতে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের বৃহৎ এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সম্ভাবনাময় উৎসগুলোকে চিহ্নিত করার সুনির্দিষ্ট কোনো দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি। পাশাপাশি ভ্যাট হতে ৭৪,০০০ কোটি টাকা আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা সাধারণ করদাতাসহ ভোক্তা শ্রেণির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে। এছাড়াও এ বাজেটে শুধুমাত্র আয়কর হতে ৭৩,০০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় এবং অনুন্নয়ন ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা সীমিত রাজস্ব আদায়ের কারণে অর্জিত হয়নি, যা সাধারণ করদাতাদের উপর অতিরিক্ত বোঝা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করে ডিসিসিআই।
ঢাকা চেম্বার মনে করে, প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ মেটানোর জন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদের যথাযথ ব্যবহার, এনবিআরের রাজস্ব আহরণ এবং এনবিআরবহির্ভূত রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনাকে পুনঃবিন্যাস করার পাশাপাশি যুগোপযোগী করার পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
বেনাপোলে ১৭ লাখ টাকার ভারতীয় টর্চ লাইট ও ফেসিয়াল মাক্স আটক
বেনাপোল অফিস ঃ যশোর ২৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা এলাকায় আমড়াখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে বুধবার সকালে ১৭ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকার ভারতীয় টর্চ লাইট ও ফেসিয়াল মাক্স আটক করে।
২৬ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ভারত থেকে আনা বিপুল পরিমাণ চোরাচালানী পণ্য বেনাপোল দিয়ে ঢাকায় যাচ্ছে এ ধরনের সংবাদ পেয়ে বিজিবি সদস্যরা বন্দর থানার আমড়াখালী চেকপোষ্ট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৭ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকার ভারতীয় টর্চ লাইট ও ফেসিয়াল মাক্স আটক করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন