শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

পানি চুক্তির ২৪ বছরের প্রথম মাসেও আশানুরূপ পানি প্রবাহ নেই পদ্মা নদীতে, মৎস্যজীবীরা বেকার

পাবনা থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:০৮ পিএম

ভারতের সাথে বাংলাদেশের গঙ্গা নদীর পানি চুক্তির ২৪ বছরে ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসের প্রথম সাইকেলে ১০ দিন অতিবাহিত হচ্ছে । পদ্মা নদীর পানি ক্রম হ্রাস পাচ্ছে । পাবনা হাইড্রোলজি দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম আজ বুধবার জানান. বর্ততানে পদ্মা নদীর হর্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ৮৮ হাজার দুই শত কিউসেকে পানি প্রবাহিত হচ্ছে । হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানির প্রবাহ মাপতে এবারও ভারতের সেন্ট্রাল নদী কমিশনের প্রতিনিধি হিসেবে ডেপুটি পরিচালক নিশাদ ইকবাল আলভী এবং সাব ডিভিশনাল পানি বিশেষজ্ঞ মি. রাহুল । ভারতের দুই প্রতিনিধি পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ মূল পয়েন্টে এবং নদীর কয়েকটি স্থানে পানি পরিমাপ করেছেন, চুক্তির প্রথম সাইকেলের জানুয়ারী মাসের ১০ দিন।

এই প্রবাহ গত বছরের এই সময়ের চেয়ে ২৩ হাজার কিউসেক বেশী বলে তারা হাউড্রোলজী এবং যৌথ নদী কমিশনকে ১০দিনের প্রথম সাইকেলের হিসেব দিয়েছেন। অপর এক সূত্র মতে, পানি প্রবাহ আরও কমে যেতে পারে । যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে ক্রম অবনতিশীল পানির প্রবাহ বাড়ার কোনো সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না । সূত্র মতে, শুষ্ক মৌসুম মার্চ-এপ্রিল মাসে পদ্মা নদীর পানি কার্যত: তলানীতে গিয়ে পৌঁঁছাবে। ফলে এই নদীর প্রধান শাখা নদী গড়াই, আত্রাইসহ ৫৩টি নদ-নদীর পানি শুকিয়ে যাবে। এই চিত্র নতুন নয় । চুক্তির পর থেকেই এই অবস্থা বিরাজমান। স্মরণ করা যেতে পারে, দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার মন্ত্রী হওয়ার পরই দেশের নদ-নদীর বেহাল অবস্থা উপলব্ধি করেন। তিনি ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার সাথে ৩০ সালা মেয়াদী গঙ্গা নদীর পানি চুক্তি করেন। আশা করা গিয়েছিল, চুক্তির ফলে ভারতের ফারাক্কা ব্যারেজ দিয়ে দেশের পদ্মা নদীতে পানির প্রবাহ বাড়বে। বাস্তবে সেটি দেখা যায়নি। এই নিয়ে আওয়ামীলীগ এম.পি এবং পানি সম্পাদ মন্ত্রী ইতোপূর্বে মহান জাতীয় সংসদে বক্তব্য রাখেন।

বর্তমানে পদ্মা নদীতে পানির টান পড়ায় ক্রমেই জেলার সুজানগর উপজেলায় প্রবাহিত পদ্মা নদীর পানি কমছে।

সুজানগরে পদ্মা নদীর কোলের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় উপজেলার প্রায় ৬/৭ হাজার মৎস্যজীবী বেকার হয়ে পড়েছেন। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে অভাব-অনটনে কোনোমতে দিন কাটছে তাদের । অনেক মৎস্যজীবী জীবন-জীবিকরা তাগিদে ক্ষেত-খামের ,ভ্যান রিকশা চালিয়ে জীবন-নির্বাহ করছেন।

সুজানগর উপজেলার তারাবাড়ীয়া গ্রামের ভুক্তভোগী মৎস্যজীবীরা জানান, প্রত্যেক বছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারী মাসে পদ্মার পানি একদম কমে গেলেও পদ্মার কোলে বেশ পানি থাকে। অনেকটা বর্ষার ভরা মৌসুমের মতই কোলে পানি থাকে। বিশেষ করে উপজেলার সাতবাড়ীয়া, নিশ্চিন্তপুর, গোয়ারিয়া, মালিফা, মহনপুর এবং কামারহাট এলাকায় পদ্মা নদীর কোলে পর্যাপ্ত পানি থাকে।

এ সময় পদ্মা পাড়ের মৎস্যজীবীসহ উপজেলার প্রায় ৬-৭ হাজার মৎস্যজীবী এই কোল থেকে ছোট-বড় মাছ বিভিন্ন মাছ ধরে স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

কিন্তু এ বছর ডিসেম্বর মাসের শুরুতেই পদ্মার পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে ওই সকল কোলের পানিও একদম শুকিয়ে গেছে। জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহেও পানি নেই । মৎস্যজীবরা এখন বেকার। তাঁদের মাছ ধরার নৌকা পাড়ে বেঁধে রেখেছেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন