বাংলাদেশের প্রথম ক্রীড়াবিদ হিসেবে রিও অলিম্পিক গেমসের টিকিট পেয়েছিলেন গলফার সিদ্দিকুর রহমান। এবারের আসন্ন টোকিও অলিম্পিকেও ছিল সেই সুযোগ। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ওপেনে সেরা তিনে থাকতে পারলে সুযোগটা জোরালো হতো দেশ সেরা এই গলফারের। করোনো ভাইরাসে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ওপেন স্থগিত হয়েছে। স্থগিত হয়েছে সকল র্যাঙ্কিং গলফ টুর্নামেন্ট। এসব আসর স্থগিত হওয়ায় সিদ্দিকুরের টোকিও অলিম্পিকে অংশ নেয়ার সম্ভাবনাও ফিকে হয়ে গেছে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আতঙ্কে বিশ্বের সব খেলাধুলাই আপাতত স্থগিত। কিন্তু টোকিও অলিম্পিক গেমস পেছানোর মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)।
এবারের আসরে দুশ’র বেশি দেশের ১১ হাজারের মতো অ্যাথলেটের অংশ নেয়ার কথা, তাদের মধ্যে ৫৭ শতাংশের খেলা নিশ্চিত হয়েছে। বাকি ৪৩ শতাংশ চূড়ান্ত হওয়ার কথা বাছাইপর্বের মাধ্যমে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রকোপে প্রায় সব দেশেই এখন খেলা স্থগিত। এতে কপাল পুড়তে পারে সিদ্দিকুরের। এ নিয়ে সিদ্দিকুর রহমান বলেন ‘যদি নির্দিষ্ট সময়ে অলিম্পিক হয়, তাহলে এশিয়ান ট্যুর থেকে চার কিংবা পাঁচজন অলিম্পিকে কোয়ালিফাই করবেন। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইনের মতো দেশের গলফাররা র্যাঙ্কিংয়ে না থাকায় অলিম্পিকে খেলতে পারবেন না।’
আর এমনটা না হলে টানা দ্বিতীয় অলিম্পিক খেলার স্বপ্নটা ভেস্তে যাবে সিদ্দিকুরের। নিজের হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এটা খুবই হতাশাজনক। খারাপ লাগছে। হোম কোর্সে যদি খেলতে পারতাম, সেখানে যদি টপ থ্রিতে থাকতে পারতাম, তাহলেও অলিম্পিকে যাওয়ার সুযোগ থাকতো। আর টোকিও অলিম্পিকে খেলার জন্য আমি প্রস্তুতিও নিচ্ছিলাম। আমরা টিমওয়ার্ক করছিলাম। পরিস্থিতির জন্য এখন প্রস্তুতিটা বন্ধ রাখা হয়েছে। অবশ্য অলিম্পিকে খেলতে না পারলে খারাপ লাগবে। না খেলে বাদ পড়াটা খুবই হতাশাজনক। আমি যদি খেলে বাদ পড়তাম, তাহলে অন্তত বলতে পারতাম যে চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখন তো সেই সুযোগ পাচ্ছি না। আর গলফে তো ওয়াইল্ড কার্ডও নেই।’
নির্দিষ্ট সময়ে অলিম্পিক আয়োজনে বদ্ধপরিকর আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)। তবে সিদ্দিকুর মনে করেন, করোনার কারণে লং টাইমের জন্য পেছানো হতে পারে বিশ্ব ক্রীড়ার এ মহাযজ্ঞটি। অলিম্পিকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, সিদ্ধান্তটা পরিবর্তন করতে হতে পারে আইওসিকে। কারণ এখন যে অবস্থা তাতে করে নির্দিষ্ট সময়ে অলিম্পিক আয়োজন করাটা অনেক কঠিন। আমি এক ভাগও সম্ভাবনা দেখছি না।’
তিনি যোগ করেন, ‘যদিও আমি র্যাঙ্কিংয়ে নেই। যারা র্যাঙ্কিংয়ে আছেন, তারা এই পরিস্থিতিতে টোকিওতে অলিম্পিক খেলতে যাবেন কিনা সেটাও দেখতে হবে। তবে কেউ যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জাপান যাবে, তা আমি মনে করছি না। কারণ জাপানের অবস্থাও কিন্তু এখন ভালো নয়। বিশ্বের ১৬০ দেশে করোনাভাইরাস। যদি এই অবস্থা থাকে আর যদি নির্ধারিত সময়ে অলিম্পিক গড়ায়, তাহলে ক’জন খেলোয়াড় জাপানে যাবেন এটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন