আজ সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এরই মধ্যে সম্মেলনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে প্রস্তুত হয়েছে সম্মেলন মঞ্চও। ত্রি-বার্ষিক এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা হিসেব নিকেশ। চলছে জোর আলোচনা।
নতুন নেতৃত্বে কারা আসতে পারে এ নিয়ে শোনা যাচ্ছে নানা কথা। পুরনোদের পাশাপাশি নতুন অনেক নামও আলোচিত হচ্ছে। দুই কমিটির শীর্ষ দুটি করে মোট ৪ পদের জন্য অন্তত এক ডজন নেতা দৌড়ঝাঁপ করছেন। শহরজুড়ে বিলবোর্ড, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে তারা প্রার্থীতার জানান দিচ্ছেন। পদ প্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে আছেন বিতর্কিত অনেকেও।
এদিকে, সম্মেলন যত ঘনিয়ে আসছে ততই আলোচিত হচ্ছেন পুরনো নেতারা। পুরনোরাই আবার নেতৃত্বে থাকছেন কী না এ আলোচনা চলছে জোরেশোরেই। তবে পদপ্রত্যাশী সকলেই বলছেন, সবকিছুই নির্ভর করছে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। শেষ পর্যন্ত ভোট নয়, সমঝোতার মাধ্যমেই কমিটি হবে বলে জানিয়েছেন তারা। শুধু পদ প্রত্যাশী নেতারাই নয়, তাদের অনুসারীদের মাঝেও একটাই প্রশ্ন আগামী দিনগুলোতে কে হচ্ছেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কা-ারি? নিজের পছন্দের কেউ হলেই তো নেতা হওয়ার পথ সুপ্রসন্ন। ফলে এখানেও উৎকণ্ঠা। শীর্ষ পদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদটি। আব্দুজ জহুর চৌধুরী সুফিয়ান মারা যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লুৎফুর রহমান। দলের কার্যক্রমে ততটা সক্রিয় নন বলে অভিযোগ রয়েছে এই বয়োবৃদ্ধ নেতার বিরুদ্ধে। তিনি এবারও সভাপতি পদে প্রার্থী হবেন বলে মনে করছেন অনেকে। তার সাম্প্রতিক কর্মকা- বলছে, তিনি ভারমুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালনের আশা করছেন। প্রবীণ লুৎফুর রহমানের ওপর দলীয় প্রধান ভরসা রাখলে সভাপতি পদের জন্য আলোচিত বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীকে আবারও দেখা যেতে পারে সাধারণ সম্পাদক পদে। এই পদে তিনি বেশ সফল বলেই মনে করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। সার্বক্ষণিক রাজনীতিবিদ হিসেবে খ্যাতি আছে শফিকের।
এমপিরা পদে আসতে পারবেন না এমন একটি ঘোষণা থাকায় সভাপতি পদে আলোচিত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ ও মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপির শীর্ষ পদে আসার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করেন দলটির নেতারা। তবে দলের হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ইমরান আহমদ চৌধুরীর শেষমুহূর্তে জোরেশোরে প্রচারণায় নামাও ভাবিয়ে তুলেছে তাদের। আরেক সহ-সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদও এবার সভাপতি পদে প্রার্থী। তবে মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ছোটভাই আসাদ উদ্দিনের কারণে এবারও বঞ্চিত থাকতে হতে পারে তাকে।
মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই পদেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম দেখছেন অনেকে। গত সিটি নির্বাচনে ব্যর্থতার দায় থাকলেও কামরান-আসাদকেই আবারো দেখা যেতে পারে নেতৃত্বে। তবে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে আগামীতে কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্ব দেয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। সেটি সত্যি হলে এই পদে নতুন কেউ আসতে পারেন। এছাড়াও আলোচনায় আছেন সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মফুর আলী, অ্যাডভোকেট রাজ উদ্দিন আহমদ ও মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালিক এবং যুগ্ম সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ার।
সম্মেলন আনন্দময় এবং উৎসবমুখর করে তুলতে নানা আয়োজন করা হয়েছে। এ জন্য ৬টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদারকি করছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন কামরান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী। সবার প্রচেষ্টায় একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর সম্মেলনের আশা ব্যক্ত করেন এ দুই নেতা।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক জগলু চৌধুরী বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ চলছে। তবে পদ পদবী পাওয়া নিয়েও নেতা ও সমর্থকদের মাঝে টানটান উত্তেজনা আর উৎকণ্ঠায় পার হচ্ছে সময়। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, নেতাকর্মীদের আশা সম্মেলনের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াবে সিলেট আওয়ামী লীগ। গতিশীল হবে দলীয় কার্যক্রম। কমিটিতে স্থান পাবেন ত্যাগী ও যোগ্য নেতারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন