করোনাভাইরাসের ধাক্কায় যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জীবনযাত্রা থমকে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনীতি হয়ে পড়েছে স্থবির। দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল, ভোমরা, দর্শনা এ অঞ্চলের ৩টি স্থলবন্দর ও দ্বিতীয় বৃহত্তম নৌবন্দর মংলা এবং নওয়াপাড়া নদী বন্দর প্রায় ফাঁকা। যশোর ও খুলনার পাটকল, গোটা অঞ্চলের ভারী, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প কলকারখানায় স্থবিরতা। কাজকর্ম হচ্ছে না বললেই চলে। প্রায় সবাই হাতগুটিয়ে ঘরবন্দি হয়ে আছেন।
এ অঞ্চলের জেলা ও উপজেলার চিরচেনা শহর অচেনা হয়ে গেছে। চারিদিকে একেবারে ফাঁকা। লোকজনের চলাচল নেই। বিশেষ জরুরি প্রয়োজনে যারা বের হচ্ছেন তারা একে অপরকে চিনতে পারছেন না মাস্ক পরার কারণে। করোনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছে সার্বিক পরিস্থিতি। যশোরের বড় বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বললেন ‘এ কী রে ভাই, ৫৫ বছর বয়সের ইতিহাসে যশোরের বাজারঘাটের এ ধরণের চিত্র কখনো দেখিনি। আল্লাহ মালিক কবে যে এর থেকে পরিত্রাণ পাবো বুঝতে পারছি না। ব্যবসা করে খাই, সব বন্ধ বেচাকেনা নেই।’ শিল্পশহর নওয়াপাড়ার ভ্যানচালক রহিম মন্ডল বললেন, ‘ভ্যান চালিয়ে দিন এনে দিন খাই, ছেলেপেলে নিয়ে বিপদে আছি, এ কয়দিনেই অবস্থা খারাপ।’
গোটা অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য দোকানপাট প্রায় বন্ধ। শহর গ্রাম সমানতালে অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। পোল্ট্রি শিল্পে ধস নেমেছে। মাছের রেণু পোনা, চিংড়ি, রজনীগন্ধার বেচাকেনা প্রায় শূন্যের কোঠায়। শহর ও গ্রামের অধিকাংশ মানুষ রয়েছেন হাত গুটিয়ে। টাকার লেনদেন হচ্ছে খুবই কম। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ব্যবসাও নেই বললেই চলে। করোনা আতঙ্কে অনেকে অসুস্থ হলে গোপন রেখে ঘরে বসে হা-হুতাশ করছেন। যশোর কুইন্স হাসপাতাল সবসময় থাকে জমজমাট। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে হাতেগোনা কয়েকজন রোগী ভর্তি আছে। স্বত্বাধিকারি হুমায়ুন কবীর কবু বললেন, এ অঞ্চলের বড় বেসরকারি হাসপাতাল কুইন্স। হাজার হাজার রোগী, দর্শনার্থী, স্টাফদের ভিড়ে থাকতো জমজমাট। এখন সেখানে হাতেগোনা লোক যাতায়াত করছেন। পরিস্থিতি এমন কেউ পারতপক্ষে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন