শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর হবে না -চীন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৬:৫৬ পিএম

গত মাসে ভারতের কর্মকর্তারা মিডিয়ার কাছে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (বিএমডি) উন্নয়ন ও পরীক্ষা সফলভাবে শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছেন। তারা বলেছেন, মোতায়েনের জন্য এই ব্যবস্থা প্রস্তুত। তবে ভারতের পক্ষে কোন কার্যকর ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে চীন। দেশটির সরকারি মিডিয়া চায়নামেইলের এক নিবন্ধে এই কথা বলা হয়েছে।

নিবন্ধে ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিআরআই ইন্সটিটিউট অব স্ট্রাটেজি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটির গবেষক ফ্যাং শিয়াওঝি জানান, ভারত স্বাধীন গবেষণা ও উন্নয়ন এবং ব্যালেস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করলেও তারা এখনো বহুরকম সমস্যার মধ্যে নিমজ্জিত। এর মধ্যে রয়েছে অর্থ সঙ্কট, গবেষণা ও উন্নয়নে অমসৃণ অগ্রগতি, গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তির জন্য অন্য দেশের উপর ব্যাপক নির্ভরতা, এবং অপূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা। তিনি আরো বলেন, সত্যিকারের ব্যালেস্টিক মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করতে চাইলে নয়া দিল্লিকে আরো অনেকদূর যেতে হবে।

ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরক্ষা (বিএমডি) ক্ষেত্রে ভারত নতুন খেলোয়াড়। তারা একই সঙ্গে ইন্টারসেপ্টর ও এন্টি-স্যাটেলাইট অস্ত্র তৈরি করছে। ১৯৬০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্র যেমনটি তৈরি করেছিলো ভারতে বিএমডি অনুরূপ দুই স্তর বিশিষ্ট, এক্সো এবং এন্ডো এটমোসফেরিক ইন্টারসেপ্টর। প্রথমটি মহাকাশে, দ্বিতীয়টি পৃথিবীর আবহাওয়া মণ্ডলে প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে।

দি প্রিন্ট ওয়েবসাইটের এক খবরে বলা হয়, ভারতীয় বিমান বাহিনী ও প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) নয়া দিল্লিতে এই ব্যবস্থা মোতায়েনের জন্য সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছে। অনুমতি পাওয়ার পর মোতায়েন সম্পন্ন করতে তিন থেকে চার বছর লাগবে।

তবে চীনা গবেষক ভারতের দাবিকে ভূয়া বলে বাতিল করে দেন। ফ্যাং বলেন, ভারত তার এন্টি-মিসাইল পরীক্ষার জন্য সবেচেয়ে রক্ষণশীল পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এটা শুধু উৎক্ষেপন ক্ষেত্রের কাছাকাছি টার্গেটকে বাধা দেয়। এখানে টার্গেটের ভেলোসিটি, ডিরেকশন, অল্টিচুড বা ব্যালিস্টিক প্যারামিটার সব কিছু তাদের জানা। কিন্তু এর অন্যথা ঘটলে পরিস্থিতি কি হবে সেই পরীক্ষা করা হয়নি।

চীনা গবেষক বলেন, সব কিছু ঠিক করা একটি টার্গেটে আঘাত হানা আর সত্যিকারের যুদ্ধ পরিস্থিতি এক নয়। তাছাড়া ভারত তার সিস্টেমের স্থিতিশীলতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাও পরীক্ষা করেনি। ফলে পরীক্ষার ফলাফল তেমন বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাছাড়া ভারতের কার্যকর ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরাক্ষার প্রযুক্তিগত মেরুদণ্ডও নেই বলে দাবি করেন ফ্যাং। তিনি বলেন, ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা খুবই জটিল একটি প্রকল্প। এটা বড় দেশগুলোর সার্বিক শক্তির পরিচায়ক। এর জন্য আগাগোড়া একটি সুদৃঢ় কারিগরি ভিত্তি প্রয়োজন, যাতে একটি আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম, মিসাইল ইন্টারসেপশন সিস্টেম ও একটি কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম থাকবে। এগুলোর ব্যাপারে ভারতের বলার তেমন কিছু নেই। রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইলসহ অনেক দেশের তুলনায় ভারতের প্রযুক্তি অনেক পিছিয়ে আছে। গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেও আছে অনেক প্রতিবদ্ধকতা ও বিপত্তি। তাছাড়া দেশটি এত কম পরীক্ষা করেছে যে প্রযুক্তিকে পুরোপুরি বুঝতে পারার জন্যও তা যথেষ্ঠ নয়।

এই নিবন্ধ থেকে যেটা বুঝা যায় তাহলো পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চললেও তারা দক্ষিণের প্রতিবেশী সম্পর্কে অনাগ্রহী নয়। ১৯৬২ সালে ভারতের সঙ্গে চীন যুদ্ধে জড়ায়। যদিও এতে পরাজয় ঘটে ভারতের।

ভারতের চেয়ে সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিতে চীন অনেক এগিয়ে। চীনের সেনাবাহিনী দ্রুত অত্যাধুনিক প্রচলিত ও পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হচ্ছে। ভারতেরও পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। তবে তারা যদি চীনের ক্ষেপনাস্ত্র বাধা দেয়ার শক্তি আসলেই অর্জন করতে পারে তাহলে সেটা তার প্রতিরোধক শক্তি অনেক বাড়িয়ে দেবে। সূত্র: এসএএম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
NCpall ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৪৮ পিএম says : 0
বিষয়টি 100% সত্য। ভারত যত গর্জে তত বর্ষে না। যেমটি আমরা পাকিস্থানের সাথে গিল কিছুদিন আগে সৃষ্ট বিরোধে দেখেছি।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন