জাহেদ খোকন : আসন্ন গৌহাটি-শিলং সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে বাংলাদেশ সাইক্লিং দলের লক্ষ্য স্বর্ণপদক জেতা। এমনটাই প্রত্যাশা দলের কোচ সাহিদুর রহমানের। আগামী ৫ ফেব্রæয়ারি ভারতের গৌহাটিতে পর্দা উঠছে এসএ গেমসের ১২তম আসরের। পরের দিন শিলংয়ে উদ্বোধন হলেও গৌহাটিতেই হবে সমাপণী অনুষ্ঠান। এবারের এসএ গেমসের ২৩ ডিসিপ্লিনের মধ্যে বাংলাদেশ অংশ নেবে ২২টিতে। যার অন্যতম সাইক্লিং। এই ডিসিপ্লিনে স্বর্ণ জয়ের মানসেই গত ৫ আগষ্ট অনুশীলন ক্যাম্প শুরু করে বাংলাদেশ সাইক্লিং ফেডারেশন। প্রাথমিক দলে ৩০ জন সাইক্লিস্ট থাকলেও বাছাই শেষে ৭ জন করে ১৪ জনের পুরুষ ও মহিলা দল যাচ্ছে গৌহাটিতে। সঙ্গে কোচ ও কর্মকতাসহ রয়েছেন আরো চার জন। গৌহাটিতে বাংলাদেশের পুরুষ ও মহিলা সাইক্লিষ্টরা ৮টি ইভেন্টে অংশ নেবেন। ইভেন্টগুলো হলো-পুরুষদের ১০০ ও মহিলাদের ৮০ কিলোমিটার রোডরেস, ক্রিট্রিয়াম, ইন্ডিভিজুয়াল রোড রেস, পুরুষদের ৪০ ও মহিলাদের ইন্ডিভিজুয়াল টাইম ট্রায়াল এবং রোড পুরুষদের ৮০ ও মহিলাদের ৬০ কিলোমিটার টিম টাইম ট্রায়াল।
২০১০ ঢাকা এসএ গেমসে নানা ঘটন ও অঘটন পটিয়সী এক ডিসিপ্লিন ছিল বাংলাদেশের সাইক্লিং। ওই আসরে ৮০ কিলোমিটার রোড টিম টাইম ট্রায়ালে ব্রোঞ্জপদক জিতেছিলেন রিপন কুমার, মুসলিম উদ্দিন, ইখতির উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেনরা। তবে অঘটন ছিল বাংলাদেশ দলের চিং বাইয়ের প্রথম হয়েও শেষ পর্যন্ত ডিসকোয়ালিফাই হওয়া। ঢাকা-খুলনা রোডে সেই মাস স্টার্ট রোড রেসে চিং বাইয়ের সাইকেল পেছন থেকে ধাক্কা দেন খুলনার এক মোটরসাইকেল আরোহী। নিয়ম হলো যদি বাতাসও কোন সাইকেল প্রতিযোগিকে সহযোগিতা করে তাহলেও তা ডিসকোয়ালিফাই হয়। পরে একটি বেসরকারী টেলিভিশন তা রিপ্লে করে দেখালে চিং বাই ডিসকোয়ালিফাই হন। তবে এবার এধরনের অঘটন ঘটার সম্ভাবনা নেই। কারণ ১২তম এসএ গেমস হচ্ছে ভারতে। দেশের বাইরে বাংলাদেশের সাইক্লিষ্টরা এমন কান্ড ঘটিয়ে জাতিকে লজ্জায় ফেলবেন না এমন আশাই সংশ্লিষ্টদের।
গৌহাটি-শিলং এসএ গেমসকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সাইক্লিং দল আগস্টের প্রথম সপ্তাহে অনুশীলন শুরু করে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ট্র্যাকে রেসিং ও পূর্বাচল রোডে শুরু হয় রোড রেসিং সাইক্লিংয়ের অনুশীলন। কিন্তু তিন মাস অনুশীলনের পরই গত ৬ নভেম্বর হঠাৎ করেই দূর্ঘটনায় পড়েন রোড রেসিংয়ের সাইক্লিস্টরা। মিরপুর ক্রীড়াপল্লী থেকে রোড রেসের সাইক্লিং দলটি পূর্বাচল রোডে অনুশীলন শুরু করে। যখন তারা অনুশীলনে মগ্ন, ঠিক তখনি পেছন দিক থেকে একটি মাইক্রোবাস এসে আটজনের দলটিকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে আহত হন সাত সাইক্লিস্ট। তাৎক্ষণিকভাবে তাদেরকে আসিয়ান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মিরপুর ক্রীড়াপল্লীতে নিয়ে যাওয়া হয় এই সাতজনকে। এরা হলেন- দীপন কুমার, মনোয়ার হোসেন, আনোয়ার হোসেন, মুক্তাদুল আল হাসান, ইয়াসিন ঢালী, আবদুল বাসার ও সবুর খান। ফলে পূর্বাচল রোডটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সাউথ এশিয়ান গেমসের (এসএ) সাইক্লিং ডিসিপ্লিনের ক্যাম্পটি তাৎক্ষণিক সরিয়ে দিনাজপুরের ফুলবাড়িয়ায় নিয়ে যায় বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ)।
এর পর থেকেই দিনাজপুরের ফুলবাড়িয়া সার্কিট হাউজে আবাসিক ক্যাম্প করা হয় সাইক্লিস্টদের। এবারের এসএ গেমসের সাইক্লিং ডিসিপ্লিন নিয়ে আশাবাদি কোচ সাহিদুর রহমান। তিনি স্বর্ণপদক প্রত্যাশা করছেন। সাহিদুর বলেন, ‘পুরুষদের ১০০ ও মেয়েদের ৮০ কিলোমিটার রোডরেস এই দুই ইভেন্টে স্বর্ণ জেতার সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের। বাকি ইন্ডিভিজুয়াল টাইম ট্রায়াল ছেলেদের ৪০ ও মেয়েদের ৩০ কিলোমিটার এবং পুরুষদের রোড টিম টাইম ট্রায়াল ৮০ কিলোমিটার ও মেয়েদের হলো ৬০ কিলোমিটার পদক পাবো ইনশাল্লাহ।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা পদক তালিকায় থাকবো ইনশাল্লাহ। তবে এখানে সমন্বয়ের ব্যাপার রয়েছে। যেমন যেখানে খেলতে যাবো সেখানকার আবহাওয়া, রোড এবং সাইকেল যদি অনুক‚লে থাকলে তবে অবশ্যই স্বর্ণের ফাইট দিবো আমরা। তবে ক্রিট্রিয়াম ইভেন্টটি নতুন। তাই এই ইভেন্টের সম্ভাবনার কথা আগে থেকে কিছু বলতে পারছি না।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন