আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টার সেই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনার এক বছর। যে আগুন কেড়ে নিয়েছিল ৭১জনের তাজা প্রাণ। অথচ বিভীষিকাময় সে মৃত্যুর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এখনও পায়নি পুলিশ। নিহত ৬৭টি লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে ঢাকা মেডিক্যালের ফরেনসিক বিভাগে। এর মধ্যে ৪৫টি লাশের প্রাথমিকভাবেই শনাক্ত এবং তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর বাকি ২২টি লাশের মধ্যে ডিএনএ নমুনার মাধ্যমে ১৯টি শনাক্ত করা হয়। কিন্তু বাকি তিনটি লাশের আজও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। গতকাল চুড়িহাট্টার সেই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থলে বিভিন্ন সংগঠন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।
গতকাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ফরেনসিক বিভাগের সামনে ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, গত বছরের ২১ফেব্রুয়ারি আমাদের মর্গে ৬৮টি লাশ ভর্তি ব্যাগ পাঠায় চকবাজার থানা পুলিশ। সেখানে একটি ব্যাগে লাশের হাত ছিল শুধু। এ হিসেবে লাশের সংখ্যা ছিল ৬৭টি। আমরা সবগুলোরই ময়নাতদন্ত করি। এরমধ্যে ৪৫টি লাশ প্রাথমিকভাবে স্বজনরা চেহারা দেখে, জামাকাপড় দেখে, একটির বুকের পুরাতন অপারেশনের সেলাই দেখে শনাক্ত করতে পেরেছিল। এজন্য সেগুলো তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আর বাকি ২২টি লাশ পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়ায় সেগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরবর্তীকালে সেখান থেকে ১৯টি লাশের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়। কিন্তু বাকি তিনটি লাশ এখনও পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
ডা. সোহেল মাহমুদ আরো বলেন, ডিএনএ রিপোর্ট আসতে ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বদলি হয়ে যাওয়ায় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে একটু বেশি সময় লেগেছে। পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজার চুড়িহাট্টা ওয়াহেদ ম্যানশনে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুন লাগে। ওই ভবনে কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় মুহূর্তে ভয়াবহ রূপ নেয় আগুন। ঘটনাস্থলেই পুড়ে মৃত্যু হয় ৬৭ জনের। দগ্ধ ১৫ জনের মধ্যে ৪ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরে মারা যান।
লালবাগ ডিভিশনের ডিসি মুনতাসিরুল ইসলাম জানান, আমরা এখনও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাইনি। সব সময় চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। তারা বলছেন রিপোর্ট দিতে একটু দেরি হবে। লাশের কিছু পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেলেই দেবো।
তিনি আরো বলেন, চুড়িহাট্টা ঘটনার পরপরই আসিফ নামে এক ব্যক্তি মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ওই দু’জন বর্তমানে জামিনে আছেন। আদালতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করতে মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ বা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অতি জরুরি। সেটা পেলেই আমরা আদালতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন