শামীম চৌধুরী : ২০১৬-১৭ ক্রিকেট মওশুমকে বিশেষ টার্গেট করেছে বিসিবি। আগে-ভাগে পরবর্তী ক্রিকেট মওশুমের ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচি চূড়ান্ত করে সেই সূচি বাস্তবায়নে একটু আগে থেকেই নেমেছে বিসিবি। এমনটা হয়নি কখনো এর আগে। ২০১৫ সালের মার্চের পর ঘুরে-ফিরে বাংলাদেশ দল খেলেছে ক্রিকেট উপমহাদেশের কন্ডিশনে, এই লম্বা সময়ে খেলেনি কোন ক্রিকেট ম্যাচ উপমহাদেশের বাইরে, বাউন্সি কন্ডিশনে। দ্বি-পাক্ষিক সফর বিনিময় চুক্তিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অতীতে দু’বারের একবারও নেই বলার মতো পারফরমেন্স। উপমহাদেশের দলগুলোর নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে ভাল করার অতীতও তেমন একটা নেই। সে কারণেই পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে এ বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে পূর্ণাঙ্গ সিরিজে অবতীর্ণ হওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে বিসিবি। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরের পর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি-২০তে খেলবে ক্রিকেটাররা। এটাকে নিউজিল্যান্ড সফরের আদর্শ প্রস্তুতি বলে মনে করছে না বিসিবি। সে কারণেই, হেড কোচ হাতুরুসিংহের প্রস্তাবনায় নিউজিল্যান্ড সফরের যাত্রাপথে বিরতিতে অস্ট্রেলিয়ায় ১০ দিনের ক্যাম্প করতে চায় বিসিবি! এডিনবার্গে আইসিসি সভা যোগ দেয়ার প্রাক্কালে এ তথ্যই দিয়েছেন বিসিবি সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন।
২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের বিস্ময়কর পারফরমেন্স, ইংল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পাওয়ার মূলে ছিল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ব্রিসবেনের সেন্টার অব এক্সিলেন্সে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন ক্যাম্প। এবং সেখানে ক’টি অনুশীলন ম্যাচে খেলার সুযোগ। নিউজিল্যন্ড সফরকে সামনে রেখে ওই অতীতটাই আবার সামনে এসেছে বিসিবি। বিপিএল শেষ করে তাই বাংলাদেশ দলের মূল অনুশীলন ক্যাম্পটা ঢাকায় নয়, অস্ট্রেলিয়ায় আয়োজনের চেষ্টা করছে বিসিবি। নিউজিল্যান্ড সফরকে সামনে রেখে প্রায় একই ধরনের কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার পাশাপাশি পেস-বাউন্সি উইকেটে খেলার অনুশীলনটাও করে ফেলতে এই আইডিয়া বিসিবি’র। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ব্রিসবেনের অনুশীলন ক্যাম্প খরচার পুরোটাই বহন করেছে বিসিবি। ঠিক একই ভাবে নিউজিল্যান্ড সফরের প্রাক প্রস্তুতিতে নিজেদের খরচায় অস্ট্রেলিয়ায় অনুশীলন ক্যাম্প করতে চায় বিসিবি। অনুশীলন ভেন্যু এখনো হয়নি ঠিক। তবে অনুশীলন ভেন্যুতে প্র্যাকটিসের পাশাপাশি ওয়ার্ম আপ ম্যাচ খেলার বিষয়টিকে দিচ্ছে বিসিবি গুরুত্ব। এ তথ্যও দিয়েছেন বিসিবি’র সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজনÑ‘নিউজিল্যান্ড যাত্রা পথে অস্ট্রেলিয়ায় ১০ দিনের অনুশীলন করতে পারলে ক্রিকেটারদের জন্য সুবিধা হবে। আমরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এখনো অস্ট্রেলিয়ার কোথায় অনুশীলন ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হবে, তা ঠিক হয়নি। ব্রিসবেন না পেলে সিডনী তো আছে। দেখা যাক। তবে যেখানেই অনুশীলন সুবিধা পাই না কেন, চেষ্টা করবো সেখানে যেনো অনুশীলন ম্যাচ খেলার সুযোগ থাকে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কথা বলে তা ঠিক করতে চাইছি।’
অস্ট্রেলিয়ায় অনুশীলন ক্যাম্প ব্যয়বহুল। আবাসন খরচার পাশাপাশি ভেন্যু, জিমও মাঠ ভাড়া, আভ্যন্তরীণ যাতায়ত খরচা, সব বিসিবিকে করতে হবে বহন। সে কারণেই ১০ দিনে সীমাবদ্ধ থাকতে চাইছে বিসিবি অস্ট্রেলিয়া সফরে। চাইলেও তাই সেখানে স্থানীয় দলের সঙ্গে লংগার ভার্সন ম্যাচ খেলা সম্ভব নয়। সে বাস্তবতা মেনে স্থানীয় ক্রিকেট দলসমূহের সঙ্গে একাধিক সংক্ষিপ্ত পরিসরের ম্যাচ খেলার চেষ্টা চালাচ্ছে বিসিবি। এমন খবরই দিয়েছেন বিসিবি সিইওÑ ‘দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে ভাল হতো। কিন্তু অনুশীনের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় যাত্রা বিরতি যেহেতু মাত্র ১০ দিনের, তাই লংগার ভার্সন ম্যাচ নয়, আমরা চাইছি একাধিক ৫০ ওভারের ম্যাচ আয়োজনে। তাহলেই উপকৃত হবে ক্রিকেট দল।’
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সবুজ ঘাসের উইকেটে টেস্ট খেলাটাই বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশ দলের। অথচ, হোমে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর শেষে মুশফিক, তামীম, সাকিবরা যে নিউজিল্যান্ড সফরের আগে দীর্ঘপরিসরের কোন ম্যাচই খেলার সুযোগ পাচ্ছে না। কারণ, ইংল্যান্ড সফরের পর পর শেষ হয়ে যাবে জাতীয় লীগ। বিসিএল তো মাঠে গড়াবে নিউজিল্যান্ড সফর চলাকালে, জানুয়ারিতে! নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়েলিনটন এবং ক্রাইশ্চার্চের টেস্টের প্রস্তুতি তাহলে গণ্য হচ্ছে আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে হোমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সফরের শেষ ২টি টেস্ট ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন