রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি এখনও। তাকে ভবন থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে কি-না, আর সেটা হলে কোন ভবন থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন কি-না, এসব বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, রুম্পাকে ভবন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এ ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা তদন্ত না করে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়।
সূত্র জানায়, দুই বাড়ির মাঝ থেকে লাশ উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত হয়। চিকিৎসকদের ধারণা, ধর্ষণের পর রুম্পাকে ছাদ থেকে ফেলে দেয়া হয়। রুম্পা স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। তার বাবা পুলিশ পরিদর্শক রোকন উদ্দিন। তাদের বাড়ী ময়মনসিংহ হলেও থাকতেন মালিবাগের শান্তিবাগে। এদিকে, ময়মনসিংহের বাড়িতে গতকাল শুক্রবার সকালে তার নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।
এর আগে গত বুধবার ৪ ডিসেম্বর রাত পৌনে ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরীর ৬৪/৪ নম্বর বাসার নিচে ওই ছাত্রীর লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। যে জায়গায় এ ঘটনা, তার আশপাশে বেশকিছু ছেলে ও মেয়েদের হোস্টেল রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ঘটনার পরপরই আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা হত্যার আলামত সংগ্রহ করেন।
ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ওপর থেকে পড়েই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হতে তার মৃতদেহ থেকে হাইভেজেনাল সপসহ ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়েছে। তা পরীক্ষানাগারে পাঠানো হবে। সেই রিপোর্ট এলে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তবে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।
রমনা থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, নিহতের বাবার নাম রোকন উদ্দিন। তিনি হবিগঞ্জ জেলায় পুলিশ ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত। ঘটনাস্থলের পাশে তিনটি ভবন আছে। এগুলোর যেকোনো একটা থেকে পড়ে রুম্পা মারা গেছেন। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, মামলা তদন্তাধীন। ইনজুরিগুলো পেয়েছি, সেগুলো দেখে মনে হচ্ছে উঁচু কোনো জায়গা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। তার শরীর থেকে আলামত সংগ্রহ করে ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহত রুম্পার চাচা বলেন, টিউশনি শেষ করে বাসায় এসে টাকা-পয়সা, মোবাইল সব রেখেই বের হয় রুম্পা। পায়ে হিল ছিল সেটাও খুলে স্লিপার পরেই বের হয়েছে। আমরা এখনও নিশ্চিত না কি কারনে এবং কেন এ ধরনের হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটলো। কিভাবে সে ওখানে গেল। আমরা পুরো বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি। পুলিশ তদন্ত করছে।
স্টামফোর্ড ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় সহপাঠীদের বিক্ষোভ
শারমিনের মৃত্যুর ঘটনায় সহপাঠীরা সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। রাজধানীতে বেইলি রোডে শারমিনের সহপাঠীরা এ ঘটনায় মানববন্ধন করে। পরে বেইলি রোড থেকে মিছিল নিয়ে সিদ্ধেশ্বরীতে যায়। সহপাঠীর স্লোগান দিয়ে দোষীদের শাস্তি দাবি করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন