শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

‘সুপার’ চ্যাম্পিয়ন রিয়াল

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনাল। হতে পারত বার্সেলোনা আর রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে আগুনঝরা এক এল ক্লাসিকো। সেটা হয়নি। নতুন নিয়মের ফেরে পড়ে ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত রূপ নেয় মাদ্রিদ ডার্বিতে। অ্যাটলেটিকো আর রিয়ালের ফাইনাল নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ে গোল না হওয়ায় ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত হয় পেনাল্টি শুট আউট নামক ভাগ্যের সুতায়। সেখানে রিয়ালের পক্ষেই কথা বলল ভাগ্য। আর তাতেই টাইব্রেকার ভাগ্যে দিয়াগো সিয়িনের দলকে ৪-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতেছে জিনেদিন জিদানের দল। এই নিয়ে কোচ হিসেবে ৯ম শিরোপা নিজের ঝুলিতে পুড়লেন ফ্রান্স কিংবদন্তি।

‘গোল করব না’ এমন প্রতিজ্ঞা নিয়েই যেন পরশু রাতে সউদী আরবের জেদ্দা বাদশাহ আবদুল্লাহ স্টেডিয়ামে মাঠে নেমেছিল দু’দলের খেলোয়াড়েরা। রিয়াল বস জিদান ছক সাজিয়েছেন খানিকটা রক্ষণাত্মক। আর অ্যাটলেটিকোও ‘আগে নিজের ঘর সামলাও’ এমন নীতি মেনে নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ করে। নির্ধারিত সময়ের পুরো ৯০ মিনিট খেলে দুই দলের কেউ বল জালে জড়াতে পারেনি। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের বাঁশি বাজায় রেফারি। সৌদি আরবের জেদ্দায় এই দুই দলের খেলোয়াড়দের কেউ অতিরিক্ত সময়েও গোল দিতে পারেনি। বরং এক ফ্রি কিক নিয়ে নাটক থামাতে গিয়ে লাল কার্ড দেখাতে হয় রেফারিকে। রক্ষণাত্মক খেললেও পুরো ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করেই খেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। জিদানের পরিকল্পনাই হয়তো ছিল, ‘যে করেই হোক শিরোপা ঘরে তুলতে হবে।’ ১১৫ মিনিটের মাথায় ভালভার্দে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দলে পরিণত হয় রিয়াল মাদ্রিদ। ১০ জনের মাদ্রিদকে পেয়েও গোল দিতে ব্যর্থ হয় সিমিওনের শিষ্যরা।

বলের দখলে পিছিয়ে ছিল অ্যাটলেটিকো। গোলমুখে তারা শটও নিয়েছে কম, যা নিয়েছে তার বেশির ভাগই ছিল এলোমেলো, বেপথু। পেনাল্টি শুট আউটেও অ্যাটলেটিকোর একই দশা। প্রথম দুটি শটই তারা মিস করেছে! প্রথম শট নেন কারভাহাল। রিয়ালের হয়ে ঠিকঠাক বল জালেও জড়ান তিনি। এরপর আসে অ্যাটলেটিকোর পালা। রিয়ালের নগর প্রতিদ্ব›দ্বীর হয়ে প্রথম শট নেন সাউল। প্রথম শটটিই মিস করে বসেন! এরপর অ্যাটলেটিকোর হয়ে দ্বিতীয় শটটি মিস করেন টমাস। শেষ পর্যন্ত ৪-১ গোলের জয় নিয়ে শিরোপা উৎসব করে রিয়াল মাদ্রিদ।

একই দিনে ফরাসি লিগ ওয়ানে নেইমারের নৈপুণ্যে ম্যাচে দুবার এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত জিততে পারল না পিএসজি। বারবার পালাবদলের ম্যাচে দারুণভাগে ঘুরে দাঁড়িয়ে সমতায় মাঠ ছেড়েছে মোনাকো। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদেরকে তাদেরই মাঠে ৩-৩ গোলে রুখে দিয়েছে সবশেষ ২০১৬-১৭ আসরের শিরোপাজয়ী মোনাকো। প্রতিপক্ষের দুর্বল রক্ষণ আর নেইমারের নৈপুণ্যে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোল পেয়ে যায় পিএসজি তাদের এগিয়ে থাকার স্বস্তি অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। চার মিনিট পরই সমতা টানেন জেলসন মার্তিন্স। ত্রয়োদশ মিনিটে ফরাসি ফরোয়ার্ড বেন ইয়েদেরের গোলে এগিয়েও যায় মোনাকো। কিন্তু তারাও বেশিক্ষণ লিড ধরে রাখতে পারেনি। ২৪তম মিনিটে নেইমারের শট মোনাকোর ডিফেন্ডার বালো-তরের গায়ে লেগে ভিতরে ঢোকে। ৪২তম মিনিটে নেইমারের স্পট কিকে আবারও এগিয়ে যায় শিরোপাধারীরা। ৭০তম মিনিটে স্কোরলাইন ৩-৩ করে পিএসজিকে স্তব্ধ করে দেন আলজেরিয়ার ফরোয়ার্ড ইসলাম সিøমানি। ১৯ ম্যাচে ১৫ জয় ও এক ড্রয়ে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে পিএসজি। ১৯ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে আছে মোনাকো।

ইতালিয়ান সিরি আ’তে পরশু শুরুতে দেমিরালের গোলে এগিয়ে গেল জুভেন্টাস। এরপর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ব্যবধান দ্বিগুণ করলেন। দ্বিতীয়ার্ধে রোমা ঘুরে দাঁড়ালেও আটকাতে পারেনি জুভদের। রোমার মাঠ থেকে ২-১ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে জুভেন্টাস। ১৯ ম্যাচে ১৫ জয় ও তিন ড্রয়ে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে প্রতিযোগিতাটির বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ২ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আছে ইন্টার মিলান।

আরেক ম্যাচে প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়লেন সার্জিও আগুয়েরো। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি জোড়া গোল করলেন রিয়াদ মাহরেজ। জালের দেখা পেলেন ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড গাব্রিয়েল জেসুসও। দাপুটে পারফরম্যান্সে অ্যাস্টন ভিলাকে উড়িয়ে দিল ম্যানচেস্টার সিটি। প্রতিপক্ষের মাঠে ৬-১ গোলের বড় জয় পায় পেপ গার্দিওলার দল। আর্সেনাল কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরির ১৭৫ গোল ছিল প্রিমিয়ার লিগে কোনো বিদেশির সর্বোচ্চ। ১৭৪ গোল নিয়ে ম্যাচ শুরু করা আগুয়েরো উঠে এসেছেন প্রতিযোগিতায় সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় যৌথভাবে চারে। তার সমান ১৭৭টি গোল আছে চেলসির বর্তমান কোচ ও সাবেক মিডফিল্ডার ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডেরও। ২৬০ গোল নিয়ে সবার ওপরে অ্যালান শিয়েরার। তালিকার দুইয়ে থাকা ওয়েইন রুনির গোল ২০৮টি। তিনে থাকা অ্যান্ডি কোলের গোল ১৮৭টি। তবে এই হ্যাটট্রিকে এক জায়গায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন আগুয়েরো। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে তার চেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক নেই আর কারো। ১১টি হ্যাটট্রিক করা শিয়েরারকে পেছনে ফেলেছেন তিনি। আগুয়েরো হ্যাটট্রিক ১২টি।

এই জয়ে লেস্টার সিটিকে পেছনে ফেলে টেবিলের দুইয়ে উঠে এসেছে সিটি। ২২ ম্যাচে ৪৭ পয়েন্ট লিগ চ্যাম্পিয়নদের। সমান ম্যাচে লেস্টারের পয়েন্ট ৪৫। এক ম্যাচ কম খেলা লিভারপুল ৬১ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন