মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা ঃ ঈদের বাজারকে সামনে রেখে রাত-দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন মাদারীপুরের বাটিক শিল্প কারখানার শ্রমিকরা। তবে নরসিংদীতে কেমিকেল দিয়ে রং পাকানো হওয়ায় এখানকার বাটিক কারখানায় পোশাকে লবণ সোডা দিয়ে পাকানো বাটিক সামগ্রী কিছুটা মার খাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ। তবে ক্রেতাদের পরীক্ষান্তে এ বাটিক কারখানার পোশাকের চাহিদা ঢাকার নামিদামি শো-রুমগুলোতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বছরের অন্য সময়গুলোতে এক প্রকার বিরামই কাটাতে হয় এসব শ্রমিকদের। এদের মধ্যে ৯৫% নারী শ্রমিক। মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নাধীন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক ঘেঁষে মাদারীপুর গণউন্নয়ন প্রচেষ্টা নামের একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)-এর উদ্যোগে গড়ে ওঠে গ্রামীণ জীবনযাত্রার চিত্র নিয়ে এ বাটিক শিল্প। দেশ ও বিদেশ খ্যাতনামা বাটিক শিল্পের কদরে সারা বছরে ভাটা থাকলে বিভিন্ন উৎসব পার্বণে এ চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণ।
এ ব্যাপারে সেলিনা আকতার নামে এক নারী বাটিক শ্রমিকের সাথে কথা হয় গণউন্নয়ন প্রচেষ্টাসংলগ্ন কারখানায়। তিনি জানান, “স্বামীর সংসারে যখন আর্থিক অনটনের বাসা বাঁধে তখন গণউন্নয়ন প্রচেষ্টা কর্মকর্তা, এলাকার বাটিক শিল্প বিশেষজ্ঞ খায়রুল মর্তুজা মজুমদার এর আহ্বানে যোগ দেই” তার বাটিক শিল্পকারখানা গণউন্নয়ন প্রজেক্ট (গাপ) বাটিক শিল্প কারখানায়। কারখানা কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে ছেলেমেয়েদের পরিধেয় বস্ত্র বাটিকের ফরমেট-এ ছাপা করি। সাংসারিক কাজের পাশাপাশি এ কাজ করে কিছু বাড়তি আয় করতে পাড়ায় সাংসারিক অভাব-অনটন কিছুটা লাঘব হচ্ছে। তবে সরকারিভাবে এর যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা হলে এ শিল্পের কদর দেশ-বিদেশে বাড়বে। দিন দিন চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়া বাটিক শিল্পের শ্রমিকরা দিন-রাত পরিশ্রম করলেও তাদের মজুরি নিয়ে রয়েছে নিজেদের মধ্যে অসন্তোষ।
নারী বাটিক শ্রমিক সেলিনা আক্তারের সাথে কথা বলার পর আশপাশে ঘুরে দেখা গেলো এবারের ঈদের বাজারকে সামনে রেখে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বাটিক কারখানায় এখন চলছে পোশাক তৈরির ব্যস্ত সময়। নিখুঁতভাবে তৈরি করছে আঁকাবাঁকা নয়নাভিরাম চিত্রকর্ম। এখানকার বাটিক কারখানার শ্রমিকরা রাত-দিন পোশাক তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
অপরদিকে রাজৈরের হস্তশিল্প কারখানা গণউন্নয়ন প্রজেক্ট (গাপ) বাটিক শিল্প কারখানা’র সমন্বয়কারী খায়রুল মুর্তজা মজুমদার বললেন, রাজৈরের অধিকাংশ বাটিক শিল্প কারখানার তৈরি পোশাকের রং কেমিকেল ছাড়াই পাকানো হয়। ফলে এতে তাদের খরচ একটু বেশি পড়লেও দিন দিন এই হস্তশিল্প পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। আড়ং, জাগরণী চক্র, নাগরদোলা, সোর্সসহ দেশের বড় বড় শোরুমগুলোতে এখানকার তৈরি পোশাক সরবরাহ করা হয়। ঈদের বাজারে তাদের এখন কাজের প্রচুর চাপ রয়েছে। তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, নরসিংদীতে বাটিক কাপড়ে কেমিকেল দিয়ে পাকানো হয় বলে মাদারীপুরের বাটিক শিল্প সামগ্রীতে লবণ সোডা দিয়ে রং পাকানোর কারণে প্রতিযোগিতামূলকভাবে মাদারীপুর কিছুটা মার খাচ্ছে। তার মতে, রাজৈরের হস্তশিল্প পোশাক কারখানা বাটিক’র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মালিক, শ্রমিকদের প্রত্যাশা শুধু ঈদের মৌসুমেই নয় সারা বছরই এই হস্তশিল্প পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। দেশের মানুষ সারা বছরই এই পোশাক কিনে ব্যবহার করবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন