মোবাইল ফোনের টাওয়ারের রেডিয়েশনে (বিকিরণ) মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু পায়নি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। এই বিকিরণ নির্ধারিত মানদন্ডের নিচে রয়েছে জানিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। তবে বিটিআরসির এই দাবি সঠিক নয় বলে জানিয়েছে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী সারাদেশে বেইজ ট্রান্সসেইভার স্টেশন (বিটিএস) বা মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার রয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার। এর মধ্যে মাত্র ৭০টি অর্থাৎ শূণ্য দশমিক ২১ শতাংশ বিটিএস পরীক্ষা করে শতভাগ নিরাপদের দাবি করা কোন ভাবেই সঠিক নয়। গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবী করেন বাংলাদেশে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও) মোবাইল টাওয়ার ও মোবাইল ফোন থেকে নিঃসৃত অতি মাত্রার গামা রশ্মি (রেডিয়েশন) জনস্বাস্থ্যের জন্য ঘোষণা করে। সেই সাথে তারা ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন নন আয়োনাইজিং রেডিয়েশন প্রটেকশন (আইসিএনআইআরপি) গঠন করে। এই কমিশন ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন (ইএমআর) অথবা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি (আরএফ) নিয়ন্ত্রণের জন্য দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে। এই কমিশনের দিক নির্দেশনা অনুসারে বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যেই বিটিএস থেকে নিঃর্গত তেজস্ক্রিয়তা নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা প্রমাণ করেছে। বিটিআরসি’ও ২০১২ সালে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে।
মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী বিটিএসের নূন্যতম উচ্চতা ৪০০ মিটার হতে হবে। জনবহুল এলাকায় বিটিএস স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে আমাদের মত ঘনবসতিপূর্ণ দেশে জমির স্বল্পতা থাকায় বাড়ির ছাদ, বাণিজ্যিক ভবনসহ যত্রতত্র ঝুঁকিপূর্ণভাবে একই সাথে একাধিক বিটিএস রয়েছে।
তিনি বলেন, সোমবার বিটিআরসি রাজধানীর একটি হোটেলে মোবাইল ফোন অপারেটরদের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যে সমীক্ষা প্রকাশ করেছে এবং তাতে জনস্বাস্থ্য নিরাপদের যে দাবি করা হয়েছে তার যৌক্তিকতায় আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। আমরা মনে করি, ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন নন আয়োনাইজিং রেডিয়েশন প্রটেকশন (আইসিএনআইআরপি) এর সম্পৃক্তায় বড় পরিসরে এ ব্যাপারে সমীক্ষা ও প্রয়োজনীয় গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। অন্যথায় শতভাগ নিরাপদের দাবি করা হলেও সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন