বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা : নিজবাড়িতে বসে শাড়ি, থ্রি-পিছে পাথর, চুমকি, জরিসহ বিভিন্ন ডিজাইন তৈরি করে সুচি শিল্পের কারিগররা। ঈদকে সামনে রেখে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার প্রায় ৩০ জন শিল্পী দিনে-রাতে সমান তালে কাজ করে যাচ্ছে। এ কাজের জন্য অনেক পরিবারে এসেছে স্বচ্ছলতা। তবে পুঁজির অভাবে লাভবান ও বিস্তার ঘটছে না।
২০১৩ সালে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া বাজারে একটি ঘর ভাড়া করে সুচি শিল্পের কাজ শুরু করেন, চরফরিদপুর গ্রামের জাহিদ হোসেন। এখন তার সহযোগিতায় অন্তত ৩০টি পরিবার সুচি শিল্পের আয়ে সংসার চলছে। গতকাল রোববার কথা হয় এ অঞ্চলে কাজের উদ্যোক্তা জাহিদ শেখের সাথে।
জাহিদ শেখ জানান, তিনি দীর্ঘদিন ঢাকার মীরপুর, কামরাঙ্গিরচর এলাকায় সুচি শিল্পের কাজ করতেন। তার মাথায় আসা এ কাজ যদি এলাকায় করা যায় তাহলে বেকার সমস্যার সমাধান হবে।
প্রথম ২০১৩ সালে তেঁতুলিয়া বাজারে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে ঢাকাতে কাজ করা কয়েকজন এলাকার যুবককে নিয়ে আসেন। কাজের শুরুতেই ভালো লাভ হওয়ার কারণে তিনি বেছে নেন এলাকার গৃহবধূ ও শিক্ষার্থীদেরকে। বর্তমানে তেঁতুলিয়া বাজারে তার ঘরেই ৯জন শ্রমিক চুক্তিভিত্তিক কাজ করে। এছাড়াও তেঁতুলিয়া, কোঠুরাকান্দি, চরফরিদপুরসহ আশপাশের গ্রামের ৩০-৩৫ জন গৃহবধূ ও শিক্ষার্থীরা বাড়ির কাজের ফাঁকে ও লেখাপড়ার সুযোগে এ সুচির কাজ করে বাড়তি আয় করছে।
তবে চাহিদা অনুযায়ী কাঁচামাল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। পুঁজির অভাবে চাহিদা থাকলেও সরবরাহ করতে পারছে না। ঢাকার গাউছিয়া ও নিউ মার্কেট থেকে যে অর্ডার আনা হয় তা দিয়েই লোকজন চালানো হয়। প্রতিটি পিছে ৫শ’ টাকা থেকে শুরু করে ৫হাজার টাকা পর্যন্ত অর্ডার হয়। অল্প পুজির কারণে শ্রমিকদের বেতন আর কাঁচামাল সরবরাহ করা দুষ্কর হয়ে পড়ে।
সরকারি ভাবে যদি সুদ মুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করে তাহলে এ শিল্পের বিস্তার ঘটানো সম্ভব হবে।
মিলন শেখ জানান, সে ঢাকাতে ৭-৮ বছর এ সুচির কাজ করেছে। এলাকায় এ কাজ করা সম্ভব হওয়ায় বাড়িতে এসে কাজ করছে। তারা ৫০ থেকে ১০০ টাকা পিছ হিসাবে কাজ করে। প্রতিদিন ৪-৫টি কাজ করা হয়। তাতে ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকা আয় হয়। পাশাপাশি অনেক বেকার যুবকদেরও এ কাজে উৎসাহিত করে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। বহরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র রাব্বি শেখ জানায়, সে স্কুল বন্ধ থাকার সুযোগে সুচির কাজ করছে। এতে তার যা আয় হয় তাতে তার পড়ালেখার খরচ চলে যায়। তার মতো অনেক ছেলে মেয়েরা এ কাজ করে বাড়তি আয় করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন