শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

লিবিয়ায় প্রয়োজনে সামরিক বাহিনী পাঠাবে তুরস্ক : এরদোগান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১১:২০ এএম | আপডেট : ১২:৪৮ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯

প্রয়োজনে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত লিবিয়ার সরকারকে সামরিক সহায়তা বাড়িয়ে দেবে এবং স্থল, বিমান ও নৌসামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে চাহিদাকে বিবেচনা করবে। গত মাসে তুরস্ক ও লিবিয়ার মধ্যে সামরিক সহযোগিতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরে গত রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান এসব কথা বলেন।

জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞদের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১১ সাল থেকে ক্ষমতা নিয়ে চলা লড়াইয়ে ফয়েজ-আল-সাররাজের নেতৃত্বাধীন গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ড (জিএনএ)-কে সমর্থন করে তুরস্ক।

ইতোমধ্যে জাতিসঙ্ঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার পরেও জিএনএকে সামরিক সহায়তা ও উপকরণ সরবরাহ করছে তুরস্ক। দেশটি আরও বলেছে, জিএনএ অনুরোধ জানালে লিবিয়ায় সেনা মোতায়েন করতে পারে তারা। লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে খলিফা হাফতার বাহিনীর সাথে এক মাস ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে জিএনএ। হাফতার বাহিনী রাশিয়া, মিসর, জর্দান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থন পেয়েছে।

উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কোকেলিতে দেয়া বক্তব্যে এরদোগান বলেন, তুরস্ক সম্প্রতি জিএনএকে ‘অত্যন্ত মূল্যবান’ সহায়তা দিয়েছে। লিবিয়া এমন একটি দেশ যে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষাকে সমর্থনের পাশাপাশি শান্তি স্থিতিশীলতা রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারকেও সমর্থন করবে তুরস্ক।

এরদোগান বলেন, ‘হাফতারকে সমর্থনকারী দেশগুলো অবৈধ যুদ্ধবাজকে সমর্থন করছেন। জাতিসঙ্ঘ-অনুমোদিত ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সরকারের পরিবর্তে কিছু দেশ হাফতারকে সমর্থন করছে। প্রয়োজনে আমরা লিবিয়ায় আমাদের সমর্থনের সামরিক দিক বাড়িয়ে দেব এবং ভূমি, আকাশ এবং সমুদ্র থেকে আমাদের সব বিকল্পের মূল্যায়ন করব।’

এরদোগান বক্তৃতা দেয়ার আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হলুসি আকার বক্তব্যে বলেছিলেন, দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত তুরস্ক লিবিয়ার সরকারের পাশে থাকবে।

গত মাসে তুরস্ক ও জিএনএ সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং সমুদ্রসীমা নিয়ে একটি পৃথক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা গ্রিসকে ক্ষুব্ধ করেছে। বিভক্ত দ্বীপ সাইপ্রাসের উপকূলে হাইড্রোকার্বন সংস্থান নিয়ে আঙ্কারা ও অ্যাথেন্সের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।

যদিও গ্রিস বলেছে যে এই চুক্তি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে, তুরস্ক এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে যে এর উদ্দেশ্য পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তার অধিকার সংরক্ষণ করা। গত রোববার এরদোগান বলেন, তুরস্ক লিবিয়ার সাথে চুক্তি থেকে ‘একেবারে’ মুখ ফিরিয়ে নেবে না।

তিনি বলেন, আমাদেরকে বাদ দিতে, আমাদের নিজস্ব তীরে আমাদেরকে ফাঁদে আটকাতে বা আমাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ চুরি করার চেষ্টায় আমাদের কাছে কারো আসা উচিত নয়। বিনা কারণে কারো সাথে বিরোধ শুরু করা, বা তাদের অধিকার হরণ করার কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই।

যারা আমাদের বিরোধিতা করছেন তাদের মানবাধিকার, আইন, ন্যায়বিচার, নৈতিকতা বা করুণার কোনো বোধ নেই। গ্রিস, ইসরাইল ও মিসরের কথা উদ্দেশ করে এরদোগান এ কথা বলেন, যারা সমুদ্র চুক্তির বিরোধিতা করেছে।

রোববার গ্রিক দৈনিক টো ভিমার সাথে একটি সাক্ষাৎকারে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মওলুদ কাভুসোগলু বলেছেন, লিবিয়ার সাথে এই চুক্তি আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তুরস্ক ও লিবিয়ার নির্ধারিত অঞ্চলে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের লাইসেন্স দেয়ার বিষয়ে বিবেচনা করবে আঙ্কারা। এই অঞ্চলটিতে আমাদের মহাদেশীয় বালুচরের মধ্যে আমাদের সার্বভৌম অধিকারের অনুশীলন হবে। ভূগর্ভস্থ ও সাগরের প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে আমাদের সার্বভৌম এলাকায় গবেষণা জাহাজ মোতায়েনের অধিকারও আমাদের রয়েছে।

এই চুক্তির বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রতিক্রিয়া হিসেবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক প্রবীণ কর্মকর্তা বলেছেন যে, সমুদ্র চুক্তিটিই ছিল ‘অকার্যকর’ এবং ‘উসকানিমূলক’।

এ দিকে তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াদ ওকতাই বলেছেন, লিবিয়ার জাতীয় ঐকমত্যের সরকার চাইলে দেশটিতে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে আঙ্কারা।

তিনি আরও বলেছেন, লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বৈধ সরকারের বিরুদ্ধে জেনারেল খলিফা হাফতারের সশস্ত্র হামলা প্রতিহত করার লক্ষ্যে সে দেশে সেনা পাঠাতে চায় তুরস্ক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন