রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

বিরোধিতা করাই যেন ভারতের অভ্যেস!

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

ভবিষ্যৎ স‚চির পরের চক্রে ২০২৩ সাল থেকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে চার দিনের টেস্ট বাধ্যতাম‚লকভাবে চালু করার কথা ভাবছে আইসিসি। কিন্তু এই ভাবনায় সায় নেই বিরাট কোহলির। পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেটের পাঁড় ভক্ত ভারতীয় অধিনায়কের আশঙ্কা, ক্রিকেটের বিশুদ্ধতম সংস্করণ নিয়ে এভাবে পরিকল্পনাহীনভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হলে হিতে বিপরীত হতে পারে এবং উল্টো নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

আইসিসির ভবিষ্যৎ স‚চির বর্তমান চক্র শেষ হবে আগামী ২০২৩ সালে। পরের চক্র চলবে ২০২৩ থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত। ওই চক্রেই চার দিনের টেস্ট ম্যাচ বাধ্যতাম‚লক করতে চায় আইসিসি। এ বিষয়ে অবশ্য এখনও কোনো চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড (সিএ) জানিয়েছে, তারা এরই মধ্যে ধারণাটি নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে শুরু করেছে। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডও (ইসিবি) চার দিনের টেস্টের ব্যাপারে ইতিবাচক। আর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এখনও নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেনি। এসবের মধ্যেই সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান কোহলি জানিয়েছেন নিজের মতামত।

আসামের গৌহাটিতে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হচ্ছে আজ। তার আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে কোহলি বলেছেন, ‘আমি এই পরিকল্পনার পক্ষে নই। আমি মনে করি, উদ্দেশ্য যা-ই হোক না কেন, তা ঠিক নয়। কারণ, এরপর তিন দিনের টেস্ট চালু করা নিয়ে কথা শুরু হবে। আমি যা বলতে চাইছি তা হলো, এর শেষ কোথায়? এরপর কথা উঠবে টেস্ট ক্রিকেট বিলুপ্ত করে দেওয়ার ব্যাপারে। আমি কোনোভাবেই একে সমর্থন দিতে পারি না।’

আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর ব্যাটসম্যান কোহলি যোগ করেছেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে যেভাবে টেস্ট ক্রিকেট শুরু হয়েছিল (সময়বিহীন) এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বর্তমানে পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচই সর্বোচ্চ দিনের টেস্ট; এসব বিবেচনায় নিলে আমি মনে করি, ক্রিকেটের শুদ্ধতম সংস্করণের সঙ্গে এটা অন্যায় করা হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই পাল্টানো উচিত না।’

২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে গোলাপি বলে চার দিনের টেস্ট খেলেছিল। তখন থেকেই আইসিসি এ ব্যাপারে ইতিবাচক বার্তা দিয়ে আসছে। গেল বছরের জুলাইতে ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড চার দিনের ম্যাচ খেলেছে। আগামী গ্রীষ্মে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চার দিনের টেস্ট খেলবে অস্ট্রেলিয়াও। ইতিহাসে চার দিনের টেস্টের আরও অনেক নজির আছে। তবে কোনোটাই বাধ্যতাম‚লক ছিল না।

শুধু চার দিনের টেস্টই নয়, আইসিসির যে কোনো নতুন ইভেন্টেরই যেন বিরোধীতা করাটা নিয়মে পরিষত হয়েছে ভারতের। ২০১৮ সালে ইংল্যান্ডের ১০০ বলের টুর্নামেন্ট নিয়েও উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন কোহলি। সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান মনে করেন, ক্রিকেটে সর্বোচ্চ যে পরিবর্তন হতে পারে সেটা কেবল দিবারাত্রির টেস্টকে ঘিরে। এরপর শুরুতে দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলতেও অনীহা ছিল ভারতের। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে গোলাপি বলে ম্যাচ খেলার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল তারা। গত বছর প্রথমবারের মতো দিন-রাতের টেস্ট খেলে দলটি, কলকাতায় বাংলাদেশের বিপক্ষে। গত নভেম্বরের এই ম্যাচ ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল দর্শকদের মধ্যে। ভারত অধিনায়ক মনে করেন, টেস্ট ক্রিকেটের বাণিজ্যিকীকরণের পথে দিবা-রাত্রির টেস্ট একটি ধাপ হতে পারে। তবে এটা নিয়েও খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিপক্ষে তিনি।

তবে চার দিনের টেস্ট নিয়ে আইসিসির ভাবনার বিরোধিতা এটাই প্রথম নয়। অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক টিম পেইন আগেই জানিয়েছিলেন দ্বিমত। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, টেস্ট ম্যাচ চার দিনে নেমে এলে অ্যাশেজে উত্তেজনাপ‚র্ণ খেলা আর দেখতে পাওয়া যাবে না। আর জয়-পরাজয়ও নির্ধারিত হবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন