নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে শীতের সময়। আমাদের দেশের অধিকাংশ রোগী খেজুরের রস খেয়েই নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। এই ভাইরাস বহন করে বাদুড় । বাদুড় নিপার জীবাণু বহন করে আর খেজুরের রসের মধ্যে লালা বা প্রস্রাবের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়ায় । আবার বাদুড়ের খাওয়া ফল খেয়েও অনেকে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই শীতের সময় খেজুরের কাঁচা রস এবং বাদুড়ের খাওয়া ফল খাওয়া অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
নিপা ভাইরাস আমাদের মস্তিষ্কের প্রদাহ সৃষ্টি করে । মস্তিষ্কের প্রদাহকে আমরা এনকেফেলাইটিস হিসেবে জানি। এই ভাইরাস শুধু যে বাদুর থেকে মানুষে ছড়াতে পারে তা নয়। কখনও কখনও এই ভাইরাস আমাদের শ্বাসনালিকেও সংক্রমিত করে। সেক্ষেত্রে মানুষ থেকে মানুষের দেহে এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এই ভাইরাসের সংক্রমণে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে আছেঃ
১। প্রচন্ড জ্বর, ২। মাথাব্যথা, ৩। খিঁচুনি, ৪। প্রলাপ-ভুল বকতে থাকা, ৫। শ্বাসকষ্ট হতে পারে, ৬। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ।
এসব লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে দ্রæত ডাক্তারের কাছে নিতে হবে এবং আলাদাভাবে রেখে সাবধানতার সঙ্গে চিকিৎসা করাতে হবে।
নিপা ভাইরাসজনিত জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই আলাদাভাবে চিকিৎ্সা দিতে হবে। কারণ এই রোগ একজন থেকে দ্রæত তা অন্যজনে ছড়াতে পারে। সুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে অসুস্থ রোগীকে দূরে রাখতে হবে। তা না হলে অন্যদেরও এতে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। রোগীর থুতু-কফ মাটিতে ফেলা যাবেনা। এসব নিরাপদে দূরে সরিয়ে ফেলতে হবে। রোগীর বিছানায় অন্যরা থাকতে পারবে না। রোগীকে ছোঁয়ার পর সাবান দিয়ে হাত ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে। কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার পর জ্বরে আক্রান্ত হলে রোগীকে অবশ্যই যত দ্রæত সম্ভব হাসপাতালে বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এই ভাইরাসটি মূলত নার্ভাস সিস্টেমে আক্রমণ করে।
২০০১ সালে দেশে প্রথম নিপা ভাইরাসে সংক্রমণের ঘটনা শনাক্ত হয়। এ পর্যন্ত এই ভাইরাসে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছে এবং এদের মধ্যে অনেকেই মারাও গেছে। এই অসুখে মৃত্যুহার তুলনামুলক অনেক বেশি। তাই সাবধান এবং সচেতন হতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন