তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে এক ফোনালাপে লিবিয়া ও সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। হোয়াইট হাউজ মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জুড ডিয়ার টুইটারে বলেছেন, ‘দুই নেতা লিবিয়ায় বিদেশী হস্তক্ষেপ বন্ধ এবং যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেছেন।’ এর আগের দিন, আলজেরিয়া থেকে গাম্বিয়া যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় এরদোগান লিবিয়ায় শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে দু’টি শীর্ষ সম্মেলনের প্রচেষ্টাকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করার জন্য খলিফা হাফতারের অনুগত বাহিনীকে অভিযুক্ত করেন। এরদোগান বলেন, ‘মস্কো ও বার্লিন উভয় সম্মেলন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হাফতার লিবিয়ায় যুদ্ধবিরতি সমঝোতা লঙ্ঘন করছেন। লিবিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে গেলে তার যুদ্ধ বন্ধ করা উচিত।’ দুই নেতা ইদলিবে আসাদ ও তার মিত্রবাহিনীর হামলার বিষয়েও আলোচনা করেছেন। জুড ডিয়ার বলেছেন, ট্রাম্প ও এরদোগান একমত হয়েছেন যে, সিরিয়ার ইদলিবে যে সহিংসতা চালানো হচ্ছে তা অবশ্যই বন্ধ করা উচিত। ফোনালাপে দুই নেতা প‚র্ব ভ‚মধ্যসাগরের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প‚র্ব ভ‚মধ্যসাগরে তুরস্ক ও গ্রিসের মতবিরোধের সমাধানের গুরুত্বও তুলে ধরেছেন। এ দিকে প্রেসিডেন্টের যোগাযোগ অফিস গতকাল জানিয়েছে, গত শুক্রবার তুরস্কে ভয়াবহ ভ‚মিকম্পের জন্য এরদোগানকে সমবেদনা জানিয়েছেন ট্রাম্প। অন্য দিকে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির কাছে একটি আটককেন্দ্রে গত জুলাইয়ে এক হামলায় ৫৩ জন অভিবাসী ও শরণার্থী নিহতের ঘটনায় বিদেশী মদদপুষ্ট খলিফা হাফতারের অনুগত বাহিনীকে দায়ী করেছে জাতিসঙ্ঘ। ওই ঘটনায় বিচারের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে ভিডিও ফুটেজ, প্রমাণাদি ও সাক্ষীদের বয়ানের ওপর ভিত্তি করে লিবিয়াভিত্তিক জাতিসঙ্ঘ মিশন ও জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার সংস্থা ১৩ পৃষ্ঠার একটি যৌথ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই আটককেন্দ্রে নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র বিদেশ থেকে সরবরাহ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বার্লিন সম্মেলনে যুদ্ধবিরতি আহŸান সত্তে¡ও লিবিয়ার প‚র্বাঞ্চলভিত্তিক হাফতারের অনুগত বাহিনী জাতিসঙ্ঘ স্বীকৃত বৈধ সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা রাজধানী ত্রিপোলি দখল করতে আবাসন এবং বেসামরিক লোকদের লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে। প্রসঙ্গত, রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় লিবিয়ায় যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে ১২ জানুয়ারি মস্কোয় একটি প্রতিনিধি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই সম্মেলনে খলিফা হাফতার ও জাতিসঙ্ঘ সমর্থিত সরকারের প্রতিনিধিরা একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য সমবেত হন। সম্মেলনে ত্রিপোলিভিত্তিক সরকারের প্রতিনিধিরা স্বাক্ষর করলেও জেনারেল হাফতার স্বাক্ষর ছাড়াই মস্কো ত্যাগ করেন। তিনি দাবি করেন ওই চুক্তিতে তাদের অনেক দাবিই মানা হয়নি। এর এক সপ্তাহ পর ফের বার্লিনে লিবিয়া পরিস্থিতি নিয়ে সম্মেলন ডাকেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল। সেখানে বিশ্বের ক্ষমতাধর নেতাদের উপস্থিতিতে লিবিয়ার চলমান যুদ্ধ বন্ধে একটি সর্বসম্মত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই সম্মেলনে লিবিয়ায় বিদেশী হস্তক্ষেপ ও অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে একমত হন বিশ্বনেতারা। বার্লিনের ওই সম্মেলনেও লিবিয়ার বিবাদমান দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ওই সম্মেলনের পরপরই বেসরকারি হতাহতের বিষয়টি উপেক্ষা করে ফের ত্রিপোলিতে হামলা জোরদার করে হাফতার বাহিনী। ডেইলি সাবাহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন