শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে প্রেম করতে এসে ধরা খেল গরু চোর হিসেবে

গোদাগাড়ী ( রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ২:০৮ পিএম | আপডেট : ২:৫৪ পিএম, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

গরু চুরি ঠেকাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষকেরা রাত জেগে গোয়াল পাহারা দিচ্ছেন। এমনকি এ নিয়ে পুলিশ এলাকাবাসীকে নিয়ে সমাবেশও করেছেন। তারপরেও বন্ধ হয়নি গরু চুরি। চরম উৎকণ্ঠায় রাত জাগছেন মানুষ। এরই মধ্যে প্রেমের টানে ঝালকাঠি ও বরিশাল থেকে দুই যুবক গোদাগাড়ীতে এসে গত মঙ্গলবার রাতে গরুচোর সন্দেহে জনতার হাতে ধরা পড়েছেন। তবে তাদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে মানুষ অপহরণের অভিযোগে।

আটক দুই যুবকের একজন হচ্ছেন রবিউল ইসলাম (২০)। তার বাবার নাম রুস্তম গাজী। বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়। আরেকজন হচ্ছেন হাসিব বিশ্বাস (২২)। তার বাবার নাম হিরণ বিশ্বাস। তার বাড়ি বরিশালের উজিরপুর উপজেলায়। হাসিব এসেছিলেন রবিউলের সহযোগী হিসেবে। তাদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী বলছে, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এই দুই যুবক গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের একটি বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করে। বাড়ির লোকেরা টের পেয়ে গরুচোর সন্দেহে তাদের ধাওয়া করেন। তারা দৌড়িয়ে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। তবে ঘটনাস্থল থেকে চার-পাঁচ কিলোমিটার দূরে উপজেলার বিজয়নগর গ্রামে এসে তারা আটক হন। যারা রাত জেগে গরুচোর ঠেকাতে গোয়াল পাহারা দিচ্ছিলেন, তারা তাদের গরুচোর সন্দেহ ধরে ফেলেন। বাড়ি বরিশাল ও ঝালকাঠি শুনে এলাকাবাসীর সন্দেহ আর দৃঢ় হয়। তারা তাদের আটকে রেখে গরুচোর সন্দেহে পুলিশে খবর দেন।

পুলিশ এসে তাদের থানায় ধরে নিয়ে যায়। পুলিশের কাছে রবিউল স্বীকার করেন যে, গোদাগাড়ীর গোগ্রাম ইউনিয়নের যে বাড়িতে তারা ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন, ওই বাড়ির এক মেয়ের সঙ্গে মুঠোফোনে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মেয়েটির বাবার বাড়ি শরীয়তপুর জেলায়। বাবা বিদেশ থাকায় মেয়েটি এখন মায়ের সঙ্গে গোদাগাড়ীতে নানার বাড়িতে থাকে। মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেই তিনি এসেছিলেন। কিন্তু প্রথমে তার এই কথা কেউ বিশ্বাস করেননি। সবাই ধারণা করেছেন যে গরুচুরির সন্দেহ থেকে নিজেদের বাঁচাতেই তারা প্রেমের গল্প সাজিয়েছে।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম জানান, এই দুই যুবক যে অটোরিকশায় চেপে মেয়েটির নানার বাড়িতে গিয়েছিল সেই অটোরিকশার চালক নিজে এসে সাক্ষী দিয়েছেন যে, তার অটোরিকশায় তিনি এই দুই যুবককে সেখানে পৌঁছে দেন। এরপর তারা গরুচোরের সন্দেহমুক্ত হন, কিন্তু মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে তখন অভিযোগ ওঠে এই দুই যুবক তাহলে মেয়েকে অপহরণ করতে এসেছিলেন। এবার মেয়ের নানা বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে বুধবার বিকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গোদাগাড়ী থানায় একটি মামলা করেন।

ওসি জানান, মেয়েটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাকেও উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে। আর অপহরণ মামলার আসামি হিসেবে দুই যুবককে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন