সদ্য বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের পাশাপাশি ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে আগত ব্যক্তিদের নিয়েও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে লক্ষ্মীপুর জেলাবাসীর মাঝে। সৌদি, কুয়েত ও আবুধাবি ফেরত ব্যক্তিদের স্ত্রী-সন্তান, পরিবারের সদস্য্যদের এক প্রকার এড়িয়ে চলছেন।
জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্যমতে, গত ৪ সপ্তাহে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন উপজেলায় বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন ৩৬৬২জন।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, তালিকা অনুযায়ী প্রবাস ফেরতদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে উপজেলা প্রশাসন ৩৭৫জন প্রবাস ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখেছেন। বাকিদের চিহ্নিত করতে উপজেলা অনুযায়ী তালিকা ৫টি উপজেলায় প্রেরণ করা হয়েছে।
সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানোর কারণে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনতাসির জাহান চন্ডিপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী আবু নোমান মোহাম্মদ মাসুম, উত্তর চন্ডিপুর গ্রামের কাতার প্রবাসী মো. লিটনকে ২০ হাজার টাকা, সহকারী কমিশনার ভূমি হুমায়ুন রশিদ একই উপজেলার পশ্চিম নাগমুদ গ্রামের প্রবাসী বাচ্চু মিয়া, সাউধেরখীল গ্রামের নুরে আলম ফয়সাল, কেথুড়ী গ্রামের পারভেজ হোসেনকে ৩০ হাজার টাকা, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চৌপল্লী এলাকার আবুধাবি ফেরত আবদুল মাজেদকে ৫ হাজার ও রামগতি উপজেলার চর আলগী ইউনিয়নের চর হাসান গ্রামের সৌদি ফেরত মো. জসিম উদ্দিনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
জেলার রায়পুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরিনা চৌধুরী এক ওমান প্রবাসীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান জানান, যারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন তাদের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রতিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ডাক্তার আবদুল গফফার জানান, বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রবাসীদের মধ্যে ৩৭৫ জনকে পরিবারসহ হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এখনো যারা বাংলাদেশে এসে দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে তাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতাসহ উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল জানান, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জেলা প্রশাসন থেকে বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
কমিউনিটি ও পার্টি সেন্টার, চাইনিজ রেস্তোরাঁ, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধসহ, বিয়েতে লোক সমাগম যেন না হয় সেদিকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া জেলার ৫টি উপজেলায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে মনিটরিং সেল ও কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন