বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

অধিনায়ক মাশরাফির বিদায়ে যা বললেন সতীর্থরা

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০২০, ১০:২৬ পিএম

মাশরাফি মুর্তজার ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণায় তার সতীর্থদের মনে বেজে উঠেছে বিষাদের সুর। সে দলে আছেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমানরা। লম্বা সময় ধরে একসঙ্গে পথচলা। দীর্ঘ এই পথে মাশরাফি বিন মুর্তজা যতটা না অধিনায়ক, তারচেয়ে অনেক বেশি বড় ভাই, বন্ধু হিসেবে সতীর্থদের পাশে থেকেছেন। সামগ্রিক অর্থে বাংলাদেশ জাতীয় দলে মাশরাফি একজন অভিভাবকের নাম। কারও কোনো সমস্যা হলেই মাশরাফির কাছে ছুটে গেছেন ক্রিকেটাররা। সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন মাশরাফিও।

নেতার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এমন একজন অভিভাবক। বৃহস্পতিবার ওয়ানডের অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন মাশরাফি। এমন খবরে তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, লিঠন, মুস্তাফিজদের মনে বেজে উঠেছে বিষাদের সুর। যেন এখনই শূণ্যতা অনুভব করতে শুরু করে দিয়েছেন তারা। ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণার পর মাশরাফিকে নিয়ে কথা বলেছেন জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার।

তামিম ইকবাল

এত অল্প সময়ে মাশরাফি ভাইকে নিয়ে কথা বলা কঠিন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য উনি যা করেছেন, তা কোনো ক্রিকেটার, ক্রিকেট বোর্ড, বাংলাদেশের ক্রিকেটের সমর্থক কারও কোনোদিন ভোলা উচিত নয়। আমাদের সবার মনের ভেতর থাকা উচিত। ২০১৫ সালে আমরা একটি জায়গায় ছিলাম, ২০১৯ সালে একটা অবস্থানে এসেছি উনার হাত ধরেই। বিশেষ করে ওয়ানডেতে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব আমাদের এখন যেভাবে মূল্যায়ন করে, এটা উনার জন্যই সম্ভব হয়েছে। আমার জন্য, আমাদের জন্য যা করেছেন, কখনোই ভোলার নয়। আমার পক্ষ থেকে উনাকে শুভ কামনা জানাই। আশা করি খেলোয়াড় হিসেবে আরও অনেক দিন তাকে পাব আমরা।

মুশফিকুর রহিম

মাশরাফি ভাইয়ের রিপ্লেসমেন্ট কখনও আসবে না। পাশাপাশি এটিও বলব, মাশরাফি ভাই পরিবারেরই একটি অংশ। মাশরাফি ভাই শুধু আমাদের জন্য বড় ভাই-ই নন, আমাদের একাংশ। অধিনায়ক হিসেবে অনেক মিস করব। উনি অধিনায়ক হওয়ার পর আমাদের দল আমূল বদলে দিয়েছেন। মাঠের ভেতরই নয় শুধু, মাঠের বাইেরও অনেক বদলে দিয়েছেন। অবশ্যই অনেক মিস করব। আশা করব, উনি যতদিন পারেন যেন খেলা চালিয়ে যান। উনার নেতৃত্বে খেলা বা উনার সঙ্গে খেলার অন্যরকম মেজাজ আছে। আশা করি বাংলাদেশে ভবিষ্যতেও অনেক কিছু দিতে পারবেন।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

আমি যেটা বলতে চাই, মাশরাফি ভাই যখন অধিনায়ক ছিলেন, ভাই, বন্ধু বা অধিনায়ক যাই বলেন, আমি পুরো সময়টা খুব উপভোগ করেছি। আজ প্রায় ছয় বছর হলো উনি অধিনায়কত্ব করেছেন। মাশআল্লাহ অনেক সাফল্যও পেয়েছেন। তো আমি ওনার পরবর্তী জীবনের জন্য শুভকামনা জানাচ্ছি এবং এটায় কোনো সন্দেহ নেই যে উনি বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি।

লিটন দাস

মিস তো করবই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সেরা অধিনায়ক তিনি। ক্রিকেটারদের যেভাবে সমর্থন করে গেছেন, এটা বলার মতো নয়। বিশেষ করে জুনিয়র ক্রিকেটারদের। আমার যখন অভিষেক হয়, উনার নেতৃত্বে খেলেছি। আমার জন্য সেটি বড় পাওয়া। আমার পাশে থেকেছেন সব সময়। নতুন যারাই আসে দলে, সবাইকে সমর্থন করেন। অধিনায়ক যখন এত জোর দিয়ে একজন ক্রিকেটারের পাশে থাকে, সেটা অনেক বড় ব্যাপার। উনার ভেতর এই ব্যাপারটি অনেক বেশি আছে। আমরা তাকে অনেক মিস করব।

মুস্তাফিজুর রহমান

জানার পর থেকেই মন খারাপ। ভাইয়ের কোনো ব্যাখ্যা নাই আমার কাছে। আমাকে তিনিই নিয়ে এসেছিলেন দলে। আমার মন এখনও খারাপ।

মোহাম্মদ মিঠুন

আমরা সবাই জানি অধিনায়ক হিসেবে তিনি ক্রিকেটারদের কাছে কেমন ছিল। বড় ভাই হিসেবে তিনি অসাধারণ। আমরা যেকোনো সমস্যা হলেই তার কাছে যেতাম। তিনি বুদ্ধি দিয়ে হোক, নিজে চেষ্টা করে হোক, সবসময় যেকোনো সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। আমি কিছুক্ষণ আগেই শুনেছি, উনি আর অধিনায়কত্ব করছেন না। এটাই শেষ ম্যাচ। অবশ্যই উনাকে অনেক বেশি মিস করব। তারপরও তার সঙ্গে যেখানেই খেলব, অধিনায়ক না থাকলেও সবাই তাকেই নেতা হিসেবে চিন্তা করব।

তাইজুল ইসলাম

শুধু আমার ক্ষেত্রে বলব না, বাংলাদেশের প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের জন্যই মাশরাফি ভাইয়ের প্রভাবটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন নতুন জাতীয় দলে ঢুকেছি, আসলে তখনকার সহায়তাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটারের জন্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এদিক থেকে মাশরাফি ভাইয়ের সাপোর্টটা একটু অন্যরকম ছিলো। আর অধিনায়ক বলেন আর ব্যক্তি মানুষ হিসেবেই বলেন, আমরা তাকে অনেক মিস করব।

আল আমিন হোসেন

অধিনায়ক হিসেবে তো বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল। তিনি যতদিন খেলেছেন আমাদের আগলে রেখেছেন। কখনও অভ্যন্তরীণ বা বাইরের নেতিবাচক বিষয়গুলো আমাদের বুঝতেই দেননি, তিনি দারুণভাবে সব সামলেছেন। তিনি অধিনায়ক হিসেবে আরও কিছুদিন আমাদের সাথে থাকলে ভালো হতো। কিন্তু এ বিষয়গুলো নীতি-নির্ধারক যারা আছে, তারা যেটা ভালো মনে করবে সেটাই করবে। অধিনায়ক হিসেবে কালকের ম্যাচটাই তার শেষ। আমি দোয়া করব, ভাই যেন খেলোয়াড় হিসেবে হলেও আরও কিছুদিন আমাদের সঙ্গে থাকেন।

মেহেদী হাসান মিরাজ

অনেকগুলো ওয়ানডে খেলেছি। প্রায় ৪০টার মতো ওয়ানডে খেলা হয়েছে। যে কয়দিনই ছিলাম, খুবই আগলে রেখেছে সবাইকে। আমরা বেশিই মিস করব। বিশেষ করে আমরা। আমরা তো তাকে অল্প পেয়েছি। তারপরও যতটুকু পেয়েছি, নিজেকে সৌভাগ্যবান বলতে হয়। তার নেতৃত্বে খেলেছি, এটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া ছিল। অনেক সিরিজ জিতেছি তার নেতৃত্বে। অনেক মিস করব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন