শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

জীবন বাঁচাতে রুটির চেয়েও কম মূল্যে সম্ভ্রম বেচছে আফ্রিকার মেয়েরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২০, ৯:১৯ পিএম

দক্ষিণ আফ্রিকার লাখ লাখ যুবতী মেয়ে ক্ষুধার সঙ্কট থেকে বাঁচতে কখনও কখনও রুটির ব্যয়ের চেয়ে কম দামে সম্ভ্রম বিক্রি করছে বলে জানিয়েছে সহায়তা সংস্থা। ওয়ার্ল্ড ভিশন গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, অ্যাঙ্গোলার দ্বাদশীরা তাদের পরিবারের খাদ্য যোগাড়ে ৪০ সেন্টের কম দামে সম্ভ্রম বিক্রি করে। কারণ চার দশকের মধ্যে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল সবচেয়ে খারাপ খরার মুখোমুখি। জাতিসংঘ জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ড সাড়ে ৪ কোটি মানুষ অনাহার, বন্যা ও অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলার কারণে বারবার খরার কারণে সৃষ্ট ‘নীরব বিপর্যয়ে’ পড়েছে।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বলছে, কর্মীরা দেখতে পেয়েছেন ‘বিশাল হতাশার’ মধ্যে আঙ্গোলা এবং জিম্বাবুয়েতে মেয়েদের জীবন যাপনের ব্যয় নির্বাহে সম্ভ্রম বিক্রিকে অবলম্বন হিসেবে নেয়ার ঘটনা উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। অ্যাঙ্গোলাতে ওয়ার্ল্ড ভিশনের জরুরি পরিচালক রবার্ট বুলটেন, থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেছিলেন, কোনো মেয়ে যৌনতার জন্য ৫০০ কোয়ানজাস (১ ডলার) পেতে পারে যা দিয়ে প্রায় এক কিলো মটরশুটি বা দুই কেজি ভুট্টা কেনা যায়। তবে প্রায় ২০০ কোয়ানজায় কম পাওয়া যায়।‘আমরা অবশ্যই জানি এটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা গণনায় বলা কঠিন ... তবে আমি বলতে চাই, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক (এটি করছে)’- তিনি বলেন।

বুলটেন বলেন, গত বছরের তুলনায় কয়েকটি স্ট্যাপলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। আগামী জুনে পরবর্তী ফসল না কাটা পর্যন্ত দুর্ভিক্ষ আরো খারাপ পরিস্থিতিতে যাবে বলে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন। জিম্বাবুয়েতে কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ১৪ বছর বয়সী বালিকারা সম্ভ্রম বিক্রি, বিশেষত দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার পথে এবং কাছাকাছি স্বর্ণখনিতে।

কেয়ারের আঞ্চলিক লিঙ্গ বিশেষজ্ঞ এভারজয় মাহুকু বলেছিলেন, ‘কখনও কখনও তারা একটি যৌন সংসর্গে দশমিক ৩১ ডলারেরও কম উপার্জন করে যা সত্যিই ভয়াবহ ...। তিনি বলেন, এটি একটি পাউরুটি কেনার জন্যও যথেষ্ট নয়।’ অ্যাকশনএইডের আঞ্চলিক উপদেষ্টা চিকোন্ডি চাব্বুতা বলেছেন, মোজাম্বিক ও মালাবি নারী ও মেয়েদের ‘বেঁচে থাকার শেষ অবলম্বন হিসাবে’ জোর করে দেহ ব্যবসায় লিপ্ত করা হয়েছিল।

জাতিসংঘের মতে, দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলি ১৯৮১ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাতের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, যা জাতিসংঘের মতে, আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে এই সঙ্কট আরও বাড়ছে। যেহেতু এই অঞ্চলে তাপমাত্রা বিশ্বব্যাপী হারের দ্বিগুণ বেড়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ অন্য দেশগুলির মধ্যে জাম্বিয়া, মাদাগাস্কার, নামিবিয়া, লেসোথো এবং ইসাওয়াতিনি অন্তর্ভুক্ত। এইড কর্মীরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ মেয়েই সাধারণত স্কুলে পড়ত। কিছু ক্ষেত্রে, পারিবারিক দারিদ্র্যের কারণে তারা বাদ পড়েছিল, তবে অনেক স্কুলও বন্ধ ছিল। ওয়ার্ল্ড ভিশনের বুলটেন বলেছিলেন যে, দক্ষিণ আঙ্গোলায় সঙ্কট ধর্ষণ ও বাল্য বিবাহের ঘটনাও বাড়িয়ে তুলেছিল। তিনি জানান, মেয়েরা পানির জন্য দীর্ঘ দূরত্বে হাঁটতে বা বনে চলাচলকালে ধর্ষণের ঝুঁকিতে থাকে। আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অফ রেডক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে যে, এই সঙ্কট জিম্বাবুয়ে, জাম্বিয়া, লেসোথো এবং নামিবিয়ায় বাল্য বিবাহকে উৎসাহিত করছে। সূত্র: রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মোঃ শহিদুল ইসলাম ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:১১ এএম says : 0
তাদেরকে সাহায্য পাঠানোর কোন ব্যবস্থা আছে কি?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন