শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

‘বড়পুকুরিয়ায় পুকুরচুরি’

দিনাজপুর কয়লাখনির লুটপাটের তদন্ত প্রতিবেদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে লুটপাটের নামে পুকুরচুরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্যাবের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অভিযোগ অনুসন্ধান ও গবেষণা কমিশনের সভাপতি সৈয়দ আবুল মকসুদ। তিনি বলেছেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে যা হয়েছে তা আসলে ছোট কোনো চুরি নয়। এটা পুকুরচুরি। লুণ্ঠনকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) আয়োজিত ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অভিযোগ অনুসন্ধান ও গবেষণা কমিশন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক সুশান্ত কুমার দাস তদন্তের প্রতিবেদন তুলে ধরেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়লা উৎপাদনের শুরু থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই অবধি বিসিএমসিএল চুক্তিতে গ্রহণযোগ্য ৫ দশমিক ১ শতাংশ ময়েশ্চার (পানি) ধরে ১০১ দশমিক ৬৬ লাখ মেট্রিক টন কয়লার বিল পরিশোধ করা হয়। একই পরিমাণ কয়লা চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছ থেকে প্রাপ্ত কলের পরিমাণ হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে কয়লার গড়ে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ ময়েশ্চার ছিল। এর অর্থ বিসিএমসিএল গৃহীত কয়লার পরিমাণ ১০১ দশমিক ৬৬ লাখ টনের বেশি। কিন্তু ১০ দশমিক ৫ শতাংশ ময়েশ্চারে গৃহীত কয়লার পরিমাণের কোনো রেকর্ড নেই।

ক্যাবের ওই কমিশনের হিসাবে, ১০ দশমিক ৫ শতাংশ ময়েশ্চারে বিসিএমসিএল প্রাপ্ত কয়লার পরিমাণ ১০৭ দশমিক ৩১ লাখ টন। যা বিসিএমসিএলের রেকর্ডভুক্ত কলার চেয়ে বেশি। এ প্রতিষ্ঠান কয়লার ব্যবহার বিক্রি করে ১০০ দশমিক ২২ লাখ মেট্রিক টন। সে অনুযায়ী ঘাটতি দেখায় ১ দশমিক ৪৪ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু কমিশনের হিসেবে একটি ৭ দশমিক শ‚ন্য ৯ লাখ টন।

পেট্রোবাংলা প্রস্তাব অনুসারে, কয়লার হিসাবে সিস্টেম লস গড়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ। যা ১ দশমিক ৬১ লাখ টন ধরে নিয়েও কয়লার ঘাটতি অথবা আত্মসাৎ ৫ দশমিক ৪৮ লাখ টন।
সংবাদ সম্মেলনে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির চুরির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, এই কমিশনের তদন্তের সময় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবহিত ছিল। আমরা আমাদের প্রতিবেদন সরকারের কাছে হস্তান্তর করব। তারপর সরকার কী সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটা সরকারের ব্যাপার। আমাদের কাজটুকু আমরা করে দিয়েছি।

সংবাদ সম্মেলনে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, তদন্ত করে দেখা যায় মামলার বাদী বিসিএমসিএল নিজেই কয়লা চুরির অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্তদের পক্ষে ন্যায় এবং মামলাটি প্রহসনে পরিণত করে। যা হওয়ার নয় ও সামঞ্জস্যহীন। যা কমিশনের বিবেচনায় অসঙ্গতিপূর্ণ।
অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, বড়পুকুরিয়া খনিজ সম্পদ রক্ষা ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় কেবলমাত্র সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারী নয়, পরিচালনা বোর্ড, শেয়ার হোল্ডার, পেট্রোবাংলা এবং জ্বালানি সম্পদ বিভাগ ব্যর্থ। তিনি আরো বলেন, দুদকের অভিযোগপত্র বিসিএমসিএল-এর ৭ এমডিসহ ২৩ জন কর্মকর্তা অভিযুক্ত হলেও কমিশনের দৃষ্টিতে কেবল ওই ২৩ জনই নন, পরিচালনা বোর্ডের সদস্য, বিসিএমসিএল শেয়ারহোল্ডার এবং পেট্রোবাংলাসহ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বের অবহেলার কারণে আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন অধ্যাপক বদরুল ইমাম, অধ্যাপক এম এম আকাশ প্রমূখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন