রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

জার্মানদের হিসাব চুকানোর ম্যাচ

প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : বিশ্ব তথা ইউরোপিয়ান ফুটবলের সফলতম দল তারা। দুই দল মিলে বিশ্বকাপ জিতেছে ৮ বার, ১৪ বার খেলেছে ফাইনালে; ইউরোপের অন্য যে কোনো যুগল দেশের চেয়ে যা ঢের বেশি। বিশ্বকাপে তারা মুখোমুখি হয়েছে ৫ বার। ১৯৭০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানি-ইতালির সেই ম্যাচকে বলা হয় ‘গেম অব দ্যা সেঞ্চুরি’। অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচটি ৪-৩ গোলে জিতে নিয়েছিল ইতালি।
এর আগে পরে মিলে দুই দল এ পর্যন্ত মুখোমুখি হয়েছে ৩৩ বার। ১৫টি জয়ে এগিয়ে জার্মানি, ৮ জয় ইতালির, বাকি ১০ ম্যাচ ড্র। তবে ১৫ জয়ের বিনিময়ে হলেও ইতালির আট জয়ের যে কোন একটিকে পেতে চাইবে জার্মানরা। জার্মানির সব জয়ই যে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে! তিন মাস আগেও এক প্রীতি ম্যাচে ইতালিকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল জার্মানরা। অথচ বড় কোন টুর্নামেন্টে হিসাবটা সম্পূর্ণ উল্টো। এ পর্বে ইতালিকে এখনো পর্যন্ত হারাতে পারেনি তারা।
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্সশিপের শিরোপা সংখ্যায় আবার ইতালির চেয়ে জার্মানি এগিয়ে ৩-১ ব্যবধানে। এই পর্বের তাদের মুখোমুখি লড়াইয়ে ৩ বারের সাক্ষাতে দুই ড্র’য়ের বিপরীতে একটি জয় ইতালির। গেলবার সেমিফাইনালে জার্মানির ইউরো যাত্রার যবনিকা ঘটেছিল ঐ হারেই। সব মিলে বিশ্বকাপ আর ইউরোর আট ম্যাচের একটিতেও জয় নেই জার্মানদের! বোর্দোয় আজকের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে তাই অনেক হিসাব চুকানো বাকি জার্মানদের।
ম্যানুয়্যাল ন্যয়ারদের গোলকিপিং কোচ আন্দ্রেস কেপকের কন্ঠে মিলল তেমনি সুর, “ইতালিয়ানদের সাথে আমরা হিসেবটা চুকাতে চায়।” ব্যপারটা ভালোভাবেই জানেন দলের প্রধান কোচ জোয়াকিম লোও। বিশ্বকাপ জয়ী কোচ বলেন, “ইতালিকে আমরা যেনটা জানি এই দলটা তেমন নয়। তারা শুধু রক্ষণেই নজর দেয় না, আক্রমণেও তারা দুর্দান্ত। আমার বিশ্বাস, শনিবারে জমজমাট ও হাইভেল্টেজ একটা ম্যাচ অপেক্ষা করছে।” ইতালি মিডফিল্ডার আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি অবশ্য বলটা তাদের কোর্টেই ঠেলে দিলেন। সেটা সম্ভবত চাপটা এড়ানোর জন্যেই। তিনি বলেন, “রেকর্ডই তাদের হয়ে কথা বলে, তারা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। অনেক দিন ধরে তারা জয়ের মধ্যে আছে, এগুলো তাদের শক্তি যোগাবে।”
ইতালির এই দলে নেই কোন তারকা খেলোয়াড়। বিশ্ব ফুটবলে যখন তরুণদের জয়জয়কার তখন ইতালিয়ান এই দলের বয়সের গড়ও ৩১ বছরের ওপরে। ফেভারিটের তালিকায় তাই ছিল না তাদের নাম। এরপরও অ্যান্তোনিও কোন্তের অধীনে তারা টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল আসরের অন্যতম ফেভারিট ও ফিফা র‌্যাংকিংয়ের দুই নম্বর দল বেলজিয়ামকে হারিয়ে। গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোলোয় উঠে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন স্পেনকেও তারা ধরাশায়ী করে ২-০ গোলে। তাদের সেই চিরচেনা রক্ষণটাও এখনো অটুট। গ্রæপ পর্বের শেষ ম্যাচে নিরীক্ষা করতে গিয়ে ৮জন নিয়মীত খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিয়েছিলেন কোচ অ্যান্তোনিও কোন্তে। ঐ দিনই দুর্বল নর্দান আয়ারল্যান্ডের কাছে একমাত্র গোলটি হজম করে ম্যাচটিও হেরেছিল তারা।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে অবশ্য আলাদা আলাদাভাবে চেনানোর কিছু নেই। টুর্নামেন্ট শুরুর দিকে তাদের সেই চিরায়ত আক্রমণের ধারটা ভোতা ঠেকলেও প্রতি ম্যাচে তা হয়েছে আরো শানিত। গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে পা রেখে ¯েøাভাকিয়াকে তারা উড়িয়ে দিয়েছিল ৩-০ গোলে। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত গোল না খাওয়া একমাত্র দলও তারা। এরপরও প্রতিপক্ষ যে ইতালি! এই নামটির কারনেই তো মানসিকভাবে চাপে থাকবে তারা। চাপ যে তারা টের পাচ্ছে তা লো’র এই কথাতেই স্পষ্ট, “আমাদের কোনো ইতালি-ট্রমা নেই।”

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন