বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

আন্তর্জাতিক ফুটবলকে মেসির গুডবাই

প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কোপা আমেরিকার ফাইনালে আবারো চিলির কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে আর্জেন্টিনার। নির্ধারিত আর অতিরিক্ত সময়ে গোলশূন্য থাকার পর টাইব্রেকারে মেসির দল হারে ৪-২। টাইব্রেকারে নিজেদের প্রথম শটেই গোল করতে ব্যর্থ হন বার্সেলোনার তারকা ফরোয়ার্ড মেসি। ম্যাচ শেষে এই হতাশার কারণেই আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের কথা জানান ৫ বারের বিশ্বসেরা।

ম্যাচ শেষে মেসি বলেন, “এটা কঠিন, এখন বিশ্লেষণের সময় নয়। ড্রেসিং রুমে আমার মনে হলো, জাতীয় দলে আমার খেলা শেষ। এটা আমার জন্য না। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারাটা কষ্টের।”

ভগ্নকন্ঠে ২৯ বছর বয়সী বলেন, “আমি আর্জেন্টিনার হয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে জোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু এটা হয়নি। আমি এটা করতে পারিনি।”

তিনি বলেন, “এটা অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত; কিন্তু এটা নেওয়া হয়ে গেছে। আমি আর চেষ্টা করবো না। ফিরে যাওয়া আর হবে না।”

২০১৪ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে হারের পর গত বছরের কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিলির কাছে টাইব্রেকারে হার। টানা তৃতীয় ফাইনালেও ফল ওই একই। এছাড়া ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ২০০৭ সালে ব্রাজিলের কাছে কোপা আমেরিকার ফাইনালেও পরাজিত দলে ছিলেন মেসি।

সব স্মৃতি রোমন্থন করে ফুটবল জাদুকর বলেন, “চারটা ফাইনাল হলো, এটা আমার জন্য না। আমরা চেষ্টা করেছি, আমি চেষ্টা করেছি। আমি এখন বড় ক্লান্ত। এখন আমি শুধু এটাই অনুভব করছি। আবার এটা ঘটলো (ফাইনালে হার) দেখে আমি খুবই ব্যথিত।” তিনি বলেন, “আমি আমার পেনাল্টি মিস করেছি। ওটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”

সেই ১৯৯৩ সালে এই কোপা আমেরিকাতেই শেষ বার বড় কোনো টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর্জেন্টিনা। এর পর থেকে কেবল অপেক্ষায় দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। দেশকে শিরোপা জেতানোর চাপও বাড়ছিল অধিনায়কের উপর। পদত্যাগের ঘোষণা না দিলে হয়তো টাইব্রেকারে গোল না পাওয়ার প্রবল সমালোচনা থেকে রেহাই পেতেন না মেসি।

আবেগপ্লুত মেসি বলেন, “আমি মনে করি, এটা সবার জন্যই উত্তম প্রথমত আমার জন্য, তারপর সবার জন্য। আমি মনে করি, অনেক মানুষ যারা সন্তুষ্ট নয় এটাই চেয়েছিল। আমরাও ফাইনালে পৌঁছে জিততে না পারায় সন্তুষ্ট নই।”

২০০৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়ার পর ২৯ বছর বয়সী মেসি ১১২টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। সেমি-ফাইনালে দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে যুক্তরাষ্ট্রের জালে বল পাঠিয়ে গাব্রিয়েল বাতিস্তুতার রেকর্ড ভেঙে করেছেন দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৫টি গোল। কিন্তু বার্সেলোনার হয়ে ২৮টি শিরোপা জেতা মেসির আজন্ম আক্ষেপ জাতীয় দলের হয়ে শিরোপা না পাওয়াটা।

নিজেদের পেনাল্টি শটের প্রথমটি নিতে এসই ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন মেসে। পরে চিলি গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দেন লুকাস বিগলিয়ার শটও। আর্জেন্টিনাকে হারতে হয় আরেকটি ফাইনাল। ব্যর্থতার দায় নিয়েই তাই এল অবসরের ঘোষনা।

স্বতীর্থ ও বন্ধু সার্জিও আগুয়েরোর বলেন, মেসিকে নাকি এমন বেঙ্গে পড়তে দেখেননি কখোনো। ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড বলেন,
“দুর্ভাগ্যবশত, পেনাল্টি মিস করার জন্য সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়েছে মেসি। ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে তাকে এর চেয়ে বাজে অবস্থায় আমি আর দেখিনি।”
দলের আরেক সদস্য ও গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো মনে করেন হতাশা থেকেই মেসির এই সিদ্ধান্ত। ম্যানচেস্টার গোলরক্ষক বলেন, “আমি মনে করি, লিও আবেগময় হয়ে এটা বলেছে। কারণ, ভালো একটি সুযোগ ফসকে যেতে দিয়েছি আমরা। আমাদের মতো একই ভাবনা তার।”

তিনি যোগ করেন, “আমি মেসিকে ছাড়া জাতীয় দল কল্পনাই করতে পারছি না।”

এদিকে মেসির পর অবসর গুঞ্জন মোনা যাচ্ছে হাভিয়ের মাচেরানোকে নিয়েও।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন