মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের এলিট ফোর্স কুদস বাহিনীর প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি হত্যার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোগান। তিনি বলেন, সোলাইমানিকে হত্যা করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চরম ভুল হয়েছে। এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নগ্ন হস্তক্ষেপ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হবে। যেকোনো পরিস্থিতিতেই আঙ্কারা তেহরানের পাশে রয়েছে বলে রুহানীকে আশ্বস্ত করেন এরদোগান। রোববার তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানীর সঙ্গে ফোনালাপে জেনারেল সোলাইমানির মৃত্যুতে ব্যক্তিগতভাবে মর্মাহত হওয়ার কথা জানিয়ে শোক প্রকাশ করেন। সউদী সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইরানি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাপকালে জেনারেল সোলাইমানির মৃত্যুকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট ‘শাহাদাত’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শহীদ সোলাইমানির মৃত্যুতে আমি ব্যথা অনুভব করছি, একইসঙ্গে ইরানের জনগণ, প্রধান ধর্মীয় নেতা এবং প্রেসিডেন্টের ক্ষোভ ও শোক অনুমান করছি। সোলাইমানির আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা নিয়েও ইরানি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন এরদোগান। তিনি বলেন, ইরাকে অনুষ্ঠিত জেনারেল সোলাইমানির জানাজার দৃশ্য আমি দেখেছি, অসংখ্য জনস্রোত ইরাকেও তার অধিক জনপ্রিয়তার সাক্ষ্য দেয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। আল-আরাবিয়া আরবি এ খবর জানিয়েছে। পার্লামেন্টে অনুমোদন পাওয়ার পর লিবিয়ায় সেনা মোতায়েন শুরু করেছে তুরস্ক। প্রেসিডেন্ট রজব তায়্যিপ এরদোগান বলেছেন, তার সেনাদের কাজ হবে ত্রিপোলিতে জাতিসংঘ সমর্থিত গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ড (জিএনএ)কে সহায়তা করে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। তবে এ নিয়ে সতর্কতা উচ্চারণ করেছে ইসরাইল, গ্রিস ও সাইপ্রাস। তারা তুরস্কের এমন উদ্যোগকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি এক বিপজ্জনক হুমকি বলে আখ্যায়িত করেছে এবং সতর্ক করেছে এই বলে যে, এর মাধ্যমে জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। জেনারেল খলিফা হাফতারের অধীনে যুদ্ধ করছে বিদ্রোহীরা। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে লিবিয়ার জিএনএ সরকার। জেনারেল হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছে মিশর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। অন্যদিকে জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে তুরস্ক ও তার মিত্র কাতার। হাফতারের বিদ্রোহী বাহিনী রাজধানী ত্রিপোলি দখলের চেষ্টা করছে। শনিবার একটি সামরিক একাডেমিতে বিমান হামলার জন্য তাদেরকে দায়ী করা হয়। ওই হামলায় নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০ জন। তবে বিদ্রোহীরা এ হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। লিবিয়ায় সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, তাদের দায়িত্ব হবে সমন্বয় করা। সেখানে অপারেশন সেন্টারের উন্নয়ন করবে তারা। আমাদের সেনা লিবিয়া যাওয়া শুরু করেছে। তিনি আরো বলেন, যুদ্ধ করার উদ্দেশ্য নেই তুরস্কের। তবে তারা সেখানে বৈধ সরকারকে সমর্থন দেবে এবং মানবিক ট্রাজেডি এড়ানোর চেষ্টা করবে। ওদিকে কূটনৈতিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, লিবিয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আজ সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক বসছে। এর আগে তুরস্ক পার্লামেন্টের এমপিরা গত বৃহস্পতিবার লিবিয়ায় সেনা মোতায়েনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ৩২৫টি। বিপক্ষে ১৮৪টি। এরদোগান জানিয়েছেন, তার কাছে সামরিক সহায়তা চাওয়া হয়েছে ত্রিপোলি থেকে। তবে কি মাত্রায় বা কি পরিমাণে সামরিক উপস্থিতি থাকবে লিবিয়ায় সে বিষয়ে তুরস্ক সরকার বিস্তারিত জানায় নি। আল-আরাবিয়া, বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন