শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দেশে নাজিরশাইল ধান মিনিকেট চাল নেই

ব্যবসায়ীদের প্রতারণা ফাঁস করলেন খাদ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

দেশের নওগাঁ জেলাকে বলা হয় চালের রাজধানী। সেই জেলার এমপি এবং খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার চাল ব্যবসায়ীদের প্রতারণার গোমর ফাঁস করে দিয়েছেন। রাজধানী ঢাকার বাজারগুলোতে নাজিরশাইল ও মিনিকেট চাল বিক্রি সবচেয়ে বেশি। মধ্যবিত্তরা এই চাল বেশি খান বলেই বাজার সবচেয়ে বেশি ওঠানামা করে। কিন্তু খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি বলেছেন, দেশে নাজিরশাইল বলে কোনো ধান নেই, মিনিকেট বলে কোনো চাল নেই। এগুলো সবই ব্যবসায়ীদের কারসাজি। গতকাল শনিবার ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত ‘সেফ ফুড ফর অল : এ কমিটমেন্ট টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) এ সেমিনারের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন রশিদ। খাদ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রচারের পর প্রশ্ন উঠেছে বাজারে নাজিরশাইল ও মিনিকেট নামে যে চাল বিক্রি হয় সেগুলো কিভাবে হয়ে থাকে? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চালের রাজধানী নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, দিনাজপুরসহ যে সব জেলায় ধানের উৎপাদন বেশি; সে সব এলাকায় চালকল মালিকরা মোটা চাল মেশিনের মাধ্যমে ছেটে চিকন (প্রসেসিং) করে বিভিন্ন নামে বাজারদাত করে থাকেন। দেশের ভোক্তা এবং ভুক্তোভোগীদের প্রশ্ন চালকল মালিকদের এতো বড় জালিয়াতি বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। অথচ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের মুখোশ খুলতে পারছে না। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ও কনজুুুুুমার এসোসিয়েশন চাল ব্যবসায়ীদের জালিয়াতি নিয়ে কিছুই করছেন না কেন?

নিরাপদ খাদ্যের জন্য প্রচারণার দাবি জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা করোনাভাইরাস নিয়ে যতটা হুলুস্থুল তৈরি করছি; এবং সচেতনতা তৈরির জন্য যে প্রচারণা চালাচ্ছি, নিরাপদ খাদ্যের ক্ষেত্রে অনুরূপ হুলুস্থুল করলে নিরাপদ খাদ্য পাওয়া সম্ভব হবে। তিনি আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, যারা খাদ্যে ভেজাল দেবে তাদের শাস্তি নিশ্চিত মৃত্যুদন্ড। এতো বছর পর এসে মানুষকে শিক্ষা দিতে হয় যে, ভেজাল খাওয়া যাবে না। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
কৃষক উৎপাদিত ধানের দাম না পাওয়ায় দুঃখ করে জাতির কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, যে কৃষক ফসল ফলায় সে কি অপরাধ করেন? অপরাধ করেন যারা প্রসেসিং করেন এবং এর মধ্যে যারা ব্যবসা করেন। আমাদের দেশের অনেকে ৭/৮শ’ টাকা দিয়ে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার জুস কেনেন। কিন্তু আমাদের দেশের জুসকে বিশ্বাস করেন না। যারা জুস তৈরি করেন তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে হবে। তিনি বলেন, খাদ্যে ভেজালের জন্য শুধু সরকারকে দোষারোপ করলে হবে না। এজন্য সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। বিভাগ থেকে শুরু করে উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যন্ত ভেজালকে না বলতে হবে।

মন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে যে মিষ্টিকে আমরা এক নম্বর মিষ্টি বলে জানি সেই মিষ্টির কোনো গ্রেড নেই। যেখানে এ মিষ্টি তৈরি হয়, তা যদি একবার কেউ দেখত তা হলে জীবনেও সে ওই মিষ্টি খেত না। তাকে একাধিকবার জরিমানা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা আটটি বিভাগে আধুনিক ল্যাবরেটরি করছি। খুব শিগগিরই আমরা এসব ল্যাবরেটরিতে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। এছাড়া ভেজাল, সন্ত্রাস ও মাদক সম্পর্কে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মসজিদের ইমামদের বক্তব্য দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাঙ্গার ফ্রি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আতাউর রহমান। কেআইবি’র সেক্রেটারি জেনারেল কৃষিবিদ খায়রুল আলম প্রিন্স, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব এম আনোয়ার ফারুক, নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল (অব.) সালাউদ্দিন মিয়াজী ও এসিআই এগ্রি বিজনেসের সিইও ড. এফএইচ আনসারী প্রমূখ বক্তৃতা করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Azam Ali ১৫ মার্চ, ২০২০, ১:১৭ এএম says : 0
যারা কথায় কথায় মৃত্যুদন্ডের কথা বলে বুঝতে হবে তারা অাসলে অযোগ্য মাথালোক।প্রশাসন চালানোর মত যোগ্যতা তাদের নেই
Total Reply(0)
Anamul Hoque ১৫ মার্চ, ২০২০, ১:১৭ এএম says : 0
করোনা ভাইরাসে মুসলমানদের এই অবস্থা!কাবায় উমরা বন্ধ। কুয়েতে আজান পরিবর্তন। মসজিদে নামাজ নিষিদ্ধ।মুসলমান তো এতো আতঙ্কিত হবার কথা না!তাদের কে তো আল্লাহর উপর ভরসা রাখবার কথা।ومن يتوكل علي الله فهو حسبه কাফের সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য কেউ আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না انه لا ييأس من روح الله الا القوم الكافرون আর যদি সেই মহামারীতে কোন মুসলমান মারা যায়, তাতে ও সে ক্ষতি গ্রস্হ হবে না বরং শাহাদতের মর্যাদা লাভ করবে ইনশাআল্লাহ। من مات في الطاعون فهو شهيد او كما قال عليه السلام সুতরাং করোনা কে ভয় নয়,করোনার সৃষ্টিকর্তা কে ভয় করা উচিৎ।
Total Reply(0)
Md Dulal ১৫ মার্চ, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 0
চাউল ই তো এক নামে ঢাকলেই হয়!!
Total Reply(0)
মরিয়ম বিবি ১৫ মার্চ, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 0
এই সব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন